বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৬:১৭ পূর্বাহ্ন




দ্বিগুণ পেঁয়াজের দাম, অনুসন্ধানে বেরিয়ে এলো ‘ভয়ংকর’ তথ্য

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১১:৩১ am
onion ginger garlic cardamom cinnamon clove cumin turmeric coriander Spices spice seed fruit root bark plant substance primarily flavoring coloring food distinguished from herbs leaves flowers stems plants garnish export shop food vegetable Vegetables mudi dokan bazar romzan মুদি বাজার নিত্য পণ্য দোকান ডলার রোজা রমজান পণ্য ভোগ্যপণ্যের আমদানি এলসি ভোগ্যপণ্য খালাস স্থলবন্দর বাজার গরম মসলা রেসিপি পাউডার দারুচিনি কালো মরিচ Spice খাদ্যের স্বাদ সুগন্ধ উদ্ভিদ উদ্ভিদের সবজি মাছ মাংস রান্নায় পেঁয়াজ আদা রসুন হলুদ মরিচ পিয়াজ জিরা ধনে মৌরি হিং পোস্তদানা গোল মরিচ মরিচ মসলা ভোজ্যতেল চিনি আটা Onion Vegetable মুড়িকাটা পিয়াজ পিঁয়াজ পেঁয়াজ পেঁয়াজ
file pic

ভরা মৌসুমে পেঁয়াজের দাম এক লাফে দ্বিগুণ হয়েছে। ৩০-৩৫ টাকার পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। রমজানে পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দুই সপ্তাহ যেতে না যেতে হঠাৎ কেন এর দাম কেজিপ্রতি দ্বিগুণ বাড়ল, সে বিষয়ে তথ্যানুসন্ধানে জানা যায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

বাজারে সরবরাহের জন্য কৃষকের কাছ থেকে যারা সরাসরি পেঁয়াজ কিনেন, তারা সেই পেঁয়াজ বাজারে না ছেড়ে অবৈধভাবে মজুত শুরু করেছেন। চক্রটি ভারত থেকে পেঁয়াজ আমাদানি বন্ধের অজুহাত সামনে এনে বাজারে অস্থিরতার পাঁয়তারা করছে। তারা সরকারকে এ বার্তা দিতে চাচ্ছে, ভারতের পেঁয়াজ ছাড়া দেশের চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়। আর এই চক্রান্তের অংশ হিসাবে তারা দেশে উৎপাদিত ভরা মৌসুমের পেঁয়াজের অবৈধ মজুত শুরু করে।

রমজানের পর থেকে ধাপে ধাপে দাম বাড়িয়ে এখন তা দ্বিগুণ করে ফেলেছে। আরও ভয়াবহ তথ্য হচ্ছে-এই সিন্ডিকেট ২-৩ মাসের মধ্যে দেশি পেঁয়াজ একশ টাকার ওপরে দাম ওঠাতে এখন থেকেই অপতৎপরতা শুরু করেছে। এমন বাস্তবতায় পেঁয়াজের বাজার রমজানের মতো সহনীয় রাখতে বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে রমজানে বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, সেই ফরমুলা অন্য সময়ের জন্য প্রয়োগ করতে হবে। সরকারকে জনগণের কাছে শত্রু বানাতে কারা পেছন থেকে ছুরি মারছে, গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে তাদের শনাক্ত করা জরুরি।

এদিকে বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও সবজির দামেও উত্তাপ ছড়াচ্ছে বিক্রেতারা। কৌশলে দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পুরোনো রাস্তায় হাঁটছে তারা। কিছু কিছু সবজির দাম ৮০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। কোনো কোনো সবজি ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের আগে অর্থাৎ রমজানে তারা প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ কিনেছেন ৩০-৩৫ টাকা দরে। ঈদের পর তা ৪০ টাকা এবং পরে সর্বোচ্চ ৫০ টাকায় কেনেন। বৃহস্পতিবার কেজিপ্রতি ৫ টাকা বাড়িয়ে ৫৫ টাকা করা হয়। আর শুক্রবার ছুটির দিন সেই পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ৬৫-৭০ টাকায় বিক্রির তথ্য মিলেছে।

রাজধানীর পাইকারি আড়ত কাওরান বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৪০-৪৫ টাকা। রোজায় বিক্রি হয়েছিল প্রতি কেজি ২৫-৩০ টাকা। বাজারে পাইকারি বিক্রেতা মো. মকবুল বলেন, সেই পুরোনো সিন্ডিকেট ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। ভারত থেকে আমদানি বন্ধের অজুহাতকে পুঁজি করে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা শুরু করেছে।

জুলাইয়ে কেজিপ্রতি বর্তমান দামেরও দ্বিগুণ করার ছক কষছে তারা। এরই অংশ হিসাবে চক্রটি ভরা মৌসুমের পেঁয়াজ অবৈধভাবে মজুত করে রাখছে বলে জানা গেছে। দেশীয় ‘হালি’ পেঁয়াজ থেকে দেশের চাহিদার বড় একটি অংশ মেটানো হয়। জানুয়ারি পর্যন্ত এ পেঁয়াজ আবাদ হয়। মাঠ থেকে তুলে বাজারে আসতে মার্চ-এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত গড়ায়। সে হিসাবে পেঁয়াজের মৌসুম এখনো শেষ হয়নি। অথচ এর মধ্যে দাম দিনদিন বাড়ানো হচ্ছে। এতে পাইকারি বিক্রেতারা বাড়তি দাম দিয়ে এনে বাড়তি দামে বিক্রি করছে বলে জানান তিনি। যার প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে।

এদিকে রাজধানীর খুচরা বাজারে একাধিক সবজি ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও কিছু সবজির দাম ৮০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। সঙ্গে একাধিক সবজির দাম ১০০ টাকার ওপরে। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, মুলার কেজি ৬০, শসা ৮০, কাঁকরোল ১২০-১৪০, করলা ৬০, টমেটো ৪০ এবং মিষ্টিকুমড়া ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়শ বিক্রি হচ্ছে ৭০, ধুন্দুল ১০০, ঝিঙা ১০০, গোল বেগুন ১০০, লম্বা বেগুন ৮০, পটল ৭০, কচুর লতি ৮০, বরবটি ৮০, চিচিঙ্গা ৭০, কাঁচা মরিচ ১০০ এবং পেঁপে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে প্রতি পিস লাউ ৬০, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০, লেবু মানভেদে প্রতি হালি ২০-৩০, আলুর কেজি ৩৫-৪০ এবং গাজর প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা।

মালিবাগ কাঁচাবাজারে ছুটির দিন নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. শাকিল বলেন, বাজারে ফের অস্থিরতা শুরু হয়েছে। রোজা ও ঈদে বাজারে একপ্রকার স্বস্তি ছিল। হঠাৎই অসাধুরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে নাজেহাল করে ফেলছে। যে পঁয়াজ ৩০-৩৫ টাকায় কিনতাম, এখন ৬৫ টাকায় কিনেছি। সবজির দামে আগুন। হাত দেওয়া যাচ্ছে না। সরকারের উচিত হবে রোজা ও ঈদে যেভাবে বাজার তদারকি করে নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল, এখনো একইভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা। এতে আমাদের মতো ভোক্তারা একটু হলেও স্বস্তিতে থাকবে। কারণ, সবাই ইউনূস সরকারের প্রতি আস্থা রেখেছে। তার আমলে যদি পণ্যের সিন্ডিকেটদের না ধরতে পারে, তাহলে সরকারের ব্যর্থতা হবে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, পণ্যের বাজার এখন কে বা কারা নিয়ন্ত্রণ করছে, সরকারের কাছে সে তথ্য থাকার কথা। যারা হঠাৎ করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে বাজারে অস্থিরতার চেষ্টা করছে, তাদের চিহ্নিত করে প্রকাশ্যে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। কারণ, রোজা ও ঈদের বাজারে যে পরিমাণে স্বস্তি বিরাজ করেছে, তা সব মহলে আলোচনা হয়েছে। এ স্বস্তি ধরে রাখতে অন্তর্বর্তী সরকারকেই তৎপর হতে হবে। এতে ক্রেতাসাধারণ উপকৃত হবে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, পেঁয়াজের দাম কারা বাড়িয়েছে, তা চিহ্নিত করতে তিন স্তরে তদারকি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
(যুগান্তর)




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD