বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন




খরচ আর ঝুঁকি কম ছাগল পালনে

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ৮:১৮ pm
Goat cheese Goat meat Capra aegagrus hircus goat domestic goat domesticated species goat-antelope typically kept as livestock wild goat animal family Bovidae tribe Caprini sheep ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল বাংলার কালো ছাগল পালন গরিবের গাভী খাসি ছাগল ছাগল চাষ রাম ছাগল Goat cheese Goat meat Capra aegagrus hircus goat domestic goat domesticated species goat-antelope typically kept as livestock wild goat animal family Bovidae tribe Caprini sheep ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল বাংলার কালো ছাগল পালন গরিবের গাভী খাসি ছাগল ছাগল চাষ রাম ছাগল goat ছাগল goat ছাগল
file pic

কথায় বলে ‘ছাগলে কি না খায়।’ বাংলার কালো ছাগলের ক্ষেত্রে কথাটা একেবারে ঠিক। মাঠে ছেড়ে পুষলে ছাগল তার খাবারের ৭০% জোগাড় করে নেয়। সঙ্গে অল্প দানা খাবার দিলেই যথেষ্ট। অল্প জায়গা লাগে। স্বল্প মূলধন। রোগব্যাধি কম হওয়ায় ঝুঁকি কম। সুস্বাদু, পুষ্টিকর মাংসের জন্য চাহিদা বেশি। ছাগলের চামড়া চর্মশিল্পের অন্যতম কাঁচামাল ও মল-মূত্র উন্নত মানের জৈব সার। সব মিলিয়ে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে খাবার, পরিচর্যা, রোগ প্রতিরোধ ও প্রজনন করালে ছাগল পালনে লাভ সুনিশ্চিত।

ভারতে ছাগলের প্রায় কুড়ি রকমের প্রজাতি আছে। এর মধ্যে কোনওটি মাংস উৎপাদক, কোনওটি দুধ। পশ্চিমবঙ্গের কালো ছাগল প্রজনন ক্ষমতা, মাংস ও চামড়ার জন্য পৃথিবী বিখ্যাত। এদের মাংস সর্বোৎকৃষ্ট। পৃথিবী বিখ্যাত ‘মরক্কো চামড়া’ এই জাতের ছাগল থেকে পাওয়া যায়। সঠিক সময়ে প্রজননে এরা দু’বছরে গড়ে তিন বার বাচ্চা দেয় এবং প্রতি বারে ২-৪টি শাবক প্রসব করে। বাংলা স্ত্রী ছাগল ১০ মাস ও পুরুষ ছাগল ১২ মাস বয়সে প্রজননযোগ্য হয়। সুস্থ প্রজননের জন্য ১০টি স্ত্রী ছাগল পিছু একটি পুরুষ ছাগল রাখা প্রয়োজন।

ছাগল পালনের জন্য আহামরি কোনও বন্দোবস্তের প্রয়োজন না হলেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, শুকনো ও স্বাভাবিক আলো-বাতাসযুক্ত থাকার জায়গা দরকার। ব্যবসায়িক ভিত্তিতে ছাগল পালন করতে চাইলে বয়স অনুযায়ী বাচ্চা ছাগল, স্ত্রী ছাগল, পাঁঠা, গর্ভবতী ছাগল, প্রসব ঘর, দুধের জন্য ঘর ও অসুস্থদের জন্য আলাদা করে ঘর খামারে তৈরি করতে হবে।

বাচ্চা জন্মানোর পর নাক, মুখ ও শরীরের অন্যান্য অংশ থেকে শ্লেষ্মা পরিষ্কার করতে হবে এবং নাভিরজ্জু ২ ইঞ্চি রেখে সুতো দিয়ে বেঁধে জীবাণুমুক্ত ব্লেড দিয়ে কাটতে হবে ও গোড়ায় টিংচার আয়োডিন লাগাতে হবে। জীবাণুনাশক দিয়ে মা ছাগলের বাঁট ও শরীরের অন্যান্য অংশ পরিষ্কার করতে হবে।

৩-৫ দিন বয়স পর্যন্ত বাচ্চাদের গাঁজলা দুধ খাওয়ানো প্রয়োজন। জন্মের পর প্রথম দু’সপ্তাহ বাচ্চা মায়ের দুধ খাবে এবং তারপর কচি ঘাস-পাতা ও দানা খাবার খাওয়াতে হবে। এভাবে দু’মাস চলবে। বাড়ন্ত ছাগলকে বেঁধে পালন করলে দৈনিক ২-৩ কেজি সবুজ ঘাস ও ৫০-১০০ গ্রাম দানাখাদ্য (ভুট্টার গুঁড়ো, খুদের চাল, ছোলার গুঁড়ো, বাদাম, সর্ষের খোল, গমের ভুসি, চালের কুঁড়ো, ভিটামিন, লবন ইত্যাদি) দিতে হবে। গর্ভবতী ছাগলকে শেষ দু’মাস প্রতি দিন ২০০ গ্রাম দানাখাবার এবং শেষ সপ্তাহে দানাখাদ্য কমিয়ে সবুজ ঘাস বাড়াতে হবে। পাঁঠাকে ছেড়ে পুষলে আলাদা করে সবুজ ঘাস খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই। তবে প্রজননের সময় সঙ্গে দৈনিক ২০০ গ্রাম দানাজাতীয় সুষম খাদ্য দেওয়া প্রয়োজন। ইউরিয়া মিশ্রিত খড় খাওয়ানো যায়। পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর ঘাস যেমন বারসীম, লুসার্ন, জোয়ার, ভুট্টা, প্যারা, নেপিয়ার খাওয়ালে দানাখাদ্যের প্রয়োজন হয় না। দুগ্ধবতী ছাগলকে অবশ্য দানাখাদ্য দিতেই হবে।

খাবার দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় টিকাকরণ ও কৃমির ওষুধ খাওয়াতে হবে। সাত দিন বয়সে প্রথম ওষুধ। তিন মাস পর্যন্ত পাইপারেজিন হেক্সাহাইড্রেট ১ মিলি প্রতি কেজি ওজনের জন্য প্রতি মাসে এক বার দিতে হবে। চার মাস বয়সে অ্যালবেন্ডাজল বা মেবেন্ডাজল ১০ মিলিগ্রাম প্রতি কেজি ওজনে প্রয়োগ করুন। ৫ মাস বয়সে অক্সিক্লোজেনাইড ১০ মিলি গ্রাম প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের হিসাবে প্রয়োগ করতে হবে। এরপর থেকে প্রতি দু’মাস অন্তর উপরোক্ত ক্রম অনুযায়ী ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়াতে হবে। প্রতিবার কৃমিনাশক ওষুধ প্রয়োগের পরে ভিটামিন ও খনিজ লবনের মিশ্রণ সহযোগে হালকা খাবার দিন। গুড় মিশ্রিত ফ্যান ভাত ভাল কাজ দিতে পারে।

বি.দ্র: খাসি করা ছাগলের বৃদ্ধি ও মাংসের স্বাদ উৎকৃষ্ট হয়। তাই রক্তপাতহীন ভাবে বার্ডিজো সাঁড়াশির সাহায্যে এক মাস বয়সের ছাগলে খাসিকরণ করা যায়।

সৌজন্য: দক্ষিণ দিনাজপুর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র, ভারত।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD