মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০১:০৯ অপরাহ্ন




বাড়তি সুবিধা দিয়ে আগের দামেই নতুন ইন্টারনেট প্যাকেজ বাংলালিংকের

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১০:২৬ pm
mobile tower Cell site cellular tower antenna network মোবাইল টাওয়ার রেডিয়েশন বিকিরণ নেটওয়ার্ক অপারেটর bangla link Banglalink Digital বাংলালিংক বাংলা লিংক মোবাইল ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেড
file pic

মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমাতে সরকারের চাপের মুখে মোবাইল ফোন অপারেটর বাংলালিংক বাড়তি সুবিধা দিয়ে আগের দামেই নতুন প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।

আগের দামেই ইন্টারনেট ডেটার ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ, ভয়েস মিনিটের ক্ষেত্রে ২২ শতাংশ এবং ডেটা ও ভয়েস মিশ্র বান্ডেলের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ বাড়তি সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে এ অপারেটর।

টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি ও বাংলালিংক এর দুজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে, সম্প্রতি ইন্টারনেটের দাম কমাতে সরকারের চেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলালিংকের মূল কোম্পানির উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্বের সঙ্গে সরকারের প্রতিনিধিদের আলোচনা হয়।

বাংলালিংকের প্রতিনিধিরা সেখানে বলেন, এমনিতেই তারা নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির মুখে আছেন। এ অবস্থায় তাদের পক্ষে নতুন করে দাম কমানো সম্ভব নয়। তবে তারা গ্রাহকদের বাড়তি কিছু দিতে পারেন, যাতে তাদের ব্যায় সাশ্রয় হয়।

এরপরই মঙ্গলবার রাতে বাংলালিংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন প্যাকেজ ঘোষণার কথা জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, “এখন ডেটার ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ, ভয়েস মিনিটের ক্ষেত্রে ২২ শতাংশ ও মিক্স বান্ডলের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ বেশি সুবিধা পাবেন গ্রাহক।”

এর বাইরেও কিছু সুবিধা দেওয়ার কথা জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “নির্দিষ্ট কিছু প্যাকের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা এখন অতিরিক্ত কোনো ডেটা খরচ ছাড়াই টফির বিশাল কনটেন্ট লাইব্রেরি এবং ফেসবুক, ইউটিউব ও টিকটকের মতো জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মে আনলিমিটেড এক্সেস পাচ্ছেন। কোনো বাড়তি খরচ ছাড়াই এসব জনপ্রিয় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম উপভোগ করার সুযোগ দিচ্ছে বাংলালিংক। এ সবের বাইরে যারা আরও বেশি ডেটা বা মিনিটের বিশেষ অফার গ্রহণ করতে চান, তারা মাইবিএল অ্যাপের মাধ্যমে এ সুবিধা উপভোগের সুযোগ পাবেন।”

গত ২১ এপ্রিল এক ফেইসবুক পোস্টে মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমাতে অপারেটরদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

পোস্টে তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে সরকার মোবাইল কোম্পানিগুলোকে ডিডব্লিউডিএম (ডেনস ওয়েভলেন্থ ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং) এবং ডার্ক ফাইবার সুবিধা প্রদান করেছে। এমতাবস্থায় বেসরকারি মোবাইল কোম্পানিগুলোর ইন্টারনেটের দাম না কমানোর কোনো ধরনের যৌক্তিক কারণ কিংবা অজুহাত অবশিষ্ট থাকে না।”

ফয়েজ তৈয়্যবের পোস্টের আট দিনের মাথায় নতুন প্যাকেজের ঘোষণা দিয়ে বাংলালিংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইওহান বুসেকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, “ডার্ক ফাইবার ও ডব্লিউডিএম অবকাঠামোয় মোবাইল অপারেটরদের অংশগ্রহণের সুযোগসহ টেলিযোগাযোগ খাতে সরকারের চলমান সংস্কার কার্যক্রমকে আমরা স্বাগত জানাই।

“বাংলাদেশে ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির আওতা আরও বিস্তৃত করতে, গ্রাহকদের জন্য উন্নত সুবিধা নিশ্চিত করতে এবং দেশের ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশে ভূমিকা রাখতে আমরা সরকার ও অন্যান্য অংশীজনের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করে যেতে চাই। এই অঙ্গীকারে বাংলালিংক সবসময়ই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”

চলতি মাসেই বাংলালিংকের সিইও হিসেবে যোগ দেওয়া ইওহান বুসে এর আগে সোমবার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে টেলিকম খাতের সাংবাদিকদের সঙ্গে সাক্ষাতেও ‘সেবার মান বাড়োনো’ নিয়ে কথা বলেন।

সেখানে তিনি বলেন, “এখানে ব্যবসায় পরিবেশ খুবই চ্যালেঞ্জিং। তারপরও আমরা ভালো দিনের প্রত্যাশায় এখানে ডিজিটাল সেবার একটি টেকসই ইকো সিস্টেম গড়ে তুলতে চাই।”

দাম কমানোর চেয়ে সেবার মানের দিকে বাংলালিংক বেশি নজর দেবে–এমন ঘোষণা দিয়ে প্রধান নির্বাহী বলেন, “আমরা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের চেয়ে কম দামেই সেবা দিই। এখানে ব্যবসার ব্যয় অনেক। মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ। টাকার মান ক্রমেই কমছে। তাই আমাদের এখন দামের চেয়ে মানের দিকেই বেশি নজর দেওয়া দরকার।”

এই খাতের উচ্চ কর হার এবং তরঙ্গ (স্পেক্ট্রাম) মূল্য নিয়ে কিছুটা অসন্তোষ ছিল ইওহান বুসের কণ্ঠে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের টেলিকম খাতে স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং নতুন বিনিয়োগ ঝুঁকির বিষয়। ১০০ টাকার মধ্যে সাড়ে ৫৪ টাকাই যায় ট্যাক্সে। বাকি সাড়ে ৪৫ টাকা দিয়ে পুরো ব্যবসায় পরিচালনা অনেকটাই কঠিন।”

এই খাতের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে, কর হার ও তরঙ্গমূল্য কমানো এবং টেলকো অপারেটরের লাইসেন্সের পাশাপাশি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা এমএফএস লাইসেন্স দেওয়ার দাবিও তোলেন তিনি।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD