‘আমি অবশ্যই ক্ষমাশীল তার প্রতি যে তওবা করে, ইমান আনে, সৎকর্ম করে ও সৎ পথে অবিচলিত থাকে।’
(সূরা তাহা, আয়াত: ৮২)
‘তুমি তোমার প্রতিপালকের প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি তওবা কবুলকারী।’
(সূরা নাসর, আয়াত: ৩)
‘রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, “আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে আমার বান্দাগণ! তোমরা রাতদিন অপরাধ করে থাকো। আর আমিই সব অপরাধ ক্ষমা করি। সুতরাং তোমরা আমার কাছে মাগফিরাত প্রার্থনা করো, আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেব।”
(সহিহ মুসলিম- ৬৪৬)
পবিত্র রমাদান মাস রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস। মাগফিরাত অর্থ মার্জনা, আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা ও গোনাহ থেকে নিষ্কৃতি লাভ। গোনাহ করা মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। মানুষ ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় গোনাহ করে। এটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। অস্বাভাবিক হলো গুনাহের উপর বছরের পর বছর অটল থাকা এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা না করা। যারা শয়তানের কুপ্ররোচনায় গোনাহ করে ফেলে এবং গোনাহ থেকে মাগফিরাত লাভ করতে পারে না তাদের জন্য রমাদান মাস মাগফিরাত লাভের বিশেষ সুযোগ।
“ক্ষমা করলে, ক্ষমা পাওয়া যায়।” আপনি অন্যান্য মানুষের থেকে পাওয়া কষ্টগুলোকে সহজে ক্ষমা করে দিন, আপনাকেও আল্লাহ্ তা’আলা ক্ষমা করে দিবেন সাথে সাথে আপনার মর্যাদাকেও বৃদ্ধি করে দেবেন। ক্ষমার মাধ্যমে মানুষিকভাবে উৎফুল্ল থাকা যায়, ক্ষমা না করলে সবসময় ডিপ্রেশনে ভুগতে হয়। আপনজনের দেওয়া কষ্টগুলো বা প্রতিশোধের আগুন বার বার হৃদয়ে পীড়া দিতে থাকে। ক্ষমার মাধ্যমে হৃদয় পরিষ্কার হয়, কষ্ট দূরীভূত হয়, মানষিক প্রশান্তি মিলে। আর ক্ষমা করে দেওয়া অনেক বড় গুণ, যে গুণ মহান আল্লাহ্ তা’আলার। তিনি ঘোষণা করেছেন “আমি গাফফার, গাফুর।”
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেন, হে আমার বান্দাগণ! তোমরা রাতদিন অপরাধ করে থাকো। আর আমিই সব অপরাধ ক্ষমা করি। সুতরাং তোমরা আমার কাছে মাগফিরাত প্রার্থনা করো, আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেব।
(সহিহ মুসলিম- ৬৪৬)
রাসুল (সা.) সৃষ্টজীবের জন্য রহমতস্বরূপ। তিনি আমাদের মাগফিরাত লাভের অন্যতম মাধ্যম। তাঁর প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠ করলে ক্ষমা লাভের পথ সুগম হয়। তাই রমাদানে মাগফিরাতের জন্য বেশি বেশি দুরুদ পাঠ করা চাই।
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেন, জিবরাইল (আ.) আমার কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনাকে কি এই সংবাদ খুশি করে না যে, আপনার উম্মতের মধ্য থেকে যদি কোনো ব্যক্তি আপনার ওপর একবার দরুদ পাঠ করে তবে আমি তার জন্য দশবার মাগফিরাত চাইবো। আর কেউ যদি আপনাকে একবার সালাম পাঠায় আমি তার প্রতি দশবার সালাম পাঠাব। (নাসায়ি-১২৯৮)
গোনাহগার বান্দা অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি বান্দাকে ক্ষমা করেন। আল্লাহ হলেন পরম ক্ষমাশীল। তিনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। সাহরির সময়টুকু ক্ষমা লাভের বিশেষ এক মুহূর্ত। এই মুহূর্তে আল্লাহ্ তা’আলা অপেক্ষায় থাকেন বান্দাকে ক্ষমা করার জন্য। বান্দার কাজ হলো ইবাদতের মাধ্যমে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আমাদের মর্যাদাবান প্রভু দুনইয়ার আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, যে আমাকে ডাকবে আমি তার ডাকে সাড়া দেব। যে আমার নিকট কিছু প্রার্থনা করবে আমি তাকে তা দান করব। যে আমার নিকট ক্ষমা চাইবে আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।
(মিশকাত- ১২২৩)
আল্লাহ্ তা’আলা পরম ক্ষমাশীল। তিনি বান্দাদেরকে ব্যাপকহারে ক্ষমা করবেন বলেই রমাদানে রয়েছে মাগফিরাত। আল্লাহ্ তা’আলা ক্ষমা করতে প্রস্তুত। বান্দার করণীয় হলো গোনাহের ওপর অনুতপ্ত হওয়া এবং মহান আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়া।
-আবু তালহা তোফায়েল
IFM desk