উপদেষ্টা পরিষদের ৫২তম বৈঠকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ-২০২৫ এর সংশোধন প্রস্তাব পাশ হয়েছে। এর মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ সেবার মানবৃদ্ধি, এর রেগুলেশন এবং রাষ্ট্রের সার্ভেইলেন্স কাঠামোতে গঠনমূলক পরিবর্তন আনা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
এই সংশোধনের মধ্যে কিছু প্রস্তাব হচ্ছে-
ইন্টারনেট বা টেলিযোগাযোগ সেবা কখনোই বন্ধ করা যাবে না এরকম বিধান রাখা হয়েছে। ২০১০ সালের বিতর্কিত সংশোধনের কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে বিটিআরসির স্বাধীনতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির ক্ষমতা ও কার্যপরিধির মধ্যে ভারসাম্য আনা হয়েছে। আগে সকল লাইসেন্স ইস্যুর অনুমোদন মন্ত্রণালয় থেকে হলেও, এখন থেকে জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু লাইসেন্সে মন্ত্রণালয় ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টাডির ভিত্তিতে অনুমোদনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হবে ও অন্যান্য সকল লাইসেন্স ইস্যু করার এখতিয়ার বিটিআরসির কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও ডাক টেলিযোগাযোগ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির সভাপতিত্বে একটি ‘জবাবদিহিতা কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। লাইসেন্সের আবেদন থেকে শুরু করে সিদ্ধান্ত পর্যন্ত সময় কমানো হয়েছে। এছাড়াও পূর্বের আইনে বর্ণিত উচ্চ জরিমানা, রিকারিং জরিমানা কমানো হয়েছে, যা টেলিযোগাযোগ খাতকে বিনিয়োগবান্ধব করবে। এখন থেকে প্রতি চার মাসে বিটিআরসিকে শুনানি করতে হবে, তার ফলোআপ ওয়েবসাইটে রাখতে হবে এবং কনফ্লিন্ট অফ ইন্টারেস্ট রোধেও বিধান রয়েছে। সিম ও ডিভাইস রেজিস্ট্রেশনের তথ্য ব্যবহার করে কোনো নাগরিককে নজরদারি ব্য অযথা হয়রানি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ করা হয়েছে। ‘Speech Offence’ সম্পর্কিত নিবর্তনমূলক ধারা পরিবর্তন করে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ এর ধারাবাহিকতায় কেবল সহিংসতার আহ্বানকেই অপরাধের আওতাভুক্ত রাখা হয়েছে। টেলিযোগাযোগ সেবার ক্ষেত্রে আপীল এবং সালিশ বিষয়ক ধারা রাখা হয়েছে। সেন্টার ফর ইনফর্মেশন সাপোর্ট প্রতিষ্ঠা।
আইনানুগ ইন্টারসেপশনের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আধা-বিচারিক কাউন্সিল ও সংসদীয় তদারকির বিধান আনা হয়েছে। কাউন্সিলের নিকট বেআইনি ইন্টারসেপশন এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা যাবে। ইমেজ এবং ভয়েস প্রোটেকশন, সিম ডেটা এবং ডিভাইস ডেটা প্রোটেকশনের বিধান রাখা হয়েছে। এই আইনের অধীন সকল ব্যবস্থাপনা জাতিসংঘ, আইটিইউসহ আন্তর্জাতিক উত্তম অনুশীলনের সহিত সামঞ্জস্য থাকবে।