বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন




ফুটপাতের দোকানগুলোতে ঈদের আমেজ, কেনাকাটার ধুম

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫ ১১:২৭ pm
Textiles Textile garment factory garments industry rmg bgmea worker germent পোশাক কারখানা রপ্তানি শিল্প শ্রমিক আরএমজি সেক্টর বিজিএমইএ poshak shilpo পোশাক খাত Clothes Pajama Winter Warm Sidewalk Winter Clothing Shop Clothing জামা পাজামা শীত গরম ফুটপাত শীতবস্ত্র দোকান পোশাক
file pic

দুয়ারে কড়া নাড়ছে ঈদ। বছর ঘুরে সেই খুশির ঈদ সামনে রেখে জমজমাট হয়ে উঠছে দেশের সব শপিংমল ও বিপণি-বিতান। পিছিয়ে নেই ফুটপাতের দোকানগুলোও। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে রাজধানীর ফুটপাতগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় তত বাড়ছে। বিক্রেতারা বলছেন, প্রতিদিনই একটু একটু করে বিক্রি বাড়ছে। ঈদের আগে শেষ কয়েকদিন বেচাকেনা আরও বাড়বে বলে আশা তাদের।

ফুটপাতের দোকানগুলোতে সব শ্রেণি-পেশার উপস্থিতি চোখে পড়লেও নিম্ন বা সীমিত আয়ের মানুষের ভিড় থাকে বেশি। এসব দোকানে তুলনামূলক সাশ্রয়ী দামে পছন্দের পণ্য কেনা যায়। এছাড়া এই দোকানগুলোতে ক্রেতারা ইচ্ছেমতো দরদাম করে পণ্য কিনতে পারেন।

সোমবার (১৭ মার্চ) সরেজমিনে রাজধানীর মিরপুর, সায়েন্সল্যাব, নীলক্ষেত, নিউমার্কেট, বাটা সিগন্যাল, কাঁঠালবাগান, ফার্মগেট ও গুলিস্তান এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

যেহেতু দাম তুলনামূলক কম, ফলে নিম্নআয়ের মানুষদেরই ফুটপাতের দোকানগুলোর ওপর বেশি নির্ভরতা থাকে। এসব দোকানে সব বয়সের নারী-পুরুষের উপযুক্ত পোশাক পাওয়াও যায়। শিশুদের পোশাক কেনার জন্যও ফুটপাতের দোকানগুলো বেশ ভালো। রমজানের শুরু থেকে দুপুর গড়ানোর পরই এসব দোকানে ক্রেতার ভিড় বাড়ে। রাত ৮টা-৯টা পর্যন্ত বেচাবিক্রি চলে হরদম।

বিভিন্ন দোকান ঘুরে ক্রেতাদের ঈদের পোশাক, জুতা-স্যান্ডেল, প্রসাধনী এবং গহনা কিনতে দেখা গেছে। রাজধানীর মিরপুর-১০, সায়েন্সল্যাব, নিউমার্কেট, গুলিস্তান এলাকার ফুটপাতগুলোতে ক্রেতাদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। এই এলাকাগুলোর দোকানে ক্রেতাদের চাপে হাঁটাচলা করাই যেন কঠিন।
ফুটপাতের দোকানগুলোতে গরিবদের জন্য সব ধরনের কেনাকাটার ব্যবস্থা আছে। তাই এত দূর থেকে এসেছি। আগে মিরপুর এলাকায় ছিলাম। এখানেই কেনাকাটা করতাম। এবারও চলে এলাম। বেশ ভালো লাগছে।- সোলায়মান হোসেন

এই বাজারগুলোতে তিন মাস বয়সী শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সব পোশাক পাওয়া যায়। তুলনামূলকভাবে কম দামের কারণে নিম্নআয়ের মানুষ ভিড় করছে। পাশাপাশি বিক্রেতাদের ব্যস্ততাও লক্ষ্য করা গেছে।

অনেকেই আবার ফুটপাতের বাজারে কেনাবেচা দেখতে এসেছেন। না কিনলেও তারা চারপাশে ঘুরে পণ্য দেখছেন। নানা বয়সী মানুষের উপস্থিতিও বেশ লক্ষণীয়।

গুলিস্তানের ফুটপাতে ছোট স্টল এবং ভ্যানে পাঞ্জাবি-পায়জামা, শার্ট-প্যান্ট, টি-শার্ট, জুতা এবং বাচ্চাদের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাছাকাছি বাজারগুলোতে পাঞ্জাবি-পায়জামার পাইকারি ও খুচরা বিক্রি দেখা গেছে।

প্রতিটি প্যান্ট ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পাঞ্জাবি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং শার্ট ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া ১৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের টি-শার্ট পাওয়া যাচ্ছে। বাচ্চাদের পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, জিন্স, প্যান্ট এবং জুতা ৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

সালমা খাতুন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র নারী কর্মকর্তার মেয়ের দেখাশোনা করেন। তিনি কিছু কেনাকাটা করার জন্য ছুটি নিয়ে বাজারে এসেছেন। ফুটপাতের দোকানগুলো ঘুরে পছন্দের পোশাক খুঁজছিলেন।

কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিবার এখান থেকে কাপড় কিনি। অনেক দোকান ঘুরে পছন্দের কাপড় কিনি। দামও কম। ভালো লাগে। দুটি কাপড় কিনেছি, আরও দুটি কিনবো। ঈদে বাড়ি যাবো। নিজের এবং আত্মীয়স্বজনের জন্য কিছু কেনাকাটা করতে হবে।’

সাদিক আনসারি চন্দ্রিমা সুপার শপের সামনে ফুটপাতে বাচ্চাদের জন্য কেনাকাটা করছিলেন। তিনি বলেন, ‘গ্রামের বাড়িতে ঈদ করবো। কিছু কেনাকাটা করলাম। ফুটপাতেও ভালো জিনিস কম দামে পাওয়া যায়।’

আশুলিয়া থেকে স্ত্রীসহ আসা দিনমজুর সোলায়মান হোসেন বলেন, ‘ফুটপাতের দোকানগুলোতে গরিবদের জন্য সব ধরনের কেনাকাটার ব্যবস্থা আছে। তাই এত দূর থেকে এসেছি। আগে মিরপুর এলাকায় ছিলাম। এখানেই কেনাকাটা করতাম। এবারও চলে এলাম। বেশ ভালো লাগছে।’

নিম্নআয়ের মানুষ ছাড়াও অনেক নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষ কেনাকাটার জন্য ফুটপাতের দোকানে আসছেন। তবে, চাকরিজীবীরা বেতন-বোনাস পেলে বিক্রি আরও বাড়বে।- বলছেন ব্যবসায়ীরা

ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিম্নআয়ের মানুষ ছাড়াও অনেক নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষ কেনাকাটার জন্য ফুটপাতের দোকানে আসছেন। তবে, চাকরিজীবীরা বেতন-বোনাস পেলে বিক্রি আরও বাড়বে।

মিরপুরের সেনপাড়া পর্বতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে রাস্তায় মেয়েদের পোশাক বিক্রি করছিলেন কাউসার আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমরা ছোট ব্যবসায়ী। সারা বছর পোশাক বিক্রি করি, এখন ঈদেও বিক্রি করছি।’

‘এখানে-ওখানে দু-একজন ক্রেতা পাই। তবে এটিকে ঈদের বাজার বলা যায় না। আমাদের ব্যবসা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না।’

মিরপুর-২ ফুটপাতে টি-শার্ট ও প্যান্ট বিক্রি করেন সজীব। তিনি বলেন, ‘অন্য সময় প্রতিদিন ২০ হাজার থেকে ২২ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করি। এখন তা কমে ১৪-১৫ হাজারে নেমেছে। মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে বেশি খরচ করছে।’

ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতিকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘পোশাক কিনতে আমাদের দোকানে বেশি ক্রেতা আসছেন না। দোকান বেশিরভাগ সময় ক্রেতাশূন্য থাকছে।’

ব্যবসায়ীরা জানান, বছরের অন্য সময় তারা কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু রমজানে বিক্রি অনেক বেশি হয় এবং লাভও ভালো হয়। চার-পাঁচ দিন ধরে তাদের বিক্রি বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা আশাবাদী। জাগো নিউজ




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD