এ বছরের মাঝামাঝি থেকে চলতি ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত শোবিজ ক্রমাগতভাবে কেবল অনিশ্চয়তার মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। সিনেমা, সংগীত কিংবা নাটক- কোনোটির অবস্থাই স্থিতিশীল নয়।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সিনেমা মুক্তি দিতে চাচ্ছেন না পরিচালক-প্রযোজকরা। কোরবানির ঈদের পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশের সিনেমার অবস্থা সর্বোচ্চ নাজুক পরিস্থিতিতে রয়েছে। এমনিতেই হলের সংখ্যা কম। এর মধ্যে আবার একাধিক হল বন্ধও হয়েছে। আরও কিছু হল বন্ধের পথে।
অন্যদিকে, গানের অবস্থাও সুবিধাজনক নয়। বিশেষ করে বেশ কয়েকটি কনসার্ট বাতিল করা হয়েছে। সর্বশেষ পাকিস্তানি ব্যান্ড কাবিশের কনসার্টও স্থগিত হয়েছে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, গত কয়েক মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে গানের অনুষ্ঠান করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছেন আয়োজকরা। বিভিন্ন শিল্পীর শো বাতিল হয়েছে। এখনো বিভিন্ন স্থানে একদল গানের অনুষ্ঠান করতে দিতে চায় না। এ কারণে নিরাপত্তার কথা ভেবে অনেক শিল্পী নিজেরাও উন্মুক্ত কনসার্টে অংশ নিতে চাচ্ছেন না।
এ ছাড়া, বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন গান প্রকাশ থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো। এই যখন সিনেমা ও গানের অবস্থা, নাটকের অবস্থা তার থেকে খুব একটা ভালো নয়। অনেক প্রযোজকই নাটক প্রযোজনা থেকে মুখ সরিয়ে নিয়েছেন। ব্যবসায়িক মন্দার কারণেই তারা নাটক প্রযোজনা করবেন না বলেও জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, অনেক স্থানে নাটকের শুটিং করতে গিয়েও বাধার ঘটনা ঘটেছে। যার কারণে এখন প্রযোজক-পরিচালকরা হাউজের ভেতরেই নাটকের শুটিংয়ের জন্য নিরাপদ বলে মনে করছেন।
এদিকে, বড় বাজেটের সিনেমাগুলো আগামী ঈদের আগে মুক্তি পাবে না বলেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে। শাকিব খানের ‘সোলজার’ চলতি ডিসেম্বরে মুক্তির আওয়াজ উঠলেও সেটি আর হচ্ছে না বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। দেশের সিনেমার বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এটা আসলে অপ্রত্যাশিত। আমাদের এখানেও দর্শক উপস্থিতি একেবারেই কম। মোটামুটি সারা দেশের অবস্থাই একরকম। এর একটি কারণ যেমন- দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি, আরেকটি হলো- বড় বাজেটের দেশি ছবিগুলো ঈদের বাইরে মুক্তি না দেয়া। তবে যত দ্রুত এ অবস্থার অবসান হবে ততই চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের জন্য মঙ্গল।
এদিকে, গানের অনুষ্ঠানে বাধা প্রসঙ্গে কণ্ঠশিল্পী সাজিয়া সুলতানা পুতুল বলেন, নিরাপত্তা ইস্যুটা অবশ্যই মাথায় রাখতে হয়। এ কারণে যেসব জায়গায় এখন নিরাপত্তার অভাব মনে হয়, সেখানে শো করছি না। এটা শিল্পীদের জন্য খুবই কষ্টের একটি বিষয়। আমি বিশ্বাস করি, দ্রুতই এ পরিস্থিতির অবসান হবে। না হয় শিল্পী-মিউজিশিয়ানদের অনিশ্চয়তা বাড়তেই থাকবে।
অন্যদিকে, নাটকের বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে নির্মাতা রুবেল হাসান বলেন, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে। আমি মনে করি সবারই দায়িত্ব রয়েছে। দেশের পরিস্থিতি আরও স্থিতিশীল হলে যেকোনো নির্মাণ ও তার মুক্তির বিষয়ে পরিচালক-প্রযোজকরা আরও উৎসাহী হবেন।