বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার একটি গভীর ও পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র চলছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে দেশকে একদলীয় শাসনের দিকে ঠেলে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে, যার বিরুদ্ধে দেশের শিক্ষক সমাজসহ সচেতন নাগরিকদের সতর্ক থাকতে হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বিএনপি সমর্থিত শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট আয়োজিত শিক্ষক মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল ইসলাম বলেন, দেশের মানুষ আজ গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও ন্যায়বিচারের জন্য লড়ছে। এ অবস্থায় শিক্ষক সমাজের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। কারণ শিক্ষকরা শুধু পেশাজীবী নন, তারা জাতির বিবেক। তাই আসন্ন নির্বাচনে কেউ যেন অগণতান্ত্রিক শক্তির হাতের খেলায় পরিণত হতে না পারে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আজকে একটি গভীর ষড়যন্ত্র চলছে- যে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফলকে আগেই নির্ধারিত করার চেষ্টা চলছে। প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ও কিছু প্রভাবশালী গোষ্ঠীর মাধ্যমে গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠানোর এই অপচেষ্টা ব্যর্থ করতে হবে জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য একটাই- শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বপ্নের সেই সুখী, সমৃদ্ধ ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন বাংলাদেশ গড়া। এমন একটি বাংলাদেশ যেখানে জনগণ প্রকৃত অর্থে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে, যেখানে শিক্ষা ও ন্যায়বিচার সবার জন্য সমানভাবে নিশ্চিত থাকবে।
শিক্ষকদের দাবি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, বৈষম্যহীন শিক্ষা ব্যবস্থা, অবসর বয়স ৬৫ বছর নির্ধারণ, নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণ এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ-এই দাবিগুলো আমরা সমর্থন করি এবং এগুলো আমাদের দলের ৩১ দফা কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত। বিএনপি বিশ্বাস করে-যদি শিক্ষক সমাজ মর্যাদা ও নিরাপত্তা না পান, তাহলে একটি প্রজন্মও সঠিকভাবে গড়ে উঠতে পারবে না। শিক্ষকরা যদি তাদের অবস্থান থেকে নৈতিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন, তাহলে গোটা সমাজ আলোকিত হবে। আমরা চাই শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন সংস্কার, যেখানে শুধু পাস নম্বর নয়, মানবিক মূল্যবোধ ও দেশপ্রেম শেখানো হবে।
মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া এবং সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত মহাসচিব জাকির হোসেন।