বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ০৫:০৮ অপরাহ্ন




আর দাদাগিরি চলবে না: ভারতকে মির্জা ফখরুল

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ৭:১৫ pm
Mirz-fakhrul Bangladesh Nationalist Party BNP ‎বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি Bangladesh Nationalist Party BNP Mirza Fakhrul Islam Alamgir বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর Bangladesh Nationalist Party BNP Mirza Fakhrul Islam Alamgir বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর bnp bnp
file pic

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলার মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হলে প্রথমে তিস্তার পানি দিতে হবে, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে। আর দাদাগিরি চলবে না। তাহলে বন্ধুত্ব হতে পারে।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে লালমনিরহাটের তিস্তা রেলওয়ে সেতু সংলগ্ন চরে ‘জাগো বাহে-তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় এলো তখন সবাই ভাবলো ভারতের বন্ধু এবার মনে হয় পানি আনতে পারবে। ১৫ বছরে তারা দেশ বেচে দিয়েছে। তিস্তার এক ফোঁটা পানিও আনতে পারেনি। ৫৪টি অভিন্ন নদীর উজানে ভারত বাঁধ দিয়ে একতরফা পানি উত্তোলন করেছে। একদিকে তারা পানি দেয় না, অন্যদিকে আমাদের শত্রুকে আশ্রয় দিয়ে রাজার হালে রেখেছে।

তিস্তা নদীরক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভারতকে আগেও বলেছি, এখনো পরিষ্কার করে বলতে চাই বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে যদি বন্ধুত্ব করতে চান তাহলে আগে তিস্তার পানি দেন। সীমান্ত হত্যা বন্ধ করেন। আমাদের সঙ্গে বড় দাদা আর মাস্তানমুখী আচরণ বন্ধ করেন। আমরা আমাদের পায়ের ওপরে দাঁড়াতে চাই। আমরা আমাদের হিস্যা বুঝে নিতে চাই। আমরা অবশ্যই ভারতকে একটি বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই, কিন্তু সেই বন্ধুত্ব হবে সম্মানের সঙ্গে, আর আমার যে পাওনা আছে সেই পাওয়া বুঝিয়ে দেওয়ার সঙ্গে।

তিনি আরও বলেন, শুধু তিস্তা নয়; ৫৪টি নদী আছে যেগুলো ভারত থেকে আমাদের দেশে আসে। সবগুলো নদীর উজানে তারা (ভারত) বাঁধ দিয়েছে। বাঁধ দিয়ে পানি তুলে নিয়ে যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আর আমাদের দেশের মানুষ এখানে ফসল ফলাতে পারে না। এখানের মানুষ জীবন-জীবিকা থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত হয়েছে। আমাদের জেলে যারা মাছ ধরেন, তারা মাছ ধরতে পারেন না।

আওয়ামী লীগ ও ভারতের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিটি মানুষকে আজ কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়েছে। ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আমরা ১৫ বছর লড়াই করেছি, আমাদের ছেলেরা লড়াই করেছে। সকলের লড়াইয়ের মাধ্যমে পালিয়েছে, কোথায়? ওই ভারতে। একদিকে পানি দেয় না, অন্যদিকে আমাদের যে শত্রু তাকে দিল্লিতে রাজার হালে বসায় রাখছে। ওইখান থেকে আবার সে বিভিন্ন হুকুম জারি করে।

উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আছে নাকি এ্যালা, পালাইছে। বন্ধুগণ আজকের এই সংগ্রাম বাঁচা মরার সংগ্রাম, এই এলাকার মানুষের সংগ্রাম। এই সংগ্রামকে আমরা কখনো বন্ধ হতে দেব না।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, কথায় কথায় বলেন আপনারা নিরপেক্ষ। নিরপেক্ষ কিন্তু এই জায়গায় থাকলে চলবে না। এই জায়গায় আপনাকে মুখ খুলতে হবে। ভারতকে বলতে হবে যে আমার পানির ন্যায্য হিস্যা আমি চাই। আর তাড়াতাড়ি নির্বাচন দেন। জনগণের সরকারের হাতে ক্ষমতা বুঝিয়ে দেন।

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান ও বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী দিনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সামসুজ্জামান দুদু। অন্যান্যের মধ্যে একই মঞ্চে আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক ও নদীপাড়ের ভুক্তভোগী নুর বকস।

সমাবেশের বিভিন্ন পয়েন্টে পৃথকভাবে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু এবং গণসংহতি আন্দোলন প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।

তিস্তা নদীর দুই পাড়ের ৫টি জেলার ১১টি পয়েন্টে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার ১১টি পয়েন্টে করা হয়েছে মঞ্চ ও থাকার ব্যবস্থা। তিস্তাপাড়ের মানুষ তাদের দাবি আদায় করতে টানা ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। শিশু-বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সকলেই দলে দলে অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে তিস্তা নদীর ১২৫ কিলোমিটারের দুই তীর। দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামলে প্রতিটি পয়েন্টে কানায় কানায় ভরে ওঠে।

এদিকে কর্মসূচি ঘিরে সকাল থেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজার হাজার মানুষ তিস্তা পাড়ে সমবেত হয়।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD