শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ০৬:৪৪ পূর্বাহ্ন




বাসা ভাড়ার বাড়তি চাপে চ্যাপ্টা ভাড়াটিয়ারা

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১:৪৫ pm
ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মহাসড়ক মহা সড়ক Taxi pickup microbus truck ঢাকা-টাঙ্গাইল ঢাকা টাঙ্গাইল highway hig hway বিমানবন্দর সড়ক যানবাহন রোড সড়ক মহাসড়ক যানজট রাস্তা বাস গাড়ি সড়ক road bus gridlock Study in India comp uttara road accident উত্তরা রোড দুর্ঘটনা এক্সিডেন্ট দুর্ঘটনা রোড সড়ক মহাসড়ক যানজট রাস্তা বাস গাড়ি সড়ক Accident road bus gridlock Study in India comp Road Accident road যানজট বঙ্গবন্ধু সেতু trac শহর ছাড়ছে মানুষ
file pic

হাবিবুর রহমান একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। তার অফিস মতিঝিলে কিন্তু স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকেন রাজধানীর উত্তর বাড্ডার একটি ভাড়া বাসায়। প্রতিদিন অফিস টাইমে এবং সন্ধ্যায় ফেরার সময় বাদুড়ঝোলা হয়ে গণপরিবহনে যাতায়াত করেন।

অফিস থেকে এত দূরত্বে বাসা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাবিবুর রহমান বলেন, এত দূরে থাকার একমাত্র কারণ বাড়তি বাসা ভাড়া। মতিঝিলের দিকে বাসা ভাড়া অনেক বেশি, সেই তুলনায় এদিকে এসে থাকতে কিছুটা কম টাকা লাগে। তবুও এখানে যে বাসা ভাড়া পরিশোধ করি তাতেই বেতনের সিংহভাগ চলে যায়। তারপরও নতুন বছরে ১ হাজার টাকা বাসা ভাড়া বাড়িয়েছেন বাসার মালিক।

তিনি বলেন, ঢাকা শহরে আমরা যারা জীবিকার তাগিদে থাকি, তাদের আয়টা মনে হয় বাসা মালিকদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্যই। আমরা সাধারণ ভাড়াটিয়ারা বর্তমানে বাসা ভাড়ার বাড়তি চাপে চ্যাপ্টা হয়ে যাচ্ছি।

নতুন আশা আর সম্ভাবনাকে সামনে নিয়ে শুরু হয় নতুন বছর। কিন্তু রাজধানীর বাসিন্দাদের অনেকের নতুন বছরের শুরুটা হয় ভিন্নভাবে। তাদের নতুন বছরে ভাড়া বাড়িয়ে ‘স্বাগত জানান’ বাসা মালিকরা।

ভোক্তাদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২৫ বছরে রাজধানীতে বাসা ভাড়া বেড়েছে প্রায় ৪০০ শতাংশ। একই সময়ে নিত্যপণ্যের দাম যতটা বেড়েছে, সেই তুলনায় বাসা ভাড়া বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।

সংগঠনটির অন্য এক পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকার ২৭ শতাংশ ভাড়াটিয়া আয়ের প্রায় ৩০ শতাংশ, ৫৭ শতাংশ ভাড়াটিয়া প্রায় ৫০ শতাংশ, ১২ শতাংশ ভাড়াটিয়া আয়ের প্রায় ৭৫ শতাংশ ব্যয় করেন বাসা ভাড়া পরিশোধে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খাদ্যনিরাপত্তা পরিসংখ্যান-২০২৩ এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সিটি কর্পোরেশনগুলোতে বসবাসকারীদের মধ্যে ৭২ শতাংশই ভাড়া বাসায় থাকেন। এসব এলাকায় নিজের বাসায় থাকেন মাত্র ২৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ মানুষ। সিটি কর্পোরেশনের বাইরে অন্য শহরে বসবাসকারীদের মধ্যে ভাড়ায় থাকেন ১৮ শতাংশ।

বিবিএসের তথ্যও বলছে দেশে বাসা ভাড়া বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে। তাদের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর সময়ে শহরে বাসা ভাড়া বেড়েছে ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। দেশের মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ মানুষ ভাড়া বাসায় থাকেন। যার মধ্যে গ্রামে ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ, শহরে ১৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ আর সিটি কর্পোরেশনে ৭২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। আর দেশে ভাড়া ছাড়াই থাকেন ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ মানুষ।

রাজধানীর শেওড়াপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন বেসরকারি চাকরিজীবী মুকিদুর রহমান। তিনি বলেন, আমি একটি কোম্পানিতে চাকরি করি, বেতন ৪০ হাজার টাকা। দুই সন্তান, স্ত্রীসহ দুই রুমের একটি বাসায় থাকছি। ভাড়া বাবদ মাসে ১৮ হাজার টাকা চলে যায়। ১৫ হাজার টাকা ফ্ল্যাটের ভাড়া, সেইসঙ্গে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট, ময়লার বিল সবমিলিয়ে আরও তিন হাজার টাকা। তার মানে আমার বেতনের ৪০ হাজার টাকার মধ্যে ১৮ হাজার, বলতে গেলে প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়িভাড়া পরিশোধেই চলে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এরপর আছে সংসারের খরচ, সন্তানদের স্কুলের খরচ, বাড়িতে বাবা-মার ওষুধের জন্য টাকা পাঠানো, আমার আসা-যাওয়ার খরচ। নিত্যপণ্যের দামও যেভাবে বেড়েছে, এতে সংসার টানাটানির মধ্যেই চলে। প্রতি মাসেই ধারদেনা করতে হয়।

বেকার, ভাগ্যান্বেষী, বিদ্যান্বেষীসহ নানা শ্রেণির মানুষের স্বপ্ন গড়ার শহর ঢাকা। সেজন্য দিন দিন এ নগরে মানুষ বেড়েছে জ্যামিতিক হারে। আর এসব মানুষকে বসবাস করতে অতিরিক্ত বাসা ভাড়ার চাপ নিতে হয়।

বিভিন্ন পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকায় বর্তমানে আড়াই কোটিরও বেশি মানুষের বসবাস। প্রতি বছর রাজধানীতে ছয় লাখ ১২ হাজার মানুষ নতুন করে যুক্ত হচ্ছে। এক দিনের হিসাবে এক হাজার ৭০০ জন। পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল শহরগুলোর তালিকায় ঢাকা অন্যতম। কিন্তু আয়তন ও জনসংখ্যার হিসাবে ঢাকা সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহরের একটি। এ শহরে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করে ৪৩ হাজার ৫০০ মানুষ।

বাসা ভাড়ার বাড়তি চাপের কারণে নতুন বছরের শুরু থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অনেককে বাসা পরিবর্তন করতে দেখা গেছে। কিছুটা কম ভাড়ায় বাসা পেতে অনেকেই করছেন ঠিকানা পরিবর্তন। বছরের দ্বিতীয় মাস ফেব্রুয়ারিতেও অনেককে বাসা পরিবর্তন করতে দেখা যায়।

পিকআপে, ট্রাকে কিংবা ভ্যানে করে মালামাল নিয়ে পুরোনো বাসা ছাড়ছেন এমন অনেকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল বাসা পরিবর্তনের কারণ। জবাবে অধিকাংশই জানিয়েছেন, ভাড়া বেশি, কুলাতে পারছেন না। একটু দূরে শহরের প্রান্তিক এলাকায় চলে যাচ্ছেন, যেখানে বাসা ভাড়া তুলনামূলক কম।

রাজধানীর বনশ্রী এলাকার ভাড়া বাসার বাসিন্দা রোকনুজ্জামান রোকন। তিনি জানুয়ারিতে বাসা ভাড়া বৃদ্ধির নোটিশ পেয়েছেন। তখনই বাসার মালিককে জানিয়েছেন আগামী মার্চে বাসা ছেড়ে দেবেন। সেজন্য বাসা খুঁজছিলেন তিনি।

রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, বছরের শুরুতেই বাসার মালিক বাসা ভাড়া বৃদ্ধির নোটিশ দিয়েছে, বলেছে আরও এক হাজার টাকা বাসা ভাড়া বাড়বে। কিন্তু আমার যে আয় তাতে বর্তমানে ১৬ হাজার টাকার এ বাড়িতেই থাকতে, সংসার পরিচালনা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সে কারণে বাসা ভাড়া বৃদ্ধি নোটিশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাসা ছেড়ে দেব।

তিনি বলেন, আরও দূরে, ভেতরে, অন্য কোথাও তুলনামূলক কম ভাড়ায় বাসা খুঁজে নেব, এমন সিদ্ধান্ত নিই। পরে আফতাবনগরের একবারে ভেতরের দিকে ১২ হাজার টাকা ভাড়া একটি বাসা পেয়েছি। মার্চে পরিবারসহ সেখানে চলে যাব।

এই ভাড়াটিয়া বলেন, নতুন বছর এলেই বাসার মালিকদের ভাড়া বৃদ্ধির পাঁয়তারা চলতে থাকে। দূরে বাসা নিয়েছি সে কারণে হয়ত যাতায়াতের সমস্যা হবে কিন্তু আয়-ব্যয়ের সঙ্গে সংগতি রাখতে এ কষ্ট মেনে নিতেই হবে।

রাজধানীর মধ্যবাড্ডা এলাকায় পাঁচ কাঠা জায়গার ওপর তৈরি সাততলা একটি বাড়ির মালিক রুহুল আমিন। তিনি অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা। বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে।

রুহুল আমিন বলেন, একজন বাড়ির মালিক সারা জীবনের অর্জিত অর্থ দিয়ে, ধারদেনা, ব্যাংক লোন করে একটি বাড়ি নির্মাণ করে। এরপর রয়েছে নানা ধরনের খরচ। অনেক বাড়ির মালিক আছে যার একমাত্র আয়ের উৎস বাড়ি ভাড়া। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জীবন পরিচালনার ব্যয় বেড়ে গেছে। বাসা ভাড়া না বাড়ালে আমরা চলব কীভাবে? যারা চাকরি করে তাদের বেতন বাড়ে, ইনক্রিমেন্ট হয়। আর যারা ব্যবসা করে তাদের লাভ হয়, লস হয়, অতিরিক্ত লাভও হয়। কিন্তু যারা বাড়ির মালিক তাদের তো এমন কিছু হয় না। অনেকে বছরে একবার ১ হাজার, ২ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া বাড়ায়। এটা তো অন্যায় কিছু না। যারা চাকরি করে তাদের তো ইনক্রিমেন্ট হয়, তাহলে আমরা যারা বাড়ির মালিক তারা কি বছরে বাড়ি ভাড়া বাড়াতে পারি না? এমন যুক্তি থেকে ভেবে দেখবেন বছরে একবার বাড়ি ভাড়া বাড়ানো অন্যায় কিছু না।

বাসা ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, লাখ লাখ মানুষের বসবাস ব্যবস্থা গড়ে তোলা ছাড়া কোনো উন্নয়ন সম্ভব না। রাজধানীর নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের আবাসনের ব্যবস্থা নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ খুবই জরুরি। এজন্য এলাকাভিত্তিক ম্যাপিং করতে হবে। ওয়ার্ডভিত্তিক পরিকল্পনার মাধ্যমে আবাসন সমস্যার সমাধান করতে হবে।

সার্বিক বিষয়ে ভাড়াটিয়া পরিষদের সভাপতি মো. বাহারানে সুলতান বাহার বলেন, দিন দিন ঢাকায় বাসা ভাড়া বেড়েই চলেছে। বলতে গেলে তারা ভাড়াটিয়াদের ওপর জুলুম করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন। ঢাকাসহ সারা দেশে ভাড়াটিয়ারা নিষ্পেষিত। কোনো নিয়মনীতি না মেনে বাড়ির মালিকরা যা ইচ্ছা তাই করছেন, বছরে বছরে নানা অজুহাতে বাসা ভাড়া বাড়িয়ে দিচ্ছেন। রাজধানীর লাগামহীন বাসা ভাড়া রোধে প্রয়োজন আইনের সঠিক প্রয়োগ। ভাড়াটিয়াদের সমস্যা সমাধানে সিটি কর্পোরেশনের মনিটরিংয়ের পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে।

বাড়ছে সাবলেট

বাসা ভাড়ার বাড়তি চাপ সামলাতে পারছেন না অনেক ভাড়াটিয়া। এ কারণে তারা সাবলেটে বাসা ভাড়া নিচ্ছেন। ফলে দিনদিন বাড়ছে সাবলেট ভাড়াটিয়াদের সংখ্যা।

মালিবাগে একটি ফ্ল্যাটে পরিবারসহ থাকেন মোয়াজ্জেম হোসেন নামের একজন। এর জন্য প্রতি মাসে ভাড়া পরিশোধ করতে হয় ১৬ হাজার টাকা। এ ভাড়া আয়ের তুলনায় বেশি হয়ে যাওয়ায় বাড়ির মালিকের অনুমতি নিয়ে একটি সাবলেটের বিজ্ঞপ্তি টানিয়েছেন তিনি।

মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ১৬ হাজারের সঙ্গে অন্য চার্জ মিলিয়ে বাসা ভাড়া পরিশোধ করতেই আয়ের বড় অংশ চলে যায়। বর্তমানে এ ব্যয়ভার আরও বেড়েছে। সে কারণে বাসার মালিকের অনুমতি নিয়ে সাবলেট হিসাবে একটি ছোট পরিবারকে ভাড়া দিচ্ছি। টু-লেট টানানোর পর অনেকেই যোগাযোগ করেছে। পুরো ফ্ল্যাটের ভাড়া ১৬ হাজারের বেশি পড়লেও আমি একটি রুম ভাড়া দিচ্ছি ৭ হাজার টাকায়। এতে আমাদের থাকতে একটু সমস্যা হলেও সাবলেট ভাড়াটিয়াদের ভাড়ায় কিছুটা সাপোর্ট হবে। এ ভাবনা থেকেই ভাড়া দিচ্ছি।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাসায় স্ত্রীসহ সাবলেট রুমে থাকেন রবিন আহমেদ নামের একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। তিনি বলেন, পুরো ফ্ল্যাট নিয়ে সেটার ভাড়া পরিশোধ করার মতো সামর্থ্য বর্তমানে আমার নেই। যে কারণে বাধ্য হয়ে সাবলেট বাসায় থাকছি। দুজনের একটি বাসায়ও বর্তমানে সবমিলিয়ে ১৫ হাজার টাকার মতো খরচ পড়ে যায়। কিন্তু আমার বেতনই ২৫ হাজার টাকা, যা দিয়ে পুরো বাসা নিয়ে থাকা সম্ভব নয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৭ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ৭৭৫টি এলাকায় ১০টি রাজস্ব আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প, কাঁচাবাড়ি, পাকা ঘর, সেমি পাকা, মেইন রোডের তিনশ ফিট ভেতরে এবং বাইরে পাঁচ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত প্রতি বর্গফুট ভাড়া নির্ধারণ করা করে দেওয়া হয়েছিল। তবে এটির প্রয়োগ কোথাও নেই। এ ছাড়া বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯১ এ আইনের ১৬ ধারা মতে, বড় কোনো ধরনের নির্মাণকাজ বা পরিবর্তন আনা ছাড়া বাসার মালিক দুই বছরের মধ্যে মূল ভাড়া বাড়াতে পারবেন না। যা মানেন না কেউই। DP




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD