পাকিস্তানি শাসকদের শোষণে-নিপীড়নে নিষ্পেষিত ও বিধ্বস্ত এক অর্থনীতি নিয়ে দেশ গড়ার কাজ শুরু করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বহু চড়াই-উৎরাই পার করে সেই দেশটি এখন শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে। এক সময় ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলা হতো যে বাংলাদেশকে, স্বাধীনতার ৫২ বছর পর সেই দেশটিই এখন বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোলমডেল।
বিশ্বের নানা প্রান্তের গবেষক-বিশ্লেষকদের পাশাপাশি অর্থনৈতিক চালচিত্র পর্যবেক্ষণকারী নানা প্রতিষ্ঠানের অভিমত, জন্মের ৫২ বছরের মধ্যেই উন্নয়নের দুর্বার গতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। গত দুই দশকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা সামাজিক উন্নয়ন- যে কোনও সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি অভূতপূর্ব। সামাজিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, দারিদ্র্য হ্রাস, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি সব ক্ষেত্রই বিশ্বে বাংলাদেশ এখন এক বিস্ময়ের নাম। বাংলাদেশেই নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন হয়েছে পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রকল্প। বাস্তবায়নের পথে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, ঢাকা মেট্রোরেলসহ বড় বড় প্রকল্পগুলো।
সরকার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী, আত্মপ্রত্যয়ী ও সাহসী নেতৃত্বের ফলে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়, উন্নয়নের রোল মডেল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছে। বাংলাদেশ এখন দ্রুত উন্নয়নশীল প্রথম পাঁচটি দেশের একটি।
প্রভাবশালী ম্যাগাজিন দি ইকোনমিস্টের ২০২০ সালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৬৬টি উদীয়মান সবল অর্থনীতির দেশের তালিকায় বাংলাদেশের স্থান নবম। ব্রিটেনের অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ’ তাদের ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিগ টেবল-২০২১’ এ ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও সার্বিক অগ্রগতি এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশ ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের ২৫টি বড় অর্থনীতির একটি হবে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। উন্নয়ন গবেষকরা আজকের বাংলাদেশকে ‘উন্নয়নের রোল মডেল, ‘এমার্জিং টাইগার’, দক্ষিণ এশিয়ার ‘তেজি ষাঁড়’এরকম নানা অভিধায় ভূষিত করছেন।
বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তোরণ ঘটেছে। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নীতি সংক্রান্ত কমিটি (সিডিপি) এবছর মার্চে এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়। এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণের জন্য মাথাপিছু আয়, মানব সম্পদ সূচক এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক এ তিনটি সূচকের যে কোন দুটি অর্জনের শর্ত থাকলেও বাংলাদেশ তিনটি সূচকেই উন্নীত হয়েছে। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের (ইকোসক) মানদণ্ড অনুযায়ী, এক্ষেত্রে একটি দেশের মাথাপিছু আয় হতে হবে কমপক্ষে এক হাজার ২৩০ মার্কিন ডলার। ২০২২ সালের ১০ মে প্রকাশিত সরকারি তথ্যে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এখন দুই হাজার ৮২৪ ডলার। মানবসম্পদ সূচকে ৬৬ প্রয়োজন হলেও বাংলাদেশ অর্জন করেছে ৭২ দমমিক ৯ এর বেশি। অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক হতে হবে ৩২ ভাগ বা এর কম, সেখানে বাংলাদেশের রয়েছে ২৪ দশমিক ৮ ভাগ এরও কম।
বিশ্বব্যাংকের হিসাবমতে, এখনও বাংলাদেশের ৮৭ শতাংশের গ্রামীণ মানুষের আয়ের উৎস কৃষি। দুই-তৃতীয়াংশ গ্রামীণ পরিবার কৃষি ও অকৃষি উভয় ধরনের আয়ের ওপর নির্ভরশীল। এমনকি শহরে বসবাসকারীদের মধ্যেও ১১ শতাংশ মানুষ সরাসরি কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২১’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ বর্তমান বিশ্বে পাট ও কাঁঠাল উৎপাদনে দ্বিতীয়, ধান ও সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, আম ও আলু উৎপাদনে সপ্তম, পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম, অভ্যন্তরীণ উন্মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য উৎপাদনে তৃতীয় এবং বদ্ধ জলাশয়ে মৎস্য উৎপাদনে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। বর্তমানে আমাদের মোট খাদ্যশস্য উৎপাদন বেড়ে ৪ কোটি ৫৩ লাখ ৪৩ হাজার মেট্রিক টন হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) কৃষির অবদান ১৬ দশমিক ছয় শতাংশ। কৃষি খাতের উন্নয়নে ‘জাতীয় কৃষিনীতি’ ও ‘ডেল্টাপ্লান- ২১০০ তৈরি করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ‘মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ব্রিফ’-এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ ২০২১ সালে প্রবাস আয় প্রাপ্তিতে বিশ্বের ১০টি দেশের মধ্যে সপ্তম স্থানে ছিল। ২০২০ সালেও বাংলাদেশ একই অবস্থানে ছিল। তবে ২০২১ সালে প্রাপ্ত প্রবাস আয় দুই হাজার ১৭০ কোটি ডলার থেকে ২ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় দুই হাজার ২২০ কোটি ডলারে। বাংলাদেশের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য মতে, ১৯৭৬ থেকে ২০২২ সালের মে মাস পর্যন্ত বিদেশে যাওয়া বাংলাদেশি কর্মীর মোট সংখ্যা এক কোটি ৪১ লাখ ৩৮ হাজার ১৪০। এর মধ্যে ৩৩ শতাংশ সৌদি আরব, ১৭ শতাংশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, ১১ দশমিক ১৫ শতাংশ ওমান, ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ মালয়েশিয়া, ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ সিঙ্গাপুর, ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ কাতার, ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ কুয়েত এবং বাকিরা অন্যান্য দেশে গেছেন। ১৯৭৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে পেশাজীবী শ্রেণিতে বিদেশে গেছেন দুই লাখ ৭৮ হাজার ৯৭৮ জন।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে সরকারের ‘দিন বদলের রূপকল্প-২০২১’ এ উল্লেখ ছিল বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার অঙ্গীকার। ২০১৮ সালেই বাংলাদেশ ‘স্বল্পোন্নত’ দেশের ক্যাটাগরি থেকে ‘উন্নয়নশীল’ দেশের ক্যাটাগরিতে উন্নীত হওয়ার সুপারিশ পেয়েছে। ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যেই এলডিসি তালিকা থেকে বের হতে পারবে।
অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে গত ১৩ বছরের গড় অর্জন, এর আগের অন্য যেকোনও সময়ের চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে। ২০০১-০৬ সালে যেখানে বাংলাদেশের গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, সেখানে ২০০৯ থেকে ২০২১ সালে গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। ২০১৯ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধি সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ২৫ শতাংশে উন্নীত হয়। মাথাপিছু আয় ২০২২ সালের মে মাসে এসে দাঁড়ায় ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার। ১৯৭৫ থেকে এ পর্যন্ত মাথাপিছু আয়ের যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তার ৭৩ শতাংশই ঘটেছে গত ১২ বছরে।
আইএমএফের হিসাব মতে, ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে। যদিও ২০১৫ সালেই আমাদের মাথাপিছু আয় পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ১৯৭২-৭৩ সালে যেখানে জিডিপির আকার ছিল ৮ বিলিয়ন ডলার, সেখানে ২০২১ সালে মোট জিডিপি ৪০৯ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়।
নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন তার একটি গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, নানা সামাজিক সূচকে, যেমন গড় আয়ু, শিক্ষার হার, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার কমানো, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির শতকরা হার, টিকাদান ইত্যাদি ক্ষেত্রে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে ভালো করেছে বাংলাদেশ। দেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়ে এখন ৭২ দশমিক ৮ বছর। এর মধ্যে পুরুষের গড় আয়ু ৭১ দশমিক ২ বছর। নারীর গড় আয়ু ৭৪ দশমিক ৫ বছর। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২০ সালের জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার এখন ১ দশমিক ৩০ শতাংশ। আগের বছর ছিল ১ দশমিক ৩২ শতাংশ। তার আগের বছর ছিল ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭২-৭৩ সালে যেখানে রাজস্ব আয় ছিল ১৬৬ কোটি টাকা, সেখানে ২০২০-২১ সালে রাজস্ব আয় হয়েছে দুই লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা, অর্থাৎ রাজস্ব বেড়েছে এক হাজার ৫৬৬ গুণ। ১৯৭২-৭৩ সালে বাজেটের আকার ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটিতে। অর্থাৎ স্বাধীনতার পর ৫০ বছরে বাজেটের আকার বেড়েছে ৭৬৮ গুণ। চলতি ২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে চার লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা।
এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে তিন লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার কর রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই আয় আসবে মূলত আয়কর, ভ্যাট এবং আমদানি ও রফতানি শুল্ক থেকে। বাজেটে এনবিআর-বহির্ভূত কর ব্যবস্থা থেকে ৬৩ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
কৃষিতে সার ও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে এবং বর্তমান শতাব্দীর শুরুতে বাংলাদেশের শস্য উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। উচ্চফলনশীল শস্যের আবাদ হওয়ার কারণে বর্তমানে খাদ্য উৎপাদনে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। ১৯৭২ সালে দেশে ধান উৎপাদন ছিল মাত্র এক কোটি ১০ লাখ টন, ২০২০ সালে তা বেড়ে দাড়িয়েছে তিন কোটি ৮২ লাখ টন। ২০২২ সালে তা চার কোটি টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা তরা হচ্ছে। ধান, গম ও ভুট্টা মিলিয়ে ২০২০ সালে খাদ্য উৎপাদন ছিল চার কোটি ৫৩ লাখ টন। ২০২২ সালে তা পাঁচ কোটি টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বর্তমান সরকার বিভিন্ন খাতে বৈদেশিক বিনিয়োগ উৎসাহিত করছে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব উৎসাহিত করছে। বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে বৈদেশিক সহায়তার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে অর্থায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া বিদেশি বেসরকারি বিনিয়োগেও আশাব্যঞ্জক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ ২০ বিলিয়ন ডলার। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন চলছে।
তৈরি পোশাক রফতানিতে চীনের পরেই বাংলাদেশের স্থান। তৈরি পোশাক রফতানি শুরুর আগে বাংলাদেশের রফতানি ঝুড়িতে ছিল মূলত পাট, পাটজাত দ্রব্য, চা ও চামড়া। ১৯৮১-৮২ অর্থবছরে রফতানি আয় ছিল মাত্র ৭৫ দশমিক দুই কোটি ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রফতানি আয় দাঁড়ায় ৪২ বিলিয়ন (৪২০০ কোটি) ডলার। করোনাকালীন ২০১৯-২০ অর্থবছরে রফতানি আয় ৩৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলারে নেমে গিয়েছিল। তবে ২০২১-২২ অর্থবছরে রফতানি আয় ৪৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। প্রায় দুই দশক ধরে রফতানি আয়ের ৮০-৮৫ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ও পাট ও পাটজাত দ্রব্য এবং ওষুধ রফতানিতে প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। উৎপাদনের পরিবেশ ও পণ্যের মান ও ছাড়পত্র নিশ্চিত হলে চামড়াজাত পণ্য, জাহাজ নির্মাণ ও কৃষিভিত্তিকি খাদ্যপণ্য (মাছ, সবজি ও ফলমূল) রফতানিতেও বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ সফল বাস্তবায়ন অর্থসৈাতিক গতিশীলতা বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে। বিশেষ করে করোনা প্রাদুর্ভাবের সময় অফিস-আদালত-শিক্ষা-ব্যবসা-চিকিৎসাসহ সব খাত ডিজিটালাইজেশনের কারণে সুবিধা পেয়েছে।আইসিটি বিভাগ জানায়, প্রযুক্তি খাতে ২০ লাখের বেশি তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানসহ ছয় লাখ ৫০ হাজারের বেশি ফ্রিল্যান্সার পেশাজীবী তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ১৮ কোটি ১৪ লাখের বেশি মোবাইল সংযোগ, ১৩ কোটির বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এবং তিন হাজার ৮০০ ইউনিয়নে সফলভাবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনের সহজলভ্যতায় মানুষের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে সক্ষমতা যেমন বেড়েছে তেমনি তাদের দৈনন্দিন জীবনে অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় এখন সবল। অনেকের কাছে যা ঈর্শ্বনীয়ও বটে। আগামী মার্চ নাগাদ বৈশ্বিক মন্দা অর্থনীতির কবল থেকে বেড়িয়ে বাংলাদেশ তার আগের ধারায় ফিরবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।