সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মুনাফা ঘোষণা করা হয়েছে। ওই অর্থবছরে সর্বোচ্চ মুনাফা পাওয়ার হার ১১ দশমিক ৬১ শতাংশ। চাঁদাদাতারা তাদের পেনশন আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে মুনাফার পরিমাণ দেখতে পারবেন। গত অর্থবছরে মোট মুনাফা হয়েছে প্রায় ১৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
সোমবার জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদ সভায় এ তথ্য জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এতে অর্থ সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মহিউদ্দীন খানসহ অন্যান্য পর্ষদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৯৮৭ জন মাসিক চাঁদা জমা দিয়েছেন। মাসিক চাঁদা এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রারম্ভিক স্থিতিসহ মোট জমা করা অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮৭ কোটি ৯৭ লাখ ৯০ হাজার ৫৪ টাকা।
জমা করা অর্থের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মুনাফার পরিমাণ ১৬ কোটি ৩৩ লাখ ৪ হাজার ২৩ টাকা। পরিচালনা পর্ষদ এ মুনাফা বিনিয়োগ সময়কালের ভিত্তিতে হিস্যা অনুযায়ী বিনিয়োগকারীদের পেনশন হিসেবে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে হিসেবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সর্বোচ্চ মুনাফা পাওয়ার হার ১১ দশমিক ৬১ শতাংশ।
সভায় সুরক্ষা স্কিমে চাঁদার হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সুরক্ষা স্কিমটি স্বকর্মে নিয়োজিতদের জন্য। স্বকর্মে নিয়োজিত ক্যাটেগরিতে যেমন নিম্ন আয়ের লোক রয়েছেন, তেমনি উচ্চ আয়ের লোকও রয়েছেন। এ স্কিমে বর্তমানে সর্বোচ্চ চাঁদার হার ৫ হাজার টাকা। উচ্চ আয়ের নাগরিকদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে প্রগতি পেনশন স্কিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সুরক্ষা স্কিমে সর্বোচ্চ জমার হার ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।
আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবাগ্রহণ নীতিমালা, ২০২৫-এর আওতায় আউটসোর্সিং সেবাকর্মীদের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণের সুযোগ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আউটসোর্সিং সেবাকর্মীরা প্রগতি স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। প্রগতি স্কিমের সর্বনিম্ন মাসিক চাঁদার হার ১ হাজার টাকা হলেও আউটসোর্সিং সেবাকর্মীদের জন্য সহনীয় করতে তাদের সর্বনিম্ন মাসিক চাঁদার হার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সামর্থ্য থাকলে সেবাকর্মীরা আরও বেশি হারের চাঁদার স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। আউটসোর্সিং সেবাকর্মীদের এ স্কিমে অংশগ্রহণের জন্য মাসিক চাঁদার পুরোটাই সেবাকর্মী বহন করবেন। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোনো অংশগ্রহণ থাকবে না।
পেনশন স্কিমের ইসলামিক ভার্সন
সভায় সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ইসলামিক ভার্সন চালু করা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এ-সংক্রান্ত সর্বোত্তম চর্চা পর্যালোচনা করে ধারণাপত্র তৈরির কাজ সম্পন্ন করে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ইসলামিক ভার্সন চালুর উদ্যোগ নেওয়ার ওপর সভায় গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
সভায় পেনশন স্কিমে বীমা সুবিধা চালু করার বিষয়েও আলোচনা হয়। সর্বজনীন পেনশন স্কিমে বীমা সুবিধা চালুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলমান রয়েছে। অ্যাকচুয়ারি অ্যানালাইসিসের ভিত্তিতে এ বিষয়ে ধারণাপত্র তৈরির কাজ জরুরি ভিত্তিতে সম্পন্ন করার জন্য পরিচালনা পর্ষদ থেকে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।