মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০১:১১ অপরাহ্ন




ডাকসু নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা চূড়ান্ত

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫ ৭:৫৪ pm
Dhaka University TSC Teacher Student Centre tsc dhaka university public space public place Roads pavement public squares parks beaches square park beache Road পাবলিক প্লেস পাবলিক প্লেস পাবলিক পরিবহন ধূমপানমুক্ত ঢাবি du ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিইউ Dhaka University শিক্ষক ছাত্র কেন্দ্র টিএসসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি
file pic

প্রচারে প্রার্থী-ভোটারের বাইরে কেউ নয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আচরণ বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ বিধিমালা অনুমোদন পায় বলে জানিয়েছেন প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদ।

বিধিমালা অনুযায়ী, প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে ভোটের দিনের ২৪ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত প্রচার চালানো যাবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রচার চালানো যাবে, তবে রাত ১০টার পরে কোনো ধরনের মাইক ব্যবহার করা যাবে না।

আর ভোটার বা প্রার্থী ব্যতীত অন্য কেউ কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রচার চালাতে পারবে না। এ বিধির কথা শুনে অনেকেই আপত্তি তুলেছেন।

অর্গানাইজেশন স্ট্রাটেজি ও লিডারশিপ বিভাগের শিক্ষার্থী নাজিম বলেন, “আমার মনে হয় না, এ ধারাটি আসলে প্রযোজ্য হবে। কেননা বাইরের কেউ যদি প্রচারণা চালায় বা সাবেক কেউ যদি চালায়, সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বাধা দেওয়ার কোনো এখতিয়ার নাই। কারণ এটা নিয়ে কোনো জাতীয় আইন নাই যে- এটা করতে পারবে না।”

ওই বিধিকে ‘অপ্রয়োগযোগ্য’ বলে বর্ণনা করেছেন ডাকসুর সাবেক প্রার্থী সাদিকুল ইসলাম সাদিক।

তিনি বলেন, “ডাকসু হচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের মত। এখানে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা আসেন; তার দলের পক্ষে প্রচারণা চালান।

“এর মাধ্যমে ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থীর জনপ্রিয়তা তৈরি হয়। এবারের ডাকসুতে যে এটার ব্যতিক্রম ঘটবে তা আমার মনে হয় না।”

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সাইমা হক বিদিশা বলেন, “এটা নিয়ে আমাদের চিন্তা করার বিষয় আছে। ইলেকশন কমিশন গঠিত হলে- এটা নিয়ে বিস্তারিত কী কী করা যায়, সেটা দেখব।”

বিধি অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের সময় প্রার্থী সর্বোচ্চ পাঁচজন প্রার্থীকে সঙ্গে নিতে পারবেন। এ সময় অন্য কোনো প্রার্থী বা ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কোনো ছাত্র সংগঠনের কেউ কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবেন না। আর কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে শোডাউনও করা যাবে না।

“কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র জমাদান, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার বা নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো ধরনের যানবাহন, মোটরসাইকেল, রিকশা, ঘোড়ার গাড়ি, হাতি, ব্যান্ড পার্টি ইত্যাদি নিয়ে কোনরূপ শোভাযাত্রা, শোডাউন বা মিছিল করতে পারবে না।”

বিধিমালায় বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো সভা-সমাবেশ বা শোভাযাত্রা করতে চাইলে দিন, সময় ও স্থান উল্লেখ করে চিফ রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। আর এই অনুমতি নিতে হবে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে। ক্যাম্পাস এলাকায় চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে- এমন সড়কে জনসভা, পথসভা বা সমাবেশ করা যাবে না বলেও বিধি করা হয়েছে।

প্রচারের জন্য সাদা-কালো পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ব্যবহার করা যাবে; তবে এসব প্রচার সামগ্রী কোনো ধরনের স্থাপনা, দেয়াল, যানবাহন, বেড়া, গাছপালা, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুটি বা দণ্ডায়মান অন্য কোনো বস্তুতে সাঁটানো যাবে না। এ ধরনের প্রচার সামগ্রীতে প্রার্থী নিজের ছবি ছাড়া অন্য কারো ছবি বা প্রতীক ব্যবহার করতে পারবে না।

ভোটের দিন প্রার্থী, ভোটার বা শিক্ষার্থীরা বাই সাইকেল ও রিকশা ব্যবহার করতে পারবেন। এর বাইরে কেবল রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি পাওয়া গাড়ি চলাচল করতে পারবে।

আচরণবিধি ভঙ্গ করলে শাস্তির বিধানও রাখা হয়েছে। কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কেউ নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা জরিমানা, প্রার্থিতা বাতিল অথবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার অথবা রাষ্ট্রীয়/বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী অন্য সাজা হবে।

ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি প্রণয়নে গত ১৫ জানুয়ারি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ খানকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছিল। সেই কমিটি প্রণীত আচরণবিধি গত বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটে অনুমোদন পায়।

এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ বলেন, “আমরা সিন্ডিকেটে আলোচনা করে এটা প্রস্তুত করেছি। এটার মধ্য দিয়ে আমরা একটু সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন দিতে পারব বলে আশা করি।”

আচরণবিধি কতটা কাজের?

২০১৯ সালে সবশেষ যে ডাকসু নির্বাচন হয়েছে, তাতে আচরণবিধি থাকলেও তা সেভাবে মানা হয়নি বলে ভাষ্য ওই নির্বাচনের কয়েক প্রার্থীর। সেবার বাম জোট থেকে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন সাদিকুল ইসলাম সাদিক।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২০১৯ সালের আচরণ বিধিমালা ছিল একটা ছাত্রলীগের মূলা ঝোলানো ব্যাপার। প্রশাসন তার ইচ্ছামত করেছে। সেখানে কোনো শিক্ষার্থী এটা পড়েও দেখেনি। তাই আচরণবিধির প্রয়োগ-বাস্তবায়ন কিছুই ছিল না।”

স্বাধিকার স্বতন্ত্র প্যানেলের সদস্য মীর আরশাদুল ইসলাম বলেন, “২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে আচরণবিধি বলতে কিছুই ছিল না। পুরো নির্বাচনই ছিল আনফেয়ার। নির্বাচনের আগের দিন আমরা সিলযু্ক্ত ব্যালটপেপার পেয়েছি। সেখানে আচরণবিধি আর প্রয়োগ হল কোথায়?”

তবে এবারের নির্বাচনে তেমনটা হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সাইমা হক বিদিশা বলেন, “আচরণ বিধিমালার বাস্তবায়নের বিষয়টা নির্ভর করে আন্তরিকতা ও দক্ষতার ওপর। আমাদের যেহেতু আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা আছে- আমরা আশা করি, একটা সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন আয়োজন করতে পারব। আমরা নিরপেক্ষ মনোভাব থেকে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন বদ্ধপরিকর।”

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, আগামী মে মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি গুছিয়ে আনতে চাইছেন তারা। এরপরই ডাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে। বিডিনিউজ২৪




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD