শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৩৯ অপরাহ্ন




৮ দলে টানাপোড়েন, সমঝোতা নিয়ে শঙ্কা

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৯:৫৪ pm
রাজনীতি Dhaka Metropolitan Police dmp ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপি রোড accident rash road যানজট রাস্তা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপি dhaka তল্লাশিচৌকি ঢাকা বিএনপির গাবতলী ঢাকামুখী বাস যানবাহন তল্লাশি পুলিশ ঢাকা প্রবেশমুখ Bangladesh Police বাংলাদেশ পুলিশ নয়াপল্টন রোড accident rash road যানজট রাস্তা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপি police vigilant পুলিশ অভিযান মোতায়েন bnp বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর Bangladesh Nationalist Party BNP ‎বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি বিএনপি গণসমাবেশ Bangladesh Nationalist Party BNP Mirza Fakhrul Islam Alamgir বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর police Panchagarh পঞ্চগড় panchagarch police bnp
file pic

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও ইসলামী ৮ দলের মধ্যে এখন টানাপোড়েন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। একসঙ্গে আন্দোলন, ঢাকায় বড় সমাবেশ এবং বিভাগীয় শহরগুলোতে কর্মসূচির মাধ্যমে শক্ত অবস্থান জানান দিলেও আসন ভাগাভাগি নিয়ে শুরু হয়েছে অস্বস্তি। প্রত্যেক দলই বেশি আসনের প্রত্যাশা করায় চূড়ান্ত সমঝোতা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এমন পরিস্থিতিতে প্রত্যাশিত আসন না পেলে কেউ কেউ আলাদা নির্বাচনে যাওয়ার ইঙ্গিতও দিচ্ছেন।

দলগুলোর একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, প্রত্যেক দলই নিজ নিজ রাজনৈতিক শক্তি ও সাংগঠনিক অবস্থান বিবেচনায় বেশি আসন প্রত্যাশা করছে। ফলে কে কতটি আসনে প্রার্থী দেবে এ নিয়ে সমঝোতা চূড়ান্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই আসন বণ্টনকে কেন্দ্র করেই জোটের ভেতরে অস্বস্তি ও অনাস্থার জন্ম নিচ্ছে।

সূত্র আরও জানায়, আলোচনার টেবিলে কেউ কেউ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, প্রত্যাশিত সংখ্যক আসন না পেলে তারা আলাদা নির্বাচন করার আভাস দিয়েছেন। এতে করে গত এক বছর ধরে আন্দোলন ও রাজনৈতিক ঐক্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

তবে জোটের শীর্ষ নেতারা প্রকাশ্যে এখনো ঐক্যের কথাই বলছেন। তাদের দাবি, আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান হবে এবং নির্বাচনের আগে কোনো দল সমঝোতা ভাঙবে না। যদিও ভেতরে ভেতরে দরকষাকষি ও চাপ বাড়তে থাকায় শেষ পর্যন্ত ঐক্য টিকে থাকবে কি না তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা জল্পনা চলছে।

দলগুলোর একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, প্রত্যেক দলই নিজ নিজ রাজনৈতিক শক্তি ও সাংগঠনিক অবস্থান বিবেচনায় বেশি আসন প্রত্যাশা করছে। ফলে কে কতটি আসনে প্রার্থী দেবে এ নিয়ে সমঝোতা চূড়ান্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই আসন বণ্টনকে কেন্দ্র করেই জোটের ভেতরে অস্বস্তি ও অনাস্থার জন্ম নিচ্ছে।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মহাসচিব জালালুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের ভিতর যাদের যে ন্যায্য প্রাপ্য, তার থেকে প্রস্তাব কম আসছে। তাই একটু ঝামেলা তৈরি হইছে। প্রত্যেক দলেরই একটা সম্মান আছে, চাহিদা আছে। তাদের ন্যায্য অধিকারটা নিশ্চিত করা দরকার। কাজ করতে গিয়েই সবার চাহিদার সম্মিলন হচ্ছে না।’

জালালউদ্দীন আহমেদ আরও বলেন, ‘আমি মনে করি জামায়াতে ইসলাম তো আমাদের মধ্যে বড় দল। তাদের এখানে একটু বেশি কনসিডার (বিবেচনা) করতে হবে। এবং তাদের উদারতাটাও বাড়াইতে হবে। তাহলে সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। আশা করছি দুই-একদিনের মধ্যে আমরা আলোচনা করে সমঝোতার আসন ঠিক করতে পারবো।’

খেলাফত মজলিশের নেতারা বলছেন, ২৭৬টি আসনে তাদের দলের প্রার্থী ঠিক করা আছে। বিভিন্ন আসনে হয়তো জামায়াত ও খেলাফত মজলিশের ভোটার কম বেশি হতে পারে। ৪০ আসনে নির্বাচন করতে চাইলেও বাকি ২০০ আসনে জামায়াতকে ভোট দেবেন খেলাফতের নেতাকর্মীরা।

‘আমি মনে করি জামায়াতে ইসলাম তো আমাদের মধ্যে বড় দল। তাদের এখানে একটু বেশি কনসিডার (বিবেচনা) করতে হবে। এবং তাদের উদারতাটাও বাড়াইতে হবে। তাহলে সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। আশা করছি দুই-একদিনের মধ্যে আমরা আলোচনা করে সমোঝতার আসন ঠিক করতে পারবো।’—জালালুদ্দিন আহমেদ, মহাসচিব, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ

খেলাফত মজলিশের মহাসচিব আহমদ আব্দুল কাদের বলেন, ‘কিছু টানাপোড়েন রয়েছে আমাদের মধ্যে। তবে আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। যেহুতু ঐক্য করেছি, সবাই ত্যাগ স্বীকার করেই সমঝোতা করবে। আর মনোনয়ন প্রত্যাহারের কিছু সময় দেওয়া রয়েছে, প্রত্যাহারের শেষ সময় পর্যন্ত আলোচনা চলবে।’

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান বলেন, আমরা আটটি দল আসন সমঝোতার কার্যক্রম মোটামুটি যখন গুছিয়ে এনেছিলাম, সেই সময় আরও কিছু দল আমাদের সঙ্গে একত্রিত হওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করে। তখন আসলে সবার চাহিদা আর প্রত্যাশা নিয়ে সংকট দেখা দেয়। তবে সবার মধ্য থেকে আবার কিছু কিছু আসন ছাড় দেওয়ার একটা নতুন বিষয় সামনে এসেছে।

তিনি বলেন, এটাই স্বাভাবিক যে, আট দল যখন এক হয় তখন একেকজনের একেক রকম চাওয়া-পাওয়া থাকবেই। তো সেই জায়গাটা সমন্বয় করে ৩০০-তে আসতে আমাদের সময় লাগছিল। এর মধ্যে আবার নতুন দলের চাহিদা এসেছে। তো এটিই বিলম্বের মূল কারণ। দেশ, জাতি ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের সবাইকে ছাড় দিতে হবে।

‘জামায়াতে ইসলামী সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেই ঐক্য ধরে রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু শুরু থেকে আমাদের যে অঙ্গীকার ছিল, সেখানে কিছু দলের অপ্রত্যাশিত চাহিদায় কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী প্রতিটি আসনে সবার আগে এবং নির্বাচনের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।’—নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের একজন সদস্য

আসন সমঝোতায় বনিবনা হচ্ছে না
৮ দলীয় বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আসন সমঝোতা নিয়ে গত নভেম্বর মাসের ২০ তারিখ থেকে আলোচনা চলছে। সব দলের প্রতিটি আসন নিয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা হয়েছে। আলোচনার টেবিলে ইসলামী আন্দোলন ১৫০ আসনের তালিকা দেয়, যদিও তারা ১০০ এর বেশি আসনে নির্বাচন করতে চায়। এছাড়া বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ৫০, খেলাফত মজলিস ৩০, খেলাফত আন্দোলন ২৫টি আসনে নির্বাচনের জন্য চাহিদা দেয়।

জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেই ঐক্য ধরে রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু শুরু থেকে আমাদের যে অঙ্গীকার ছিল, সেখানে কিছু দলের অপ্রত্যাশিত চাহিদায় কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী প্রতিটি আসনে সবার আগে এবং নির্বাচনের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।’

জামায়াতের ওই নেতা বলেন, জাতির স্বার্থে, ঐক্যের স্বার্থে আমরা আমাদের অনেক আসনে ভালো প্রার্থীকেও বসিয়ে জোট সঙ্গীদের দিচ্ছি। আমাদের আলোচনা এখনো চলমান। শিগগিরই এসব বিষয় সমাধান করে চূড়ান্ত প্রার্থী দেব।

‘আমাদের ঐক্য হলেও এখন কেউ হার্ডলাইনে (কঠোর অবস্থান) চলে যাচ্ছে। তাই সবার ছাড়ের মন মানসিকতা থাকতে হবে। ইসলামী আন্দোলন কখনোই অবাস্তবিক কোনো প্রত্যাশা করে না। যদি কোনো দিন আমাদের জোট ভেঙে যায়, তখন হয়তো ক্লিয়ার করব, যে কেন কি হইছে। আর সমঝোতা থেকে বের হলেও আমরা বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন করব না। ইতিমধ্যে আমাদের ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।’—মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউর, সহকারী মহাসচিব, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

৮ দল থেকে বের হওয়ার শঙ্কা চরমোনাইয়ের
ইসলামী আন্দোলন নেতারা জানিয়েছেন, ৩০০ আসনে নির্বাচন করার সক্ষমতা রয়েছে দলটির। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন, যুব আন্দোলনসহ কৃষকদের মধ্যেও দলটির সংগঠন আছে। আইনজীবীদের মধ্যে আছে, সব শ্রেণি- পেশার লোক আছে। সুতরাং দলটির নেতাকর্মীদের কিছু প্রত্যাশাও রয়েছে। এখন সমঝোতায় এসব বিবেচনা না করলে ভিন্ন চিন্তা করতে হবে।

এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, আমাদের সমঝোতা এখনো ভাঙেনি। মিডিয়া ভুলভাবে উপস্থাপন করছে। আমরা বিএনপির সঙ্গেও যাবো না। জামায়াতের সঙ্গে ভাঙলেও আমরা ইসলামী জোট করব।

‘কিছু টানাপোড়েন রয়েছে আমাদের মধ্যে। তবে আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। যেহুতু ঐক্য করেছি, সবাই ত্যাগ স্বীকার করেই সমঝোতা করবে। আর মনোনয়ন প্রত্যাহারের কিছু সময় দেওয়া রয়েছে, প্রত্যাহারের শেষ সময় পর্যন্ত আলোচনা চলবে।’—আহমদ আব্দুল কাদের, মহাসচিব, খেলাফত মজলিশ

তিনি বলেন, ‘আমাদের ঐক্য হলেও এখন কেউ হার্ডলাইনে (কঠোর অবস্থান) চলে যাচ্ছে। তাই সবার ছাড়ের মন মানসিকতা থাকতে হবে। ইসলামী আন্দোলন কখনোই অবাস্তবিক কোনো প্রত্যাশা করে না। যদি কোনো দিন আমাদের জোট ভেঙে যায়, তখন হয়তো ক্লিয়ার করব, যে কেন কি হইছে। আর সমঝোতা থেকে বের হলেও আমরা বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন করব না। ইতিমধ্যে আমাদের ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।’

তবে সমঝোতায় সংকট থাকলেও এখনো আলোচনার সুযোগ দেখছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটির সহকারী মহাসচিব শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, তবে আমরা এখনো চেষ্টা করতেছি, সবাই মিলে সুন্দরভাবে স্মুথলি (সাবলীলভাবে) সমঝোতার কাজটা যেন শেষ করা যায়। সমাধান হয়ে গেলে আগামী শনিবার কিংবা রোববারের মধ্যে সব দলে মিলে প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে দেবো। জাগো নিউজ




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD