আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা নারীর ক্ষমতায় নিশ্চিত করেছি। নারী ক্ষমতায়নে সবচেয়ে বেশি কাজ আমরা করে গেছি। নারী শিশু নির্যাতনের দমন আইন আমরা করে দিয়েছি। পারিবারিক সুরক্ষা আইন আমরা করেছি। যাতে ন্যায় বিচার হয় লিগাল এইডের মাধ্যমে সেটি আমরা করে দিয়েছি। জাতির পিতা বাংলাদেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। কোন মানুষ না খেয়ে থাকবেন না। দেশের মানুষের যাতে কষ্ট না হয় আমরা সেটি করেছি। বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহিলা লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭৫ এর ১৫ আগস্ট আমরা যা হারিয়েছি। তার চেয়ে বেশি হারিয়েছে বাংলাদেশের জনগণ। মাত্র ৯ মাসের ব্যবধানে বঙ্গবন্ধু দিয়েছিলেন সংবিধান। যেখানে নারীদের ক্ষমতায়নের কথা বলা ছিল। নারীর ক্ষমতায়নে বঙ্গবন্ধু সব সময় বিশ্বাস করতেন। নয়া চিনের বইটা পড়লে উৎসাহ পাবেন কিভাবে বঙ্গবন্ধু নারীদের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করতেন। নারীর অর্থনৈতিক শিক্ষার উপরে তিনি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। নারীর ক্ষমতায়ন না হলে অবহেলিত থাকতে হবে। যেহেতু যুবলীগ জাতির পিতা করে গিয়েছিলেন। সে কারণে আমি যুব মহিলা লীগ গঠন করি। আমি মহিলা শ্রমিকলীগ সংগঠন করে দিয়েছি।
আমরা প্রথম নারী উন্নয়ন নীতিমালা করলাম। ২০০১ এ বিএনপি ক্ষমতায় এসে এমন ভাবে করল যেখানে নারীর কোন ক্ষমতায়ন নেই। বিএনপি ক্ষমতায় এসে সারাদেশে নারী ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। মেয়েদের উপরে যে জুলুম অত্যাচার করেছে, আমি দেখলাম একাত্তরের মত ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। তারা নারী নীতিমালা তো বিসর্জন দিলোই। নারীদের উপর আরো অত্যাচার বাড়িয়েছে। সেই সময়ে যুব মহিলা লীগ রাস্তায় আন্দোলন করেছে। আমরা প্রতিশোধ নিতে যায়নি। আমরা দেশের উন্নয়নের দিকে নজর দিয়েছি।
কেবলমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই দেশের জনগণ শান্তিতে থাকে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর নারী নির্যাতনের ঘটনায় গৌরনদী থেকে লোক আশ্রয় নিয়েছিল কোটালীপাড়ায়। সেনাবাহিনীর ৯ জন সেনাকে কাটিয়ে মইনুদ্দিনকে সেনাবাহিনীর প্রধান বানালো। ভুয়া ভোটার তালিকা তৈরি করল। ওই সময় থাকা অবস্থায় আমাকে গ্রেফতার করল। আমার যুব মহিলা লীগের অনেক নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করলো। আমার বিরুদ্ধে একটা পর একটা মামলা। আমার মুক্তির দাবিতে যুব মহিলা কি প্রথম স্বাক্ষর অভিযান শুরু করে। এরপরে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ২৫ লাখ স্বাক্ষর নেয়।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনে বিএনপি মাত্র ৩০ সিট পেয়েছিল। বিএনপি নেতারা যে লাফালাফি করে কিসের জন্য। আপনারা কি নিয়ে লাফান। ২০১৩, ১৪,১৫ সালের কত মানুষকে পুড়িয়ে ফেলেছে। হাজার হাজার গাছপালা উঠে ফেলেছেন, পশু পুড়িয়েছে। কিভাবে তারা মানুষের ক্ষতি করেছে। তারা অগ্নি সন্ত্রাস করেছে। বাবা দেখছে তার ছেলে পুড়ে মরছে। খালেদা জিয়া অবরোধ ডেকে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে বিএনপি ভোট চুরি করে নির্বাচন করেছিল। মানুষ সেই নির্বাচন বর্জনই করেছে। খালেদা জিয়া মাত্র দেড় মাসের মধ্যে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষ জানে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। খালেদা জিয়া মেট্রিক পরীক্ষা দিয়েছিল শুধু উর্দু ও অংকে পাস করেছিল। উর্দু পাকিস্তান প্রীতি, আর অংক টাকা গোনার জন্য। জিয়াউর রহমান ইন্টারমিডিয়েট পাস।
মানুষ সামনের দিকে যায়। আর বিএনপি ক্ষমতায় আসলে পেছনের দিকে যায়। যে কারণে জনগণ তাদের বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে। রুপ গল্প ২১ দিয়েছিলাম। আল্লাহর রহমতে জাতীয় পিতার জন্মবার্ষিকীতে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। সারাদেশে রাস্তাঘাট পুল ব্রিজ করে দিয়েছি। গ্রামে কোন মানুষ ভূমিহীন থাকবে না। সেটা আমরা করে দিয়েছি। কমিউনিটি ক্লিনিক বেগম দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আমরা সেটি চালু করে দিয়েছি।
সরকার প্রধান বলেন, কিছু মানুষ এখন গুজব ছড়াচ্ছে। ব্যাংকে টাকা রাখা যাবে না। তারা হয়তো সেই চোরের সদস্য। আমরা যে কাজ করে যাচ্ছি সেখানে জনগণের সমর্থন চাই। বাংলাদেশ করণীয় নিয়ন্ত্রণে সারা বিশ্বে একটা অবস্থান করতে পেরেছে। যেহেতু বিশ্বব্যাপী খাদ্যের অভাব, সেখানে বাংলাদেশের মানুষের যাতে কষ্ট না হয় এক ইঞ্চি জমি যাতে অনাবাজি না থাকে বাড়ির ছাদে যে যেখানে পারেন কিছু উৎপাদন করেন। সাশ্রয় করেন। সঞ্চয় করেন। সারা বিশ্বের যে অর্থনৈতিক ধাক্কা। সেখান থেকে বাংলাদেশেও বাইরে যাবে না। আমরা তো বিচ্ছিন্ন হতে পারব না।
যে সমস্ত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। পদ্মা সেতু করে দিয়েছি। টানেল হচ্ছে। খুব শিগ্রই মেট্রোরেল চালু হবে। একটি মানুষও ভূমিহীন গৃহীন থাকবে না। বিনা বসায় বই উপবৃত্তি আমরা দিচ্ছি। প্রতিটি উন্নয়নের কাজ সুপরিকল্পিতভাবে করে যাচ্ছি। আমরা যে উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়েছি। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমাদের ই ইকোনোমি আমরা করব। প্রতিটি কাজে মেয়েদেরকে যুক্ত করেছি। সেনাবাহিনী নৌবাহিনী সব জায়গায় মেয়ে অফিসাররা ভাল কাজ করছে। ৪১ এর স্মার্ট বাংলাদেশ আজকের তরুণ সমাজ তারাই তৈরি করবে। এই বদ্বীপ উন্নয়ন সমৃদ্ধশালী হবে।