অলিম্পিকের চেয়ে বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে বড় ক্রীড়া ইভেন্ট ফুটবল বিশ্বকাপ। এবার জমজমাট আসরটি বসেছে আরব রাষ্ট্র কাতারে। খেলায় চোখ রাখতে যাচ্ছেন পাঁচশো কোটিরও বেশি ফুটবল প্রেমিক। আর ১০ লাখ মানুষ সরাসরি এসেছেন মহাযজ্ঞ উপভোগ করতে। আয়োজক দেশগুলো কী বিশ্বকাপ থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারে? করলেও কি পরিমাণ হতে পারে তা, এমন প্রশ্ন অনেকের মনে। বিশ্বকাপের আগে এ নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
টিকিট, পণ্য বিক্রি থেকে শুরু করে স্পন্সরপিশ, পুরস্কারের অর্থ এবং পর্যটককে ঘিরে বিপুল অর্থ ব্যয় হয়ে থাকে। কিন্তু একটি আয়োজক দেশ কি এতে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে থাকে? সহজ উত্তর হলো, না।
বিশ্বকাপের আগে আয়োজক দেশ মহাপরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামে। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে অনেক আগে থেকেই অবকাঠামো উন্নয়ন, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য আধুনিক হোটেল নির্মাণসহ নানা খাতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে থাকে। কিন্তু এসব খরচের বেশিরভাগই উঠে আসে না। বিশেষ করে নগদ অর্থের ক্ষেত্রে।
তবে বিশ্বকাপ থেকে অবশ্যই বিপুল অর্থ আয় হয়, যেমন রাশিয়ায় ২০১৮ সালে বিশ্বকাপের টিভি স্বত্ব বিক্রি হয়েছিল চারশো ৬০ কোটি মার্কিন ডলারে। যার পুরো অর্থটাই যায় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার কাছে।
টিকিট বিক্রিতে যে আয় হয় তার শতাভাগ মালিকও ফিফা। ২০১৮ সালে মার্কেট রাইটস বিক্রি করে আয় হয় একশো কোটি মার্কিন ডলার। যদিও মাসব্যাপী ফুটবল টুর্নামেন্ট পরিচালনার মূল খরচ বহন করে থাকে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থাটি। এবারের আয়োজক দেশ কাতারকে একশো ৭০ কোটি মার্কিন ডলার দেওয়ার কথা রয়েছে তাদের। বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দলগুলোর জন্য রয়েছে ৪৪ কোটি ডলারের পুরস্কার।
বিশ্বকাপ আয়োজন, অবকাঠামো, সড়ক, রেলপথ নির্মাণসহ সবকিছু মিলিয়ে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ করেছে কাতার।
প্রায় মাসব্যাপী বিশ্বকাপে কয়েক লাখ লোকের সমাগম হবে দেশটিতে। এতে পর্যটন ব্যবসা, হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের আয় বৃদ্ধি পাবে। তবে এই খরচ তুলতে অতিরিক্ত সক্ষমতার প্রয়োজন। কেননা বিশ্বকাপ আয়োজনের পেছনে ব্যয় সাধারণত স্বল্প মেয়াদে উৎপন্ন রাজস্বের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে। তাই সংক্ষিপ্ত সময়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে আয়োজক দেশের।
তবে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করলে সেই দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি সুফল আসার সম্ভবনা রয়েছে। বিশ্বকাপের চূড়ান্ত বাঁশি বাজার পরও নতুন সড়ক এবং পরিবহন ব্যবস্থা দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে।