বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:০২ পূর্বাহ্ন




যুক্তরাজ্যে হাসিনার মিত্রদের ৬ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির খবর গার্ডিয়ানে

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ৮:৪৮ pm
England London United Kingdom Great Britain ইউনাইটেড কিংডম ইউকে যুক্তরাজ্য ইংল্যান্ড গ্রেইট ব্রিটেন গ্রেট বৃটেন লন্ডন
file pic

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগীরা যুক্তরাজ্যে বিলাসবহুল সম্পত্তি কেনার পেছনে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছেন বলে দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

গার্ডিয়ান লিখেছে, সেখানকার প্রায় ৩৫০টি সম্পত্তির মধ্যে ছোট ফ্ল্যাট থেকে বৃহৎ অট্টালিকা পর্যন্ত আছে, যেগুলো কিনেছে যুক্তরাজ্য ও বাইরে নিবন্ধিত অফশোর কয়েকটি কোম্পানি। এসব কোম্পানি বাংলাদেশি কয়েকজন প্রভাবশালী ধনী ব্যবসায়ী ও হাসিনা সরকারের সাবেক দুজন মন্ত্রীর মালিকানাধীন।

দুর্নীতিবিরোধী বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম অবজারভার অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছে, দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা বাংলাদেশি ‘প্রভাবশালী খেলোয়াড়দের’ যুক্তরাজ্যের আবাসন খাতে প্রায় ৪০ কোটি পাউন্ড বা ৬ হাজার ৮০ কোটি টাকা বা তারও বেশি বিনিয়োগ আছে। এ অনুসন্ধান শনিবার গার্ডিয়ান প্রকাশ করেছে।

তবে এসব ব্যক্তির ভাষ্য, অন্তবর্তী সরকার অর্থ পাচারের যে অভিযোগ এনেছে তা তাদের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ’।

অভিযোগ ওঠা সম্পত্তি লেনদেনের ক্ষেত্রে বড় বড় ব্যাংক, ল ফার্ম, এস্টেট এজেন্টসহ যেসব ব্রিটিশ কোম্পানি মোটা অংকের ফি আদায় করেছে, তাদের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এই অনুসন্ধানে। বিনিয়োগকারীর অতীত ইতিহাস বা অর্থের উৎস শনাক্তে যুক্তরাজ্যের দুর্বলতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, লন্ডনকে বিশ্বের দুর্নীতিবিরোধী রাজধানীতে পরিণত করার উচ্চাকাঙ্ক্ষার ‘প্রথম পরীক্ষার’ মুখোমুখি এখন যুক্তরাজ্য।

গত ৫ আগস্ট গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। এরপর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।

গার্ডিয়ান লিখেছে, আওয়ামী লীগের প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসানের পর অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশ পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ক্ষমতাচ্যুত সরকার ও তার মিত্রদের দুর্নীতির কারণে খোয়া যাওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারের দিকে মনোযোগ দিয়েছে এই সরকার।

বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে, হাসিনার আওয়ামী লীগের সঙ্গে মুষ্টিমেয় প্রভাবশালী পরিবার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অবৈধ উপায়ে কোটি কোটি পাউন্ড অর্জন করেছে, যার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে তোলা বিপুল পরিমাণ ঋণ রয়েছে, যা কখনও পরিশোধ করা হয়নি। দক্ষিণ এশিয়ায় মুদ্রা স্থানান্তরের জনপ্রিয় হুন্ডি পদ্ধতি ব্যবহার করে এসব অর্থ বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন তদন্তকারীরা।

নতুন সরকার ও তদন্তকারীদের ভাষ্য, এই অর্থের একটা অংশের গন্তব্য হয়েছে অবৈধ তহবিলের জন্য পরিচিত ঠিকানা- যুক্তরাজ্য।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রায় ১৩ বিলিয়ন পাউন্ডের সম্পদের অনুসন্ধান করছে, যার মধ্যে লন্ডনসহ বিশ্বব্যাপী গোপনে কেনা সম্পত্তি রয়েছে।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার কয়েকদিন পর ঢাকা থেকে নৌপথে পালানোর চেষ্টার সময় সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। বাংলাদেশের অনেকের চোখেই তিনি শাসকগোষ্ঠীর সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন।

তার বিরুদ্ধে এখন অর্থপাচারের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তার ও পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গোয়েন্দা ইউনিট বিএফআইইউ।

সালমান এফ রহমান বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকোর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং ভাইস চেয়ারম্যান। তৈরি পোশাক থেকে শুরু করে ফার্মাসিউটিক্যালস পর্যন্ত অনেক ব্যবসায় যুক্ত এই শিল্প গ্রুপটি।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বেক্সিমকো যেসব সুবিধা পেয়েছে বলে জানা গেছে, তার মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বিপুল পরিমাণ ঋণের পুনঃঅর্থায়ন। এমনকি ১৭ কোটিরও বেশি মানুষের দেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা আমদানির একচেটিয়া কাজও পায় প্রতিষ্টানটি।

গার্ডিয়ান লিখেছে, বর্তমানে কর কর্তৃপক্ষ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রায় ১০০ কোটি পাউন্ডের অপরিশোধিত ঋণসহ আর্থিক অনিয়মের বিষয়গুলো তদন্ত করছে। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেক্সিমকোর আর্থিক তদারকির জন্য একজন প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে।

বেক্সিমকো সালমান এফ রহমানদের পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। লিংকডইন ও কোম্পানির প্রকাশনা অনুযায়ী, সালমানপুত্র আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং তার ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমান উভয়ই গ্রুপটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। এই দুজনের বিরুদ্ধে সিআইডি তদন্ত করছে এবং দেশে থাকা আহমেদ শায়ানের সম্পদ ফ্রিজ করা হয়েছে।

লন্ডনের মেফেয়ার এলাকার গ্রসভেনর স্কয়ারের ১৮ শতকের অভিজাত নগর চত্বরে সালমানের পরিবারের সদস্যদের সাতটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের মালিক বা অংশীদারত্ব আছে, যার বেশিরভাগই অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা। ২০২২ সালের মার্চে ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডের কোম্পানির মাধ্যমে কেনা ২৬ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের একটি অ্যাপার্টমেন্টের মালিক আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান। গ্রসভেনর স্কয়ারে তার আরেকটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার দাম ৩৫ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ড।

তার চাচাতো ভাই আহমেদ শাহরিয়ার নিয়ন্ত্রিত অফশোর কোম্পানির মালিকানায় একই স্কয়ারে ও কাছাকাছি এলাকায় মোট ২৩ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের চারটি সম্পত্তি আছে।

আহমেদ শায়ান রহমান ও আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের আইনজীবীরা জানান, মানি লন্ডারিং বিধিমালাসহ আর্থিক বিধিবিধান মেনেই এসব সম্পত্তি কেনা হয়েছে। তারা এমনও ইঙ্গিত করেন যে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দুর্নীতির তদন্তে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ফোকাস করছে।

তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান মনসুর এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে অবজারভারকে বলেছেন, “এটি একটি বৈধ আইনি প্রক্রিয়া…যারা বাংলাদেশ থেকে সম্পদ সরিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। আমরা তা ফেরত চাই।”

আওয়ামী লীগ সরকারের আরেকজন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। বিএফআইইউ তার ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ বা অবরুদ্ধ করেছে এবং তার ও পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন স্থাবর সম্পদ জব্দের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তার ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং ঢাকার দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে শত শত কোটি ডলার অর্জনের অভিযোগ তদন্ত করছে।

যুক্তরাজ্যের ল্যান্ড রেজিস্ট্রি অনুসারে, তদন্তকারীরা জানতে চান যে কীভাবে সাইফুজ্জামান এবং তার পরিবার কমপক্ষে ১৬ কোটি পাউন্ডে ৩০০টিরও বেশি সম্পত্তি কিনেছেন।

আল জাজিরার সাংবাদিকরা গত মাসে লন্ডনের ১৪ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের একটি প্রাসাদের বাইরে সাইফুজ্জামান চৌধুরীকে দেখতে পেয়েছিলেন, তবে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

তবে কেবল সাবেক মন্ত্রীরাই যুক্তরাজ্যে সম্পত্তি গড়েননি; আওয়ামী লীগের শাসনামলে ফুলে ফেঁপে ওঠা কিছু ব্যবসায়ীও তাই করেছেন। যুক্তরাজ্যের অভিজাত সারে এস্টেটে আওয়ামী লীগ আমলের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী আহমেদ আকবর সোবহান ওরফে শাহ আলম পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যের আবাসন আছে। গলফ কোর্সের চারপাশে নির্মিত গাছের সারিসহ ব্যক্তিগত সড়ক এবং পেশাদার নিরাপত্তা রক্ষীর সুবিধাসহ স্থাপনায় আগ্রহ আছে গোপনীয়তা সচেতন এই ধনকুবেরের।

 

ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে নিবন্ধিত গোল্ডেন ওক ভেঞ্চার লিমিটেড ও কালিয়াকরা হোল্ডিংস লিমিটেডের নামে ১৩ মিলিয়ন পাউন্ডে কেনা দুটি বিশাল সম্পত্তির মালিক ওই পরিবারের সদস্যরা।

তৃতীয় আরেকটি স্থাপনা রয়েছে শাহ আলমেরে এক ছেলের। স্থাপনাটি ফরাসি ধাঁচের প্রাসাদ, যেটি পরিদর্শনের সময় নির্মাণাধীন মনে হয়েছে অবজারভারের।

গার্ডিয়ান লিখেছে, সোবহান পরিবারের সম্পদ আসে বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে, যে ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর আবাসন ও জাহাজ ব্যবসা, সংবাদমাধ্যম ও খেলাধুলায় বিনিয়োগ আছে। ২০০৮ সালে দুর্নীতির অভিযোগে পরিবারটির বিরুদ্ধে প্রথম তদন্ত হলেও পরে তা থেকে অব্যাহতি পেয়ে যায়। হাসিনা সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রীয় ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতার অভিযোগসহ তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে।

গত ২১ অক্টোবর শাহ আলমসহ সোবহান পরিবারের ছয় সদস্যের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদালত।

গার্ডিয়ান লিখেছে, বাংলাদেশের তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ তাদের সম্পত্তিসহ পারিবারিক সম্পদ যাচাই-বাছাই করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা সম্পদ পুনরুদ্ধারে গঠিত টাস্কফোর্সের নজরে থাকবে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, বছরে ১২ হাজার ডলারের বেশি অর্থ বিদেশে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ না থাকার পরেও সিঙ্গাপুর ও দুবাইয়ের মতো বাণিজ্য কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে বিদেশে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

দুটি পারিবারিক সম্পত্তি যুক্তরাজ্যের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। শাহ আলমের ছেলে ও বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান লন্ডনের কেনসিংটনে ১০ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি প্রাসাদের মালিকানা অর্জন করেছেন অস্টিনো লিমিটেড নামের একটি কোম্পানির মাধ্যমে। অস্টিনো ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে নিবন্ধিত, তবে বাড়িটি রেজিস্ট্রির নথিপত্র দুবাইভিত্তিক নির্মাণ সামগ্রীর কোম্পানি অ্যাট্রো ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে হচ্ছে।

সাফওয়ানের ভাইয়ের মালিকানাধীন ৫ দশমিক ৬ মিলিয়ন পাউন্ডের চেলসি ওয়াটারফ্রন্ট সম্পত্তির সঙ্গেও অফশোর কোম্পানির সম্পর্ক পাওয়া গেছে।

সাফওয়ান সোবহান নিজের ও ভাইয়ের পক্ষ থেকে জবাব দিয়ে বলেন, তার পরিবার অনিয়মের সব ধরনের অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছে এবং এই অভিযোগের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে নিজেদের রক্ষা করবে।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে হাউস অব কমন্সের একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা এই তদন্তকে আইনত দুর্বল এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত বলে মনে করি।”

বাংলাদেশের আরেকটি ব্যবাসয়ী গ্রুপ নাসা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে তদন্ত করছে ঢাকা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

মজুমদার ও তার পরিবারের সদস্যরা কীভাবে দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনের কেনসিংটনে মোট ৩৮ মিলিয়ন পাউন্ডে পাঁচটি বিলাসবহুল সম্পত্তি কেনেন তা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অবজারভারের স্থানীয় অনুসন্ধানে মনে হয়েছে, বেশিরভাগ সম্পত্তি ভাড়া দেওয়া হয়েছে।

মজুমদারের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে, সম্পত্তিগুলো অবৈধভাবে অর্জিত অর্থে কেনা এমন মত প্রত্যাখান করে আসছেন নজরুল ইসলাম মজুমদার। বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিরুদ্ধে তিনি লড়বেন।

গার্ডিয়ান লিখেছে, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের সম্পত্তির প্রকৃত পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে। ২০২৩ সালের বিদেশি মালিকানার ভূমির তথ্য প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য। তবে অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে প্রকৃত মালিকের তথ্য সহজেই গোপন করা সম্ভব। আইনি এ ফাঁকফোকর নিয়ে যুক্তরাজ্যের অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

যুক্তরাজ্যের আর্থিক খাতের নিয়মকানুন যাচাই-বাছাই ও হালনাগাদ করার জন্য সবচেয়ে ঘনিষ্ঠভাবে দায়বদ্ধ হলেন নগরমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি শেখ হাসিনার ভাগ্নি।

২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, টিউলিপের মা শেখ রেহানা লন্ডনে আহমেদ শায়ান রহমানের মালিকানাধীন একটি সম্পত্তিতে বিনা ভাড়ায় বসবাস করেন।

গার্ডিয়ান লিখেছে, টিউলিপের বিরুদ্ধে কোনো অনিয়ম পাওয়া যায়নি। তিনি বাংলাদেশ সংক্রান্ত নীতি নির্ধারণী বিষয় থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সাইফুজ্জামান চৌধুরীকে সহায়তাকারী ব্রিটিশ কোম্পানিগুলো যথাযথভাবে তথ্য যাচাই-বাছাই করেছে কি না তা খতিয়ে দেখার জন্য চলতি মাসে অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের (এপিপিজি) সদস্যরা যুক্তরাজ্যের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে চিঠি দেয়। তারা ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে বাংলাদেশ পুনর্গঠনে প্রয়োজনীয় অর্থ পুনরুদ্ধারে সহায়তা করা হয়।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল সতর্ক করে বলেছে, যুক্তরাজ্যকে এখনও ‘সন্দেহজনক বিনিয়োগের প্রধান গন্তব্য’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের পলিসি ডিরেক্টর ডানকান হ্যামস বলেন, সন্দেহজনক সম্পদ জব্দ করার জন্য নিষেধাজ্ঞার ব্যবস্থা চালু করতে সরকারের উচিত বিশ্বের মিত্র ও বাংলাদেশের অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD