পটুয়াখালীর পায়রায় কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে অবশেষে ঢাকায় এলো বিদ্যুৎ। এতে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরো সক্ষমতায় চালানো সম্ভব হচ্ছে।
আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন চালুর মাধ্যমে বৃহস্পতিবার কলাপাড়ার বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের পুরো বিদ্যুৎই জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। বেলা ১ টা ৪০ মিনিটের দিকে গোপালগঞ্জ গ্রিড সাবস্টেশন প্রান্ত থেকে ৪০০ কেভি ভোল্টেজ দিয়ে লাইনটি চালু করা হয়।
লাইনটি সফলভাবে চার্জ করায় শিগগির সব ধরনের কারিগরি প্রস্তুতি ও মূল্যায়ন শেষে এই লাইনে বিদ্যুৎ সঞ্চালন (লোড ফ্লো) শুরু করা হবে।
কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসে ২০২০ সালের জুনে। একই বছরের ডিসেম্বরে উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হয়ে ওঠে দ্বিতীয় ইউনিটও। কিন্তু সঞ্চালন অবকাঠামো প্রস্তুত না হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে কাজে লাগানো যাচ্ছিল না ইউনিটটিকে।
সঞ্চালন লাইন নির্মাণ হয়ে যাওয়ায় এই বিদ্যুৎ যোগ হওয়ায় দুই দিক দিয়ে কমবে চাপ।
প্রথমত. শীতের আগে রাজধানীতে এক হাজার মেগাওয়াটের যে বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা যায়, তার মধ্যে ছয় শ মেগাওয়াটের মতো আসবে এই কেন্দ্র থেকে। ফলে লোডশেডিংয়ের সমস্যা থাকবে না এতটা।
দ্বিতীয়ত. সঞ্চালন লাইনের অভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট বসিয়ে রাখার কারণে ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে পরিশোধ করতে হচ্ছিল টাকা। সেই অর্থের চাপও কমবে সরকারের।
কিন্তু সে লাইনের কাজ যথাসময়ে শেষ করতে পারেনি পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)।
মোট সক্ষমতার অর্ধেক ব্যবহূত হওয়ায় বাংলাদেশ-চীন যৌথ মালিকানার কোম্পানিকে এতদিন বসিয়ে রেখে অর্থ দিতে হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগকে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন সক্ষমতার বিষয়টি মাথায় রেখেই এটিকে যথাসময়ে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করতে সঞ্চালন লাইন নির্মাণের প্রকল্পও হাতে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু নানা জটিলতায় তা পিছিয়ে যায়। পরে পদ্মা সেতু নির্মাণের হ্যামার দিয়ে বিদ্যুতের টাওয়ার নির্মাণ করা হয়।
গোপালগঞ্জ থেকে আমিনবাজার গ্রিড সাবস্টেশন পর্যন্ত লাইনটির দৈর্ঘ্য ৮২ দশমিক ৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে সাড়ে সাত কিলোমিটার পদ্মা নদীর বুকে।
গোপালগঞ্জ থেকে আমিনবাজার লাইনটিতে মোট ২২৬টি টাওয়ার রয়েছে। এর ১১টি নির্মাণ হয়েছে নদীতে এবং নদীর দুপ্রান্তে।