কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচের মাধ্যমে ব্যাংক, মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (এমএফএস) এবং পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের (পিএসপি) মধ্যে আন্তঃলেনদেন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। এর ফলে বিকাশ, নগদ, এম ক্যাশ সহ যে কোনো মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) থেকে আরেক এমএফএসে টাকা পাঠানো যাবে। বর্তমানে ব্যাংক থেকে এমএফএসে লেনদেন করা যায়। তবে এমএফএস থেকে আরেক এমএফএসে টাকা পাঠানো যায় না।
আগামী ১লা নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় এই সেবাটি চালু হবে। এর মাধ্যমে দেশের আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থায় নতুন যুগের সূচনা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এই ব্যবস্থায় কত খরচ হবে তা–ও নির্ধারণ করে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করে সব ব্যাংক, এমএফএস ও পিএসপির প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশে নগদ অর্থ লেনদেন কমানোর জন্য এনপিএসবি অবকাঠামো ব্যবহার করে সব ব্যাংক, এমএফএস প্রতিষ্ঠান এবং লেনদেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আন্তলেনদেন চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামী ১লা নভেম্বর থেকে ব্যাংক, পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার ও এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো এই লেনদেন শুরু করবে।
খরচ কত পড়বে:
এই ব্যবস্থায় গ্রাহককে সর্বোচ্চ কত টাকা খরচ দিতে হবে, তা–ও নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বলা হয়েছে, ব্যাংক থেকে যেকোনো ব্যাংক, এমএফএস ও পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারকে এক হাজার টাকা পাঠালে গ্রাহককে ১ টাকা ৫০ পয়সা মাশুল গুনতে হবে। বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো সেবা থেকে যেকোনো এমএফএস, ব্যাংক ও পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারের হিসাবে এক হাজার টাকা পাঠালে খরচ দিতে হবে সাড়ে ৮ টাকা। পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার হিসাব থেকে যেকোনো ব্যাংক বা এমএফএসে টাকা পাঠালে প্রতি হাজারে খরচ দিতে হবে ২ টাকা।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় একই ধরনের সেবা চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ২০২০ সালের ২৭শে অক্টোবর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেবাটি চালুর কথা ছিল। তখন এ নিয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে শেষ পর্যন্ত সেবাটি আর চালু হয়নি। পরে সরকারি প্রকল্পের আওতায় বিনিময় অ্যাপস চালু হয়।
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ২০২২ সালের নভেম্বরে ‘বিনিময়’ নামে একটি আন্তঃলেনদেন প্ল্যাটফর্মের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। সরকারের আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অধীন এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক জানতে পারে, বিনিময় প্ল্যাটফর্মের প্রকৃত মালিক যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত পাঁচটি শেল কোম্পানি। যুক্তরাষ্ট্রের এসব কোম্পানির পেছনে জয় রয়েছেন বলে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তথ্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।