বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন




‘নিজ দেশে শরণার্থী হয়ে থাকতে হলে আমরা যাবো না’

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: শনিবার, ৬ মে, ২০২৩ ১১:১২ am
মিয়ানমার বার্মা উখিয়া Rohingya Refugee people Ethnic group Myanmar stateless Rakhine রাখাইন রোহিঙ্গা শরণার্থী জনগণ সংকট মিয়ানমার উচ্ছেদ বাস্ত্যুচ্যুত ক্যাম্প উখিয়া নাগরিক
file pic

মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন ইস্যুতে সেখানকার ‘পরিবেশ-পরিস্থিতি’ দেখে ফিরে এসেছে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধি দল।

শুক্রবার (৫ মে) সন্ধ্যা ৬ টার দিকে তারা টেকনাফ জেটি ঘাটে পৌঁছায়।

এসময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রাখাইন ঘুরে আসা রোহিঙ্গা মো. সেলিম। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে পৌঁছার পর তাদের তৈরি করা ক্যাম্পে আমাদের নিয়ে যাওয়া হয়। মিয়ানমার প্রতিনিধিদের কাছে জানতে পারি, এসব ক্যাম্প আমাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। প্রত্যাবাসন হলে আমাদের এসব ক্যাম্পে থাকতে হবে। আমরা সেই ক্যাম্পগুলোতে থাকতে রাজি হইনি। কারণ আমরা সে দেশের নাগরিক। ক্যাম্পে কেন আমাদের থাকতে হবে?’

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে ৩৫ জাতি নাগরিক সুবিধা পেলে আমরা কেন পাবো না? সকল সুযোগ সুবিধাসহ নাগরিকত্ব কার্ড পেলে আমরা মিয়ানমার ফিরে যাবো অন্যথায় যাবো না।’

মিয়ানমার প্রতিনিধিরা সেলিমদের নাগরিকত্ব কার্ড সরবরাহ করবে না বলে সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন বলে উল্লেখ করে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদল। আর পূর্ণ নাগরিকত্ব ছাড়া মিয়ানমার যাওয়া মানে অতিথি হয়ে থাকা। এমনটি হলে তারা যেকোনো মুহূর্তে আবার রোহিঙ্গাদের বের করে দিতে পারে বলে মন্তব্য করেন রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের সদস্য মো. সেলিম।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে আসা মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের কাছে আমরা প্রস্তাব রেখেছিলাম যারা প্রত্যাবাসিত হবেন তাদের জন্য প্রত্যাবাসন পরবর্তী কী অ্যারেঞ্জমেন্ট রয়েছে তা যেনো রোহিঙ্গাদের স্বচক্ষে দেখানো হয়। তারা আমাদের সে প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন এবং তাদের প্রস্তাবে আমরা শুক্রবার সকালে ২০ সদস্যের রোহিঙ্গা দল নিয়ে মিয়ানমারের মংডু টাউনশিপে যাই। সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য তৈরি করা ঘরগুলো আমাদের ঘুরিয়ে দেখানো হয়। আমাদের সঙ্গে দেখেছেন রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরাও।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের মন্দ লাগেনি। সবকিছু গোছানো মনে হয়েছে। তবে, মূলত এগুলো বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্যই। আমরা তাদের প্রত্যাবাসনের আয়োজক মাত্র। যারা প্রত্যাবাসিত হবেন তাদের এগুলো দেখানোই ছিলো আমাদের মূল লক্ষ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমার প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা দলকে এসব বিষয়ে ব্রিফিং করেছেন। তারা (রোহিঙ্গারা) কী দেখেছেন তারাই বলতে পারবেন। পরবর্তী পদক্ষেপ গণমাধ্যমকে অবশ্যই জানানো হবে।’

রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের বক্তব্য—নাগরিকত্ব ছাড়া সেখানেও আশ্রিত জীবনে তারা যাবেন না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরআরআরসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘এটা দীর্ঘ অর্ধশত বছর ধরে চলে আসা সমস্যা। এটাতো আমরা দু-একদিনে সমাধান করতে পারবো না। আমরাতো ২০ জনকে সঙ্গে নিয়েছিলাম। একজন কী বলেছেন সেটা গণ্য নয়, সবার মতামত আমরা জানবো।’

এর আগে, একই দিন সকাল সাড়ে ৯টায় টেকনাফের নাফ নদীর জেটি ঘাট হয়ে প্রতিনিধিদলটি মিয়ানমারের মংডু শহরের উদ্দেশ্যে টেকনাফ ত্যাগ করেন বলে জানান অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছুদ্দৌজা নয়ন।

প্রতিনিধিদলে ৩ নারীসহ ২০ জন রোহিঙ্গা, একজন অনুবাদক ও ৬ জন বিভিন্ন দপ্তরের বাংলাদেশি কর্মকর্তা এবং একজন দোভাষী ছিলেন। ২৭ জনের প্রতিনিধি দলটি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের আইডিপি ক্যাম্পের পরিস্থিতি দেখার পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুনরায় টেকনাফ জেটি ঘাটে ফিরে আসে।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD