বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:০৮ অপরাহ্ন




খ্রিস্টানদের রক্ষায় নাইজেরিয়ায় সামরিক পদক্ষেপের হুমকি ট্রাম্পের

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫ ১:১৩ pm
Donald Trump USA President ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রপতি
file pic

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, নাইজেরিয়া সরকার দেশটির খ্রিস্টানদের হত্যা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে সেখানে সামরিক অভিযান চালানো হতে পারে।

নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য ‘দ্রুত’ সামরিক অভিযান চালানোর জন্য তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন বলে ট্রাম্প জানিয়েছেন।

শনিবার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি আরও জানান, মার্কিন সরকার অবিলম্বে নাইজেরিয়াকে দেওয়া সব সাহায্য ও সহযোগিতা বন্ধ করবে।

ট্রাম্প লিখেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র যদি তার সামরিক বাহিনী পাঠায়, তাহলে তারা ভয়াবহ নৃশংসতা চালাতে থাকা ইসলামিক সন্ত্রাসীদের পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দিতে ‘ঝাঁপিয়ে পড়বে’।”

তবে নাইজেরিয়ায় খ্রিস্টানদের সঙ্গে কী আচরণ করা হচ্ছে তার সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ না দিয়েই এসব লিখেছেন তিনি, জানিয়েছে রয়টার্স।

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়া মহাদেশটির সবচেয়ে জনবহুল দেশ এবং শীর্ষ খনিজ তেল উৎপাদক। এই দেশটিতে ২০০ জাতিগোষ্ঠী আছে যারা খ্রিস্টান, ইসলাম ও ঐতিহ্যবাহী ধর্মবিশ্বাসগুলো অনুসরণ করে আসছে আর তাদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দীর্ঘ ইতিহাস আছে।

ট্রাম্প নাইজেরিয়াকে একটি ‘সম্মান হারানো দেশ’ বলে উল্লেখ করেছেন। দেশটির সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে তাড়া দিয়েছেন তিনি।

সতর্ক করে বলেছেন, “আমরা যদি আক্রমণ করি, তা দ্রুত, হিংস্র ও মধুর হবে। আমাদের লালনপালন করা খ্রিস্টানদের ওপর সন্ত্রাসী গুন্ডারা যেমন আক্রমণ করে ঠিক তেমন!”

ট্রাম্পের এই সামরিক পদক্ষেপের হুমকি নিয়ে নাইজেরিয়া সরকার তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। হোয়াইট হাউজও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাব্য সময়কাল নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সামাজিক মাধ্যম এক্স এ এক পোস্টে লিখেছেন, “যুদ্ধ মন্ত্রণালয় পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। হয় নাইজেরিয়া সরকার খ্রিস্টানদের সুরক্ষা দেবে অথবা এসব ভয়ানক নৃশংসতা চালানো ইসলামিক সন্ত্রাসীদের আমরা হত্যা করবো।”

শুক্রবার ট্রাম্প প্রশাসন নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ এর তালিকায় ফের নথিভুক্ত করে। এর পরদিনই নাইজেরিয়া নিয়ে ওই পোস্ট দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য অনুযায়ী, এ তালিকায় থাকা দেশগুলো ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন করে। অন্য যে দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের এ তালিকায় আছে তাদের মধ্যে চীন, মিয়ানমার, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া ও পাকিস্তান উল্লেখযোগ্য।

ট্রাম্প তার আক্রমণের হুমকি দেওয়া বক্তব্য পোস্ট করার আগে শনিবার সকালে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ টিনুবু তার দেশে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে নাইজেরিয়ার ফের অন্তর্ভুক্তির প্রতিক্রিয়ায় তিনি তার দেশের ধর্মীয় স্বাধীনতা সুরক্ষার প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন।

এক বিবৃতিতে তিনি ‘সব ধরনের বিশ্বাসের অনুসারি নাগরিকদের সুরক্ষার সাংবিধানিক নিশ্চয়তার’ কথা উল্লেখ করে বলেন, “নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু হিসেবে চিহ্নিত করা আমাদের জাতীয় বাস্তবতার প্রতিফল নয়। এতে সকল নাইজেরীয়র ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতার সুরক্ষার জন্য সরকারের অটল ও আন্তরিক প্রচেষ্টার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।”

পৃথক এক বিবৃতিতে নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে তাদের লড়াই অব্যাহত রাখার প্রত্যয় জানিয়ে বলেছে, ওয়াশিংটন তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে থাকবে বলে আশা করছে তারা।

গত বছর নাইজার থেকে এক হাজার মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর থেকে পশ্চিম আফ্রিকায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। এখন ওই অঞ্চলে মাঝে মাঝে কিছু সামরিক মহড়ায় ছোট ছোট মার্কিন সেনাদল অংশ নিয়ে থাকে। মহাদেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি আছে জিবুতিতে। সেখানে পাঁচ হাজারেরও বেশি মার্কিন সেনা আছে আর ওই অঞ্চলে কোনো অভিযান চালাতে এদেরই ব্যবহার করা হয়।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD