বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০৮ পূর্বাহ্ন




নাটকীয়তা শেষে বিসিবি সভাপতি বুলবুল

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫ ১১:১৬ am
Bangladesh Cricket board bcb বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবি
file pic

অবশেষে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হলেন সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। বিসিবি’র এই নির্বাচন ঘিরে নাটকের শেষ ছিল না। এমনকি শেষ পর্যন্ত ভোট হবে কিনা, তা নিয়েও ছিল ভীষণ শঙ্কা। বিশেষ করে তামিম ইকবাল ছিলেন এই নাটকের মূল চরিত্র। শেষ পর্যন্ত তিনি ১৪ জনকে নিয়ে এই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এই নির্বাচন আদালত পর্যন্তও গড়িয়েছে। ঘটেছে একের পর এক বিতর্কিত ঘটনা।

সবকিছুকে পেছনে ফেলে নির্বাচিত হন বুলবুল। তিনি বিসিবি’র ২০তম সভাপতি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নিলেন। অন্যদিকে বিসিবি’র প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ হোসেন জানিয়েছেন, এই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। যারা নির্বাচনে হেরে যায়, তারা অনেক সময় অনেক রকম অভিযোগ করে। তবে আমাদের কাজটি সঠিকভাবে করেছি। অনাকাঙ্ক্ষিত কিছুই হয়নি।’ অন্যদিকে সহ-সভাপতি হয়েছেন ফারুক আহমেদ ও শাখাওয়াত হোসেন। সভাপতি ও দুই সহ-সভাপতি তিনজনেরই কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় এই পদগুলোর জন্য কোনো নির্বাচন হয়নি বলেই জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

গতকালের নির্বাচন ঘিরে আলোচনা-সমালোচনা ছিল তুঙ্গে। দীর্ঘদিনের বিসিবি’র পরিচালক নাজমুল হাসান পাপনের স্থলাভিষিক্ত কে হবেন, তা নিয়ে কৌতূহল ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে। তার বিদায়ের পর ফারুক আহমেদ ও আমিনুল ইসলাম বুলবুল এসেছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে মনোনীত হয়ে। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নানা নাটকীয়তা শুরু হয়। প্রথমত, কাউন্সিলর তালিকা নিয়ে আপত্তি ওঠে। এরপর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের হিড়িক এবং সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগ নির্বাচনকে চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে।

বিসিবি’র নির্বাচনে মোট ৪২টি পরিচালক পদের মধ্যে ২৫টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত কিছুদিনের ঘটনাপ্রবাহের পর নির্বাচন চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত হয় আগেই। সরকারি হস্তক্ষেপ, অনিয়মসহ নানা অভিযোগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান আলোচিত প্রার্থী তামিম ইকবালসহ মোট ২১ জন প্রার্থী। তাতে নির্বাচন তার গ্রহণযোগ্যতা হারায় প্রবলভাবে। নির্বাচনের আগেই পরিচালনা পর্ষদে জায়গা নিশ্চিত হয়ে যায় ৯ জনের, যেখানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তারা। তাই অন্যদের বেশির ভাগেরই নির্বাচনে জয় ছিল অনেকটা নিশ্চিত।

মূলত নির্বাচনের দিন গতকাল কিছুটা কৌতূহল ছিল শুধু দুটি ক্যাটাগরি ঘিরে। ৩ নম্বর ক্যাটাগরিতে খালেদ মাসুদ পাইলট ও দেবব্রত পালের লড়াই এবং ১ নম্বর ক্যাটাগরিতে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের লড়াই। শেষ পর্যন্ত এই দুটি লড়াইও জমেনি। বিসিবি বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে শুধু ৩ নম্বর ক্যাটাগরি ঘিরেই ছিল কিছুটা কৌতূহল, যা সাবেক ক্রিকেটারদের আসন হিসেবে পরিচিত। সেখানে বিপুল ব্যবধানে জিতেছেন সাবেক এই কিপার-ব্যাটসম্যান। খালেদ মাসুদ পাইলট পেয়েছেন ৩৫ ভোট। এই ক্যাটাগরিতে তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক সাবেক ক্রিকেটার দেবব্রত পাল পেয়েছেন মাত্র ৭ ভোট।

উল্লেখ্য, বিসিবি’র গত নির্বাচনে অংশ নিয়ে বড় ব্যবধানে হেরে গিয়েছিলেন খালেদ মাসুদ। তবে এবারের ভোটের পর নির্বাচনে সরকারি প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ করেছেন পরাজিত প্রার্থী দেবব্রত পাল। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কাউন্সিলর মনে করেন, এই নির্বাচনে ফিক্সিংয়ের চেয়েও গভীর কিছু হয়েছে। তার এই মন্তব্য নির্বাচনের গোটা প্রক্রিয়া এবং ফলাফলের বৈধতাকে আরও একবার প্রশ্নের মুখে ফেলে দিলো। অন্যদিকে, ১ নম্বর ক্যাটাগরির রংপুর বিভাগ থেকে ৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন হাসানুজ্জামান, যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল আরও একজন। অন্য ক্যাটাগরিগুলোতে জয়ী প্রার্থীরাও মোটামুটি নিশ্চিতভাবেই নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচনের ফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হওয়ার পর নবনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা তাদের মধ্য থেকে সভাপতি ও দুই সহ-সভাপতি নির্বাচন করেন। ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষ পদগুলোতে আমিনুল ইসলাম বুলবুল আসায় বিতর্কের মাঝেই এই নির্বাচন বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এক নতুন, তবে প্রশ্নবিদ্ধ অধ্যায় রচনা করলো। যা কিনা পরের দিনগুলোতে দেশের ক্রিকেটকে ভোগাতে পারে বলেই মনে করেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD