সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৪৯ অপরাহ্ন




শাহজালাল বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ড: ফ্লাইট ওঠানামা স্থগিত

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫ ৪:৫১ pm
অগ্নিকাণ্ড Fire Incident Fire Service কারখানা শিখা আগুন নির্মাণ দুর্ঘটনা হতাহত নিহত অগ্নিকাণ্ড অগ্নি ফায়ার সার্ভিস bm কর্মক্ষেত্র ঝুঁকি কারখানা আগুন
file pic

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লেগেছে। আজ শনিবার (১৮ অক্টোবর) আনুমানিক দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস, বিমানবাহিনী, র‍্যাব, বিজিবি সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।

আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৬টি ইউনিট কাজ করছে। এ ছাড়া বিমানবন্দর বাহিনীর ফায়ার ইউনিট, ঢাকা ওয়াসার গাড়িও দেখা যায়।

বিমানবন্দরের কর্তব্যরত ব্যক্তিরা আজকের পত্রিকাকে জানান, বিমানবন্দরের ক্যানোপি-১ থেকে ক্যানোপি-৬ পর্যন্ত, বিমানের স্টোর রুম, বিজিএমইএর কুরিয়ার সেকশনে আগুন জ্বলছে।

বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট সংলগ্ন আমদানি কার্গো ভিলেজ হাউসে আজ বেলা সোয়া ২টার দিকে আগুন লাগে।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিমানবন্দর ফায়ার সেকশন, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ফায়ার ইউনিট এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কার্যক্রম শুরু করে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, বিমানবন্দরের ভেতরে ৮ নম্বর গেটের কাছে স্কাই ক্যাপিটাল-এর অফিস ও ইম্পোর্ট কার্গো এরিয়ায় আগুন লেগেছে।

আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, কার্গো সেকশনে আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ সিভিল অ্যাভিয়েশনসহ বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর দুটি ফায়ার ইউনিট।

ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কার্গো ভিলেজে অনেক দাহ্য পদার্থ রয়েছে। সেই সঙ্গে প্রচুর কেমিক্যালের উপস্থিতিও আমরা পেয়েছি। তাই সহজে ফায়ার সার্ভিসের ভেতরে প্রবেশ করে সম্ভব হচ্ছে না। ফলে রিমোট কন্ট্রোল ফায়ার ফাইটিং রোবট আনা হয়েছে।’

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোনো প্রাণহানি বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনো পাওয়া যায়নি।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো আগুন লাগার কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে তদন্ত শুরু করেছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সবাইকে নিরাপদ ও সচেতন থাকার অনুরোধ জানিয়েছে এবং জানিয়েছে যে, প্রাথমিক তদন্ত শেষে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

কার্গো ভিলেজে কর্মরত এক কর্মচারী জানিয়েছেন, তাঁরা কাজ শেষে সেখান থেকে চলে যান। এর ১০ মিনিট পরই আগুন লাগে।

আমদানি কার্গো ভবনের ২ নম্বর কুরিয়া গেট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বিমান বাংলাদেশের এক কর্মী হৃদয় বলেন, বেলা ২টা ১০ মিনিটের দিকে সবগুলো ফায়ার এলার্ম বেজে ওঠে। এরপর সব স্টাফ দৌড়াদৌড়ি করে বের হয়ে যান।

আমদানি কার্গো ভবনটিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা বিভিন্ন পণ্য মজুত করা থাকে। এর মধ্যে গেট এ বা ১ নম্বর হলো কমার্শিয়াল গেট নামে পরিচিত। এখানে কেমিক্যাল, কসমেটিক্স, ব্যাগেজ থাকে। গেট বি-গার্মেন্টস পণ্য এবং গেট সি-তে ইলেক্ট্রনিক পণ্য, শিল্প মেশিন থাকে।

এসব পণ্য ২৪ ঘন্টা থেকে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত থাকে, এরপর এগুলো আমদানিকারকেরা ছাড়িয়ে নেন। শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকায় অনেক পণ্য জমেছিল, যা রোববার বিমানবন্দর থেকে আমদানিকারকরা ছাড়িয়ে নিতেন।

ফায়ার সার্ভিসের ৩১ ইউনিট

ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো ভিলেজে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৩১ ইউনিট। আরও ৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলের দিকে রওনা রয়েছে।

বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম সমকালকে জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৩১টি ইউনিট কাজ করছে। আরও ৫টি ইউনিট পথে রয়েছে।

বেবিচকের সহকারী পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ কাউছার মাহমুদ সমকালকে জানান, আজ শনিবার ২টা ১৫ মিনিটে বিমানবন্দরের কার্গো এলাকায় হঠাৎ আগুন লাগে। ঘটনার পরপরই বিমানবন্দর ফায়ার সেকশন, বিমানবাহিনীর ফায়ার ইউনিট এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা শুরু করে।

তিনি আরও বলেন, আগুনের ঘটনায় সাময়িকভাবে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।  আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করার সময় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যসহ বেম কয়েকজন আহত হয়েছেন।

ঘটনাস্থল থেকে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, প্রথমে কুরিয়ার গোডাউনে আগুন লাগে। এরপর আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এখন আগুন দাউ দাউ করে চলছে। ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণ চেষ্টা চালাচ্ছে।

এদিকে বিকেলে আইএসপিআরের পক্ষ থেকে এক বার্তায় জানানো হয়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নি নির্বাপণে কাজ করছে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশনসহ বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর দুটি ফায়ার ইউনিট। অন্যদিকে শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এএফএম ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম নিয়ন সমকালকে জানান, আজ দুপুর ১২টার দিকে আমরা আমদানি করা মালামাল কার্গো ভিলেজে রাখি। মালামালগুলো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক সমকালকে জানান, শনিবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। ২টা ৩৪ মিনিটের দিকে শাহজালাল বিমানবন্দরের দিকে রওনা হয় চারটি ইউনিট। পর্যায়ক্রমে আরও বেশ কয়েকটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে।

আগুন লাগার কারণ তাৎক্ষণিক জানা যায়নি। এখনও হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

শাহজালাল বিমানবন্দরের আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ২৮ ইউনিট

হযরত শাহজালার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২৮টি ইউনিট করছে। আগুনের তীব্রতার কারণে রাজধানীর বিভিন্ন ফায়ার স্টেশন থেকে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে আরও ০৮টি ইউনিট রওনা দিয়েছে।

বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটের কার্গো ভিলেজে এই আগুন লাগে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম। তিনি বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২৮টি ইউনিট এবং ঘটনাস্থলে যাচ্ছে আরও ০৮টি ইউনিট।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ জানান, কার্গো সেকশনের পাশে একটি অংশে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীসহ বিমানবন্দরের দায়িত্বরতরা কাজ করছে। তিনি বলেন, বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

বেবিচকের সহকারী পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ কাউছার মাহমুদ বলেন, দুপুর আড়াইটার বিমানবন্দরের কার্গো এলাকায় হঠাৎ আগুন লাগে। ঘটনার পরপরই বিমানবন্দর ফায়ার সেকশন, বিমানবাহিনীর ফায়ার ইউনিট এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।

বিকল্প রুটে পাঠানো হয়েছে ঢাকাগামী কয়েকটি ফ্লাইট

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণে ঢাকাগামী কয়েকটি ফ্লাইট বিকল্প রুটে পাঠানো হয়েছে। এরইমধ্যে চট্টগ্রাম ও কলকাতায় একাধিক ফ্লাইট অবতরণ করেছে। এদিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা কয়েকটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও ট্যাক্সিওয়েতে আটকে আছে।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুরগামী বাটিক এয়ারের ওডি–১৬৩ ফ্লাইট এবং ঢাকা থেকে মুম্বাইগামী ইন্ডিগোর ৬ই–১১১৬ ফ্লাইট ট্যাক্সিওয়েতে অপেক্ষা করছে। ব্যাংকক থেকে ঢাকায় আসা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি অবতরণ করেছে চট্টগ্রামে। দিল্লি থেকে ঢাকা আসা ইন্ডিগোর ফ্লাইট অবতরণ করেছে কলকাতায়। এয়ার এরাবিয়ার শারজাহ থেকে ঢাকা আসা ফ্লাইট চট্টগ্রামে অবতরণ করেছে। হংকং থেকে ঢাকা আসা ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ারলাইনসের বিমানটি অবতরণ না করতে পেরে আকাশে চক্কর দিচ্ছে।

আগুনের পরিস্থিতি ও নিয়ন্ত্রণের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তীতে উড্ডয়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সৈয়দপুর থেকে ঢাকাগামী ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণ না করে চট্টগ্রামে অবতরণ করেছে। একইভাবে ইউএস–বাংলা এয়ারলাইন্সের চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী একটি ফ্লাইট উড্ডয়নের পর পুনরায় চট্টগ্রামে ফিরে গেছে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। কার্গো ভিলেজ এলাকার আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার পর স্বাভাবিক ফ্লাইট চলাচল পুনরায় শুরু হবে।

বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, আগুন মূলত কার্গো ভিলেজ এলাকায়, যাত্রী টার্মিনালে এর প্রভাব পড়েনি। তবে বিমান চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শাহজালাল বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা সাময়িক স্থগিত

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনের একটি অংশে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, আগুনের ঘটনায় বিমান ওঠানামা স্থগিত থাকায় ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুরগামী বাটিক এয়ারের ওডি১৬৩ ফ্লাইট, ঢাকা থেকে মুম্বাইগামী ইন্ডিগোর ৬ই১১১৬ ফ্লাইটটি ট্যাক্সিওয়েতে অপেক্ষা করছে।

এছাড়াও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সৈয়দপুর থেকে ঢাকাগামী ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণ না করে চট্টগ্রাম যাচ্ছে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী একটি ফ্লাইট উড্ডয়নের পর আবার চট্টগ্রামে ফিরে গেছে।

এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে এলাকায় আকস্মিকভাবে আগুনের ঘটনা ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট কাজ করছে। আরও ১৬টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যাচ্ছে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনার পরপরই বিমানবন্দর ফায়ার সেকশন, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ফায়ার ইউনিট এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে সম্মিলিতভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কার্যক্রম শুরু করে।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD