স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে এখন পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৭০৮ জন এইডস রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তবে দেশে মোট এইডস রোগীর সংখ্যা ১৪ হাজারের বেশি বলে ধারণা করা হয়। অর্থাৎ প্রায় চার হাজার রোগী চিকিৎসার বাইরে আছেন। তারা নিজেদের মৃত্যুঝুঁকি বাড়ানোর পাশাপাশি অন্যদেরও ঝুঁকিতে ফেলছেন। তাদের প্রতি আহ্বান জানাবো তারা যেন এগিয়ে আসেন। কারণ তারা শনাক্ত না হলে তাদের পরিবারই সবার আগে ঝুঁকিতে থাকবেন।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে এক বছরে মরণব্যাধি এইডসে আক্রান্ত হয়ে ২৩২ জন মারা গেছেন। ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত দেশে এইডসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪৭ জন। এর মাঝে মারা গেছেন ২৩২ জন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে এইডসে সংক্রমণ হার দশমিক শূন্য এক শতাংশ। ২০৩০ সালের মধ্যে তা শূন্যে নামিয়ে আনতে চাই। এ জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সব রোগীর পরীক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি জেলা-উপজেলা হাসপাতালে এইডস পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখতে হবে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে।
পরিচ্ছন্ন জীবন ও সচেতনতার মাধ্যমে এইচআইভি ও এইডস শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব বলে জানিয়েছেন জাহিদ মালেক। এ লক্ষ্যে পরীক্ষা নিশ্চিতে প্রতিটি জেলা-উপজেলায় এইচআইভি পরীক্ষা কেন্দ্র চালু করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
সামাজিক স্টিগমা ছেড়ে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে এইডস রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। সে তুলনায় বাংলাদেশে রোগীর সংখ্যা কম। আমরা তা ধরে রাখতে চাই। দেশে এইডসের আধুনিক চিকিৎসা রয়েছে। আমাদের দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে এইডসের চিকিৎসা দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে সব ধরনের গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়। তাই সামাজিক লজ্জাবোধের জন্য চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হবেন না। এইডস নিয়ে সব সামাজিক স্টিগমা দূর করতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, এইডসে আক্রান্তদের একটা বড় অংশ মধ্যপ্রাচ্য ফেরত শ্রমিক। এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে আরও উদ্যোগী হতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা এলডিজি ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। এর আওতায় এইচআইভি এইডস প্রতিরোধে বদ্ধপরিকর। দেশে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার যৌথ উদ্যোগে এইচআইভি প্রতিরোধের কাজ চলমান। এটি নিয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। তাহলেই আমাদের লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (এনডিসি) ডা. আশরাফী আহমেদ, জাতিসংঘের প্রতিনিধি রাজেন্দ্র বোহরা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের এইডস ও এসটিডি প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর ডা. খুরশীদ আলম।