শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৯ অপরাহ্ন




হাতিরঝিলের বাণিজ্যিক স্থাপনা আপাতত উচ্ছেদ হচ্ছে না

হাতিরঝিলের বাণিজ্যিক স্থাপনা আপাতত উচ্ছেদ হচ্ছে না: হাতিরঝিলের বাণিজ্যিক স্থাপনা আপাতত উচ্ছেদ হচ্ছে না

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০২২ ১১:১৪ am
hatirjeel Hatirjheel হাতিরঝিল
file pic

হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ী প্রকল্পে সব ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদসহ ৪ দফা নির্দেশনা ও ৯ দফা সুপারিশ করে হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছে আপিল বিভাগ।

এর ফলে বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদ আপাতত হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।

আদালতে রাজউকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ব্যারিস্টার ইমাম হাসান। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

আইনজীবী ইমাম হাসান বলেন, ‘আমরা হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করি। আদালত শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন। এখন লিভ টু আপিল শুনানির জন্য তালিকায় আসলে শুনানি হবে।’

হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ী প্রকল্পে সব ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদসহ ৪ দফা নির্দেশনা ও ৯ দফা সুপারিশসংবলিত হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে গত ১৯ জুন আবেদন করে রাজউক।

গত ২৪ মে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে।

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৫৫ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়। পরে এই রায় স্থগিত চেয়ে লিভ টু আপিল করে রাজউক।

রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলে, ‘রাজধানীর হাতিরঝিলের পানি এবং এর নজরকাড়া সৌন্দর্য অমূল্য সম্পদ। এ অমূল্য সম্পদকে কোনোরূপ ধ্বংস বা ক্ষতি করা যাবে না। প্রতিটি ফোঁটা পানি অতি মূল্যবান। পানির চেয়ে তথা সুপেয় পানির চেয়ে মূল্যবান আর কোনো সম্পদ এ পৃথিবীতে নেই। সুতরাং প্রতিটি ফোঁটা পানির দূষণ প্রতিরোধ করা একান্ত আবশ্যক।’

হাইকোর্টের রায়ে হাতিরঝিল সম্পর্কে বলা হয়, হাতিরঝিলসহ তেজগাঁও এলাকায় অনেক ভূ-সম্পত্তি ভাওয়াল রাজার এস্টেটের অন্তর্ভুক্ত ছিল। রাজার হাতির পাল এই ঝিলে স্নান করত এবং জলে বিচরণ করত বলে কালের পরিক্রমায় এর নাম হয় ‘হাতিরঝিল’।

বেগুনবাড়ী খালসহ হাতিরঝিল প্রকল্পটি ২০১৩ সালের ২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। ১ হাজার ৯৭১.৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০২ একর জমির ওপর এ প্রকল্পটি প্রতিষ্ঠিত।

প্রকল্প এলাকার ১৬ কিলোমিটার রাস্তায় কোনো বাস অথবা মিনিবাস চলাচলের অনুমতি ছিল না। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এক সভায় অনুমোদিত লে-আউটে প্রস্তাবিত ওয়াকওয়ে ও রোডওয়ে অ্যালাইনমেন্ট ছাড়া অন্য কিছু ছিল না।

হাইকোর্টের রায়ে হাতিরঝিলের পানি এবং এর নান্দনিক সৌন্দর্য ও এই জাতীয় সম্পত্তি সংরক্ষণ ও উন্নয়নে চার দফা নির্দেশনা দেয়া হয়।

১. সংবিধান, পরিবেশ আইন, পানি আইন এবং তুরাগ নদসংক্রান্ত রায় অনুযায়ী রাজধানী ঢাকার ফুসফুস বেগুনবাড়ী খালসহ হাতিরঝিল এলাকা, যা ‘হাতিরঝিল’ নামে পরিচিত পাবলিক ট্রাস্ট প্রপার্টি তথা জাতীয় সম্পত্তি।

২. হাতিরঝিল এলাকায় হোটেল, রেস্তোরাঁসহ সব ধরনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ এবং নির্মাণ সংবিধান, পরিবেশ আইন, পানি আইন এবং তুরাগ নদের রায় অনুযায়ী বেআইনি ও অবৈধ।

৩. হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় বরাদ্দ করা সব হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান অবৈধ ও এখতিয়ারবহির্ভূত মর্মে এসব বরাদ্দ বাতিল ঘোষণা করা হলো।

৪. রায়ের অনুলিপি প্রাপ্তির পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে সব হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদের জন্য প্রতিপক্ষদের (রিটের বিবাদীরা) নির্দেশ দেয়া হলো।

এ ছাড়া আদালত হাতিরঝিলের বিষয়ে ৯ দফা সুপারিশসহ পরামর্শ দেয়।

হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ী প্রকল্পকে পাবলিক ট্রাস্ট (জনগণের সম্পত্তি) ঘোষণা করে গত বছরের ৩০ জুন রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট। এ প্রকল্পে লে-আউট পরিকল্পনা নির্দেশনার বাইরে কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধে রাজউকের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) হাইকোর্টে রিট করে।

ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর রুল জারি করে হাইকোর্ট। এরপর ২০২১ সালের ৩০ জুন ওই রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেয়া হয়।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD