বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৬:৫৬ পূর্বাহ্ন




এবার তেলআবিবে পালটা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হুথি বাহিনীর

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১১:৪২ am
missaile Missile iran হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ক্ষেপণাস্ত্র
file pic

মার্কিন বাহিনী ইয়েমেনের উপকূলীয় হুদায়দা শহরের বিমান হামলা চালানোর পর শুক্রবার পালটা হামলা চালিয়েছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি। ইসরাইলের রাজধানী তেলআবিবের উপকণ্ঠে দখলকৃত জাফায় ‘জুলফিকার’ নামে অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল দিয়ে হামলা চালিয়েছে হুথি যোদ্ধারা।

শুক্রবার ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি এক ঘোষণায় এ তথ্য জানান। খবর মেহের নিউজ।

তিনি বলেন, এই হামলার লক্ষ্য ছিল ইসরাইলের বেনগুরিয়ন বিমানবন্দরের আশপাশের একটি সামরিক ঘাঁটি।

ইয়েমেন এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এমন এক সময় চালালো, যার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে মার্কিন বাহিনী ইয়েমেনের উপকূলীয় হুদায়দা শহরের কয়েকটি বন্দরে বিমান হামলা চালায়।

এতে কমপক্ষে ৮০ জন নিহত এবং ১৭১ জন আহত হয়েছেন। মূলত ওই হামলার জবাবেই ইয়েমেনি বাহিনী একটি সমন্বিত সামরিক অভিযান চালানোর জানান দেয়।

ইয়াহিয়া সারি বলেন, আমরা একটি সম্মিলিত সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছি, যেখানে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বিমানবাহী রণতরী—ট্রুম্যান ও ভিনসনকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছি।

এছাড়াও ইয়েমেনি প্রতিরক্ষা বিভাগ সানা প্রদেশে একটি মার্কিন এমকিউ-৯ ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করার কথা জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র এই ড্রোনগুলো ব্যবহার করে মধ্যপ্রাচ্যে গুপ্ত নজরদারি জোরদার করেছে। একই সঙ্গে তাদের হামলাগুলোও নিয়মিত করেছে।

তবে ইয়েমেনের স্বাধীন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ক্রমবর্ধমান সক্ষমতা এই অঞ্চলে নতুন সামরিক ভারসাম্যের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এদিকে ইসরাইলের দখলকৃত অঞ্চলে ছোড়া জুলফিকার ক্ষেপণাস্ত্র মূলত ইরানি প্রযুক্তিনির্ভর। এই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে ইয়েমেন থেকে সরাসরি ইসরাইলের মূল ভূখণ্ডে হামলা কেবল সামরিক বার্তাই নয়, এটি ইসরায়েলের জন্য একটি কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও বটে।

ইসরাইলি ভূখণ্ডে এই হামলা বিশেষভাবে প্রতীকীও। কারণ এটি বেনগুরিয়ন বিমানবন্দর এলাকা ঘিরে রাখা নিরাপত্তা বলয়ের প্রতিরোধের মুখেও আঘাত হানে।

যদিও ইসরাইলের তরফ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এই হামলা যদি সফলভাবে নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে, তাহলে তা ইসরাইলের জন্য এক নতুন মাত্রার হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হবে।

মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক স্তরে ইসরাইল-ইরান সংঘাতের ছায়া স্পষ্টই ইয়েমেন হয়ে আরও বিস্তৃত হতে শুরু করেছে।

ইয়েমেনের তরফ থেকে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি এসেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি আরও সামরিক সরঞ্জাম পাঠায় এবং ইয়েমেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালায়, তাহলে আমাদের আঘাত আরও বাড়বে। ‍সেক্ষেত্রে এই অঞ্চল শান্তি নয়, সংঘাতের দিকে ধাবিত হবে’।

এই ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রভাব মধ্যপ্রাচ্যে শুধু সামরিক নয়, কূটনৈতিক আলোচনাকেও তীব্র করে তুলবে। যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল, ইরান এবং ইয়েমেন এখন এমন এক জটিল সমীকরণে আটকে পড়েছে, যেখানে প্রতিটি প্রতিক্রিয়া নতুন বিপর্যয়ের জন্ম দিতে পারে।

এদিন তেলআবিবের দিকে ছোঁড়া এই জুলফিকার ক্ষেপণাস্ত্র যেন শুধু ইসরাইল বা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্যই এক বিশেষ বার্তা। আর তা হলো- যখন প্রতিরোধের ভাষা কানে পৌঁছায় না, তখন আকাশ পথে বিস্ফোরণ আসে।

তবে এ ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে শুধু আগুন নয়, এর আকশে এক অনিশ্চয়তার মেঘও জমতে শুরু করেছে।
(যুগান্তর)




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD