রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৭ পূর্বাহ্ন




এমবাপ্পে, ফুটবলের নয়া জাদুকর

এমবাপ্পে, ফুটবলের নয়া জাদুকর

মতিউর রহমান চৌধুরী
  • প্রকাশের সময়: সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ১০:৩৪ am
France Eiffel tower flag ফ্রান্স পতাকা আইফেল টাওয়ার French footballer Kylian Mbappé Lottin ফরাসি ফ্রেঞ্চ তারকা কিলিয়ান এমবাপে embappe কিলিয়ান এমবাপে
file pic

কিলিয়ান এমবাপ্পে। বয়স মাত্র তেইশ। জন্ম প্যারিসে। মা ফাইজা লামারি, বাবা উইলফ্রাইড এমবাপ্পে। দু’জন দুই ধর্মে বিশ্বাসী। তবে এমবাপ্পে বাবার ধর্মই অনুসরণ করেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, বাবা-মা দুই দেশের নাগরিক ছিলেন। প্রেমের টানে একত্রিত হয়েছেন। এখন তারা ফরাসি নাগরিক। এমবাপ্পে একের পর এক রেকর্ড ভাঙতে শুরু করেছেন।

ফরাসি এই তারকা এত অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বকাপে পেলে, ম্যারাডোনার রেকর্ড ভেঙে ফেলেছেন। মেসির রেকর্ডও ছুঁতে চলেছেন। ছাড়িয়ে গেছেন দিয়েগো ম্যারাডোনা ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে। ১৯৫৮ সনে পেলের পর থেকে বিশ্বকাপে নকআউট পর্বে তিনি হচ্ছেন পাঁচটি গোল করার সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়। সর্বশেষ পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৬ গজ দূর থেকে মনে হলো একটি রকেট নিক্ষেপ করেছেন গোলে। তার প্রশংসা চারদিকে। ফরাসিরা গর্ব করে বলেন, আমাদের এমবাপ্পে আছে। হাইস্কুলের গণ্ডি পার হয়েই আলোচনার শীর্ষে চলে আসেন। ফুটবল দুনিয়া যেন তাকে বরণ করার জন্য প্রস্তুতই ছিল। উনিশ বছরে ফ্রান্স জাতীয় দলে সুযোগ পান। এরপর যোগ দেন পিএসজিতে, ১৮০ মিলিয়ন ইউরোতে। তার সতীর্থ হচ্ছেন মেসি ও নেইমার। তার শুরুটা হয়েছিল এএস বন্ডি থেকে।সেখানেই তিনি স্কিল ডেভেলপ করেন। কয়েক বছর সেখানেই কাটান।তার বাবাও একজন খেলোয়াড় এবং কোচ ছিলেন। এএস বন্ডির সভাপতি আতমানে এরুচে বলেছেন, এমবাপ্পে সবসময় এখানেই থাকতো। আমরা যখন গেম খেলতাম তখন সে বল নিয়ে খেলা করতো। তখন তার বয়স ছিল মাত্র দু’ বছর। আমরা যখন দলের সাথে আলোচনা করতাম সে সব শুনতো। ফুটবল নিয়ে ভাবতো। সুযোগ পেলেই প্লে-স্টেশনে ফুটবল গেম খেলতো। শুধু তাই নয়, তার বসার ঘরকেও ফুটবল মাঠে পরিণত করেছিল।
বলা হয়ে থাকে, ফুটবলের মধ্যেই তার জন্ম। তার ডিব্লিং ক্যাপাসিটি অবিস্মরণীয়। ফুটবলে নতুন চমক। কেউ কেউ বলে থাকেন, এমবাপ্পে হচ্ছেন এই জমানার ফুটবলের নতুন জাদুকর। তার রক্ত-মাংসে, চিন্তা-চেতনায় ফুটবল। বয়স কম, দমও অফুরান। এমবাপ্পে বল পেলে ধরে নেয়া হয় কিছু একটা ঘটবেই। এই বিশ্বকাপে এপর্যন্ত পাঁচটি গোল করে শীর্ষে রয়েছেন। গোল্ডেন বুট পাবার দৌড়ে এগিয়ে। ফ্রান্সের হয়ে গত ১৪ ম্যাচে ১৬টি গোল করেছেন। এ পর্যন্ত ৬৩টি খেলায় ৩০টি গোল করেছেন। ম্যাজিকম্যান এমবাপ্পে ইতিমধ্যেই গোলমেশিন হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন ফুটবল দুনিয়ায়। পেশাদার এমবাপ্পে শ্রেষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছেন। কথা বলতে চান কম। এই বিশ্বকাপে বহুবার সাংবাদিকরা তার মুখোমুখি হয়েছেন। এমনকি পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিজয়ের নায়ক হওয়ার পরও কথা বলতে চাননি। বলেছেন, খেলা চলাকালে কথা বলে কী লাভ! আমার লক্ষ্য বিশ্বকাপ। আমরা চ্যাম্পিয়ন আছি। আবারও হতে চাই। এই লক্ষ্য নিয়েই কাতারে এসেছি। বলতে পারেন আমার দ্বিতীয় হোম কাতার। কারণ আমি পিএসজিতে খেলি। আর পিএসজি’র মালিক হচ্ছে কাতার। তাই ঐতিহাসিকভাবেই সম্পর্কটা গভীর এবং চমৎকার। যদিও মাঝখানে খবর রটেছিল এই সুপারস্টারের সঙ্গে পিএসজির বনিবনা হচ্ছে না। যে কোনো সময় দলত্যাগ করতে পারেন। যোগ দিতে পারেন বিলেতের কোনো ক্লাবে।

যাইহোক, কোয়ার্টার ফাইনালে ইংলিশদের মুখোমুখি হবে তার দল। কঠিন লড়াই। বৃটিশ গণমাধ্যম সতর্ক। এই লড়াই নিয়ে তারা এখনই কোনো মন্তব্য করতে রাজি নয়। কোনো কোনো গণমাধ্যম বলছে, ফ্রান্স বিশ্বকাপ জয়ী। শক্তিতে তারা অনেক এগিয়ে ।এরমধ্যে এমবাপ্পে হচ্ছেন তাদের বাড়তি শক্তি। তবে ইংল্যান্ডকে গণনার বাইরে রাখলে চলবে না। মনে রাখতে হবে-দলটি এই বিশ্বকাপে এখনো কোনো খেলায় পরাজিত হয়নি। বারোটি গোল দিয়েছে । এমবাপ্পে ফ্রান্সকে আলোকিত করেছেন। পৌঁছে দিয়েছেন ফুটবলের অন্য এক জগতে। এমবাপ্পের বয়স কম হলেও কথা বলার সময় মনে হয়, চল্লিশোর্ধ্ব একজন ব্যক্তি। তাইতো অনেকেই বলেন, এটাই হচ্ছে এমবাপ্পের ব্যক্তিত্ব।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD