শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১০:৫৮ পূর্বাহ্ন




আমিরের সফরে ঢাকা-দোহার মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হলো

আউটলুকবাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ ১০:৫৭ pm
Qatar capital Doha Arab country কাতার রাজধানী দোহা পারস্য উপসাগর আরব উপদ্বীপ qater qatar flag bangladesh flag বাংলাদেশ পতাকা
file pic

শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির ঢাকা সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে এবং সম্পর্কের বহুমাত্রিকতা তৈরি হয়েছে। বড় প্রাপ্তির মধ্যে রয়েছে অন্যান্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মতো বাংলাদেশ সম্পর্কে কাতারের যে মনোভাব সেটির বড় পরিবর্তন হয়েছে। নিজ চোখে বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে গেলেন কাতারের আমির।

সফর শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তিনি বলেন, ‘এ সফরে রাজনৈতিকভাবে দৃঢ় সম্পর্ক তৈরি করা এবং সম্পর্কের বহুমাত্রিকতা তৈরির ক্ষেত্রে আমরা কয়েক ধাপ এগিয়ে গিয়েছি।’

মধ্যপ্রাচ্যের মানুষ বাংলাদেশিদের দেখে ‘গরিব’ হিসেবে, কিন্তু এখানে তারা উন্নতি নিজ চোখে দেখে গেছে। সুতরাং তিনি (আমির) নিজেই বললেন ‘সিয়িং ইজ বিলিভিং’। বাংলাদেশের উন্নতি দেখে তিনি অভিভূত।

কাতারের আমির দুই দিনের সফরে সোমবার ঢাকা এসে পৌঁছান। এ বছর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০ বছর পূর্তি হয়েছে।

কাতারের আমির ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে প্রায় ৪৫ মিনিট এবং এর আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত বৈঠক হয়েছে প্রায় ২৫ মিনিট। এ সফরে পাচঁটি চুক্তি ও পাচঁটি সমঝোতা স্মারক অর্থাৎ মোট ১০টি দলিল সই হয়েছে। চুক্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে দ্বৈতকর পরিহার, আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা, সাগরপথে পরিবহন, বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা, দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বদলি এবং যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত চুক্তি। সমঝোতা স্মারকের মধ্যে রয়েছে শ্রমশক্তি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক, বন্দর পরিচালনা, উচ্চ শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা, যুব ও ক্রীড়া সহযোগিতা এবং কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ সহযোগিতা।

গত দুই বছরে প্রধানমন্ত্রী দুই বার কাতার সফর করেছেন যেটিকে তারা অত্যন্ত স্বাগত জানিয়েছিল। এর ফলো-আপ হিসাবে আমিরের সফর হলো। এর ফলে এটা স্পষ্ট হলো যে কাতারেরও আগ্রহ আছে বাংলাদেশ সম্পর্কে, আমির নিজেই এই তথ্য জানালেন।

জ্বালানি আমদানি

এলএনজি সরবরাহকারী দেশের মধ্যে কাতার অন্যতম। ওই দেশের সঙ্গে এলএনজি সরবরাহ করার দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি রয়েছে বাংলাদেশের।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কাতার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তারাও বুঝতে পেরেছে বাংলাদেশের অর্থনীতি বাড়ছে এবং এলএনজির চাহিদা আরও বাড়বে।’

এলএনজি সাপ্লাই চেইনেও কাতার আগ্রহী এবং তারা স্থলে এলএনজি টার্মিনাল করা যায় কিনা সেটি বিবেচনা করছে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।

বাণিজ্যিক স্বার্থ

বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ২৫০ কোটি ডলারের বেশি এবং এর বেশিরভাগ এলএনজি আমদানির জন্য বাংলাদেশ ব্যয় করে থাকে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘হঠাৎ করেই দেখা গেলো কাতারের সঙ্গে বাণিজ্য অনেক বেশি হচ্ছে এবং এর বেশিরভাগ আমদানি। এটি নিশ্চয় তারাও বিবেচনায় নিয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের অর্থনীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং চাহিদা বাড়ছে।’

একইভাবে কাতারে বাংলাদেশ বিভিন্ন পণ্য পাঠাতে পারে, যেমন কৃষি পণ্য ও হালাল খাবারসহ অন্যান্য জিনি, সচিব জানান।

তিনি বলেন, পর্যটন খাতেও তাদের আগ্রহ আছে এবং এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের জানিয়েছেন যে কক্সবাজার বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক করা হবে এবং সেখানে পর্যটন বিষয়টি তারা বিবেচনা করতে পারে।

কাতারের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ বাংলাদেশের ব্যবসায়ী নেতারা দেখা করে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করেছেন। কাতারও বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে আগ্রহী আছে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।

কর্মসংস্থান

কাতারে প্রায় চার লাখ বাংলাদেশি কাজ করে। ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপের সময়ে অবকাঠামো নির্মাণে বাংলাদেশের প্রচুর শ্রমিক অবদান রেখেছে।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, অন্যান্য দেশগুলোর মতো কাতারও দক্ষ শ্রমিক চায় বাংলাদেশ থেকে। তারা এতদিনে জেনে গেছে যে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য সেবা বা প্রকৌশলী বা অন্যান্য ক্ষেত্রে দক্ষ লোক আছে।

আমরাও সেখানে লোক পাঠাতে চাই। আমরা তাদের অনুরোধ করেছি যেন আধা-দক্ষ শ্রমিকদেরও যেন তারা সুযোগ দেয়। [বাংলা ট্রিবিউন]




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD