শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:০৬ অপরাহ্ন




ভোক্তা পর্যায়েও বিদ্যুতের দাম ২০% বাড়ানোর প্রস্তাব

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২২ ৩:১৫ am
বিদ্যুৎ loadshedding energy crisis electricity power grid বিদ্যুত বিভ্রাট লোডশেডিং মেগাওয়াট power বিদ্যুৎ বিদ্যুত বিভ্রাট লোডশেডিং মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বিদ্যুৎ loadshedding energy crisis electricity power grid বিদ্যুত বিভ্রাট লোডশেডিং মেগাওয়াট
file pic

এবার ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির জন্য আবেদন করেছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। ইতিমধ্যেই তিনটি কোম্পানি আবেদন করেছে। আগামী সপ্তাহে বাকি তিনটি কোম্পানি আবেদন করতে পারে। বিদ্যুতের দাম গড়ে প্রায় ২০ শতাংশ বাড়াতে চায় বিতরণ কোম্পানিগুলো।

এর আগে গত জুন মাসে গ্যাসের দাম এবং গত আগস্টে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়। সব৴শেষ ২১ নভেম্বর (গত সোমবার) পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বৃদ্ধি করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের মূল্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসি সেদিন জানিয়েছিল, এখনই খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দামে কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে পাইকারি পর্যায়ে মূল্যবৃদ্ধির দুই দিনের মাথায় গত বুধবার ভোক্তা পর্যায়েও দাম বাড়াতে বিইআরসির কাছে আবেদন করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি বিতরণ কোম্পানিও পিডিবি। তাদের আবেদনের পর বৃহস্পতিবার আরও দুটি কোম্পানি দাম বাড়ানোর আবেদন করেছে।

বিদ্যুৎ বিতরণ করা তিনটি কোম্পানির দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোক্তা পর্যায়ে গড়ে ১৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ দাম বাড়ানোর আবেদন করেছে পিডিবি। আর দাম বাড়ানোর নির্দিষ্ট কোনো পরিমাণ উল্লেখ না করেই আর্থিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বিইআরসির কাছে আবেদন জমা দিয়েছে ঢাকার দুই বিতরণ কোম্পানি ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) ও ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো)। পাইকারি পর্যায়ে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আনুপাতিক হারে দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে তারা। এতে প্রায় ২০ শতাংশ বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে বলে মনে করছেন এই দুই কোম্পানির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) আগামী রোববার দাম বাড়ানোর আবেদন জমা দিতে পারে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার শহর এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) আবেদন জমা দিলেও তা বিধিসম্মত না হওয়ায় ফেরত দিয়েছে বিইআরসি। আগামী সপ্তাহে আবার জমা দেবে তারা। উত্তরাঞ্চলের শহর এলাকার বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) আগামী সপ্তাহে দাম বাড়ানোর আবেদন জমা দিতে পারে।

দেশের সরকারি-বেসরকারি সব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে চুক্তি অনুসারে নির্ধারিত দামে বিদ্যুৎ কিনে নেয় পিডিবি। এরপর তারা উৎপাদন খরচের চেয়ে কিছুটা কম দামে বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে বিক্রি করে। ঘাটতি মেটাতে পিডিবি সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি নেয়। তবে বিতরণ কোম্পানিগুলো কোনো ভর্তুকি পায় না। তারা ভোক্তার কাছে ‘মুনাফা না, লোকসান না’ নীতিতে বিদ্যুৎ বিক্রি করার কথা থাকলেও কেউ কেউ নিয়মিত মুনাফা করে।

বিইআরসির চেয়ারম্যান আবদুল জলিল বলেন, ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে কমিশনের কাছে তিনটি আবেদন জমা হয়েছে। সব বিতরণ কোম্পানির আবেদন জমা হলে তা যাচাই-বাছাই করে আইন ও বিধি অনুসারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিইআরসির কর্মকর্তারা বলছেন, কোম্পানিগুলোর আবেদনের সব তথ্য ও সংযুক্ত প্রমাণ ঠিক থাকলে তা আমলে নেবে কমিশন। এরপর একটি কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হবে। কমিটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করে দাম বাড়ানোর একটি আনুমানিক হার প্রস্তাব করবে। এরপর সব পক্ষকে নিয়ে গণশুনানি আয়োজন করা হবে। গণশুনানি–পরবর্তী কোনো ব্যাখ্যা বা জবাব থাকলে তার জন্য অন্তত এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হবে। এরপর মূল্যবৃদ্ধির চূড়ান্ত আদেশ ঘোষণা করবে কমিশন। এতে এক থেকে দেড় মাস সময় লাগতে পারে।

তবে ভোক্তা পর্যায়ে ২০ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না বলে মনে করছেন বিইআরসির দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। তাঁরা প্রথম আলোকে বলেন, পাইকারি পর্যায়ে প্রতি ইউনিট ১ টাকা ৩ পয়সা বাড়লেও খুচরা পর্যায়ে ১ টাকা ৪৭ পয়সা বাড়ানোর আবেদন করেছে পিডিবি। তাদের এই আবেদন যৌক্তিক নয়।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত ১৪ বছরে দেশে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৯ বার। একই সময়ে পাইকারি পর্যায়ে ১১৮ শতাংশ ও গ্রাহক পর্যায়ে ৯০ শতাংশ বেড়েছে বিদ্যুতের দাম। সব৴শেষ দাম বাড়ানো হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যা ওই বছরের মার্চ থেকে কার্যকর হয়। ওই সময় পাইকারি পর্যায়ে ৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়। আর খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ানো হয় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

অসহনীয় মূল্যস্ফীতির মধ্যে খুচরা (ভোক্তা) পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো বাজারে আগুন ছড়ানোর শামিল হবে বলে মনে করেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম শামসুল আলম। তিনি বলেন, সাড়ে চার মাসের মধ্যে গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এখন বিদ্যুতের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষের জন্য তা অসহনীয় হবে। [প্রথম আলো]




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD