৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল আগামী রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রকাশ করা হবে। এতে শূন্যপদের ৮ গুণ অথবা কমপক্ষে ২০ হাজার প্রার্থীকে পাস করানোর দাবি তুলেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাদের এ দাবি মেনে প্রার্থীদের পাস করানোর আবদারে ‘সায় নেই’ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি)।
পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমান জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমরা আগেই ঘোষণা করেছিলাম যে, ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। তবে তার আগেই ফল প্রকাশের চেষ্টা করেছে পিএসসি। কাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার ফল প্রকাশ সম্ভব হয়নি। এখন নির্ধারিত তারিখে ফল প্রকাশ করা হবে।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর ৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকাসহ দেশের আটটি বিভাগীয় শহরের ২৫৬টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা নেওয়া হয়। এতে অংশ নিতে আবেদন করেন ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৭৪৭ জন চাকরিপ্রার্থী। তবে পরীক্ষায় কত শতাংশ প্রার্থী অংশ নিয়েছেন, সে তথ্য জানায়নি পিএসসি।
এদিকে, ৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় বিজ্ঞপ্তিতে থাকা শূন্যপদের অন্তত ৮ গুণ প্রার্থীকে পাস করানোর দাবি করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এ নিয়ে গত ২৪ সেপ্টেম্বর পিএসসিতে স্মারকলিপি দেন তারা।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেছে, বিগত কয়েকটি বিসিএসে সুপারিশের সময় নানা জটিলতা দেখা গেছে। এতে বিসিএসে নিয়োগ কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। অনেক ক্ষেত্রে শূন্যপদ পূরণে যোগ্য প্রার্থী পেতে সংকটে পড়ছে পিএসসি। ৪৭তম বিসিএসের নিয়োগে স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রাখতে অন্তত ৮ গুণ প্রার্থীকে প্রিলিতে উত্তীর্ণ করানো সমীচীন হবে। সেটা সম্ভব না হলেও কমপক্ষে ২০ হাজার প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষায় সুযোগ দেওয়া উচিত হবে।
চাকরিপ্রার্থীরা স্মারকলিপিতে বিগত কয়েকটি বিসিএসের প্রিলিতে শূন্যপদের কতগুণ প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য উত্তীর্ণ করা হয়েছে, তাও উল্লেখ করেছে। তাতে দেখা যায়, ৪০তম বিসিএসে প্রায় ১১ গুণ, ৪১তম বিসিএসে প্রায় ১০ গুণ, ৪৩তম বিসিএসে প্রায় ৯ গুণ, ৪৪তম বিসিএসে প্রায় ৮ গুণ এবং ৪৬তম বিসিএসে ৭ গুণেরও বেশি প্রার্থীকে পাস করানো হয়।
এদিকে, বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী-ক্যাডার ও নন-ক্যাডার মিলিয়ে মোট তিন হাজার ৬৮৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। শূন্যপদের ৮ গুণ প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে হলে ২৯ হাজার ৫০৪ জনকে প্রিলিতে পাস করাতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘পিএসসির বিধিতে এ নিয়ে কিছু উল্লেখও নেই। কমিশন পরিস্থিতি বুঝে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।’
‘কখনো দেখা যায়, কাট মার্কস ০.৫০ বেশি ধরলে ১০ হাজারের জায়গায় ১৮ হাজার হয়ে যাচ্ছে। তখন তো এত প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষায় সুযোগ দেওয়ার অবস্থা থাকে না। সেজন্য কত প্রার্থীকে প্রিলিতে পাস করালে, শূন্যপদ পূরণে কোনো সংকট হবে না, তা বুঝে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন’ যোগ করেন পিএসসির এ মুখপাত্র।
২০২৪ সালের ২৮ নভেম্বর ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। ৪৭তম বিসিএসে মোট শূন্য ক্যাডার পদের সংখ্যা ৩ হাজার ৪৮৭। আর নন–ক্যাডার পদের সংখ্যা ২০১। এই বিসিএস থেকে মোট ৩ হাজার ৬৮৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।