চলতি বছর বিশ্বের অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকা মঙ্গলবার প্রকাশ করেছে বিবিসি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া ইউক্রেনের নারী যেমন এ তালিকায় স্থান পেয়েছেন, তেমনি স্থান পেয়েছেন ইরানের তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুর জেরে শুরু হওয়া বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নারীও। এ তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের ময়মনসিংহের সানজিদা ইসলাম।
চারটি বিভাগে এই ১০০ নারীর নাম প্রকাশ করা হয়েছে। এগুলো হলো রাজনীতি ও শিক্ষা; সংস্কৃতি ও খেলাধুলা; অধিপরামর্শ ও সক্রিয়তা এবং স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান। সানজিদা ইসলাম স্থান পেয়েছেন অধিপরামর্শ ও সক্রিয়তা বিভাগে। যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম বিবিসির ওয়েবসাইটে এই নারীদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে সানজিদা ইসলাম সম্পর্কে বলা হয়েছে, বাল্যবিবাহ ঠেকাতে কাজ করেন তিনি, তাঁর সহপাঠী ও শিক্ষকেরা।
সানজিদা ইসলাম ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের ঝাউগড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পড়াশোনা করছেন কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজে। ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়ছেন তিনি। নান্দাইল পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী থাকাকালে ২০১৪ সালে তিনি তাঁর ছয় সহপাঠীকে নিয়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলে সাড়া ফেলেছিলেন। এরপর সানজিদার ওই দলকে ‘সাত সাহসী’ উপাধি দিয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছিল।
সানজিদাসহ এই সাত সাহসী ২০১৪ সালেই ঘাসফড়িং নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। এর পর থেকে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন তাঁরা। তবে এখন সবাই আলাদাভাবে কাজ করেন।
বিবিসির প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় সানজিদা ইসলামের নাম আসার পর এই প্রতিনিধি মঙ্গলবার তাঁর বাড়ি যান। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই এখন আলাদাভাবে কাজ করি। কিন্তু প্রত্যেকেই তাঁদের জায়গা থেকে সক্রিয়।’ এ পর্যন্ত ৭০টির বেশি বাল্যবিবাহ ঠেকিয়েছেন সানজিদারা।
বাল্যবিবাহ ঠেকানো ছাড়া যৌতুক প্রথা বন্ধেও কাজ করেন সানজিদা। তিনি জানালেন, পড়াশোনা শেষ করে স্বাবলম্বী হতে চান। তাঁর মতে, এই বাল্যবিবাহ ঠেকানোসহ বিভিন্ন সামাজিক কাজে জড়িয়ে থাকতে হলে স্বাবলম্বী হতে হবে।
২০১২ সালের ভারতের দিল্লিতে ‘নির্ভয়া’ ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের পর থেকে বিবিসি এ তালিকা প্রকাশ করে আসছে। এ বছর ছিল এ তালিকা প্রকাশের ১০ বছর পূর্তি। বিবিসির এ তালিকায় এবার স্থান পেয়েছেন ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি ওলেনা জেলেনস্কা, বলিউডের অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, ইরানের পর্বত আরোহী এলনাজ রেকাবি।