বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন




ইতিহাসের সব রেকর্ড ভেঙে ডলারের দামে রেকর্ড

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৩ ৪:২০ pm
Dollar রিজার্ভ Per capita income মাথাপিছু আয় Reserves Reserve রিজার্ভ remittance রেমিট্যান্স প্রবাসী আয় ডলার dollar
file pic/Reuters

ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালেই আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। এর বাইরে বর্তমানে দেশের ব্যাংকগুলো বাড়তি আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে প্রবাসীদের পাঠানো ডলার কিনতে পারে। বাড়তি এই প্রণোদনা ঘোষণা পর দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা বেড়েছে। তবে তাতে একটুও কমেনি ডলারের বাজারের উত্তাপ। টাকার বিপরীতে ডলারের বিনিময় মূল্যে হচ্ছে নতুন নতুন রেকর্ড। খোলাবাজারে ডলারের দাম এরই মধ্যে ১২৬ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) রাজধানীর দিলকুশা ও পল্টনের বেশিরভাগ মানি চেঞ্জারে প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ১২৬ টাকা ৫০ পয়সা দরে। দেশের ইতিহাসে এটিই ডলারের সর্বোচ্চ দাম।

সরেজমিনে দেখা যায়, আজ খোলাবাজারে নগদ এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুনতে হচ্ছে ১২৬ টাকা ৫০ পয়সা। যেখানে গত সপ্তাহ আগে এক ডলার ছিল ১২০ থেকে ১২১ টাকা।

সাব্বির রহমান নামে এক গ্রাহক বলেন, জরুরি কাজে অল্প কিছু ডলারের প্রয়োজন ছিলো। ব্যাংকে গিয়ে ডলারের ব্যবস্থা করতে পারিনি। এজন্য খোলাবাজারে এসেছিলাম। এখানে ডলারের দাম অনেক বেশি। তাই ডলার ক্রয় না করেই চলে যাচ্ছি।

এর আগে সর্বপ্রথম ২০২২ সালের আগস্টে ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১২০ টাকায় উঠেছিলো। এরপর বেশ কয়েক মাস ডলারের দাম কিছুটা কমতির দিকে ছিলো। তবে চলতি বছরের অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে খোলাবাজারে ডলারের দাম ১২০ টাকায় ওঠে। তবে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন উচ্চতা ১২৬ টাকা ৫০ পয়সা ঠেকেছে ডলারের দাম।

এদিকে বাড়তি প্রণোদনা দেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলো বাধ্য নয়। ব্যাংক যদি প্রবাসী আয় কিনতে চায় তাহলে এই প্রণোদনা দিতে পারে। নতুন এই সিদ্ধান্তের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহে। সদ্য সমাপ্ত অক্টোবর মাসে প্রবাসীরা ১৯৭ কোটি ৭৫ লাখ ডলার পাঠিয়েছে। এর আগের মাসে এসেছিল ১৩৪ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৬৩ কোটি ডলার।

অর্থনীতিবিদদের মতে, বাড়তি প্রণোদনা দেওয়ার ফলে স্বল্প সময়ের জন্য প্রবাসী আয় কিছুটা বাড়বে। তবে এটি কোন স্থায়ী সমাধান না। তাই সমস্যার পুরোপুরি সমাধান করতে হলে ডলারের দামের পার্থক্য আরও কমাতে হবে। কারণ ব্যাংকিং চ্যানেলে আসা ডলার ও হুন্ডির মাধ্যমে আসা ডলারের দরের মধ্যে এখনো বড় পার্থক্য রয়েছে।

ব্যাংক বাড়তি আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিলেও প্রতি ডলারের দাম পড়বে প্রায় ১১৬ টাকা। তবে গতকাল এবিবি ও বাফেদা জানিয়েছে, বাড়তি প্রণোদনাসহ প্রতি ডলারের দাম ১১৫ টাকার বেশি হবে না। আর অপ্রাতিষ্ঠানিক চ্যানেলে বর্তমানে ডলারের দাম ১২৬ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর ফলে বৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানোয় প্রবাসী বাংলাদেশিরা উৎসাহীত হবেন না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় পাঠান না সৌদি প্রবাসী হাসমত ইসলাম। তিনি গত দশ বছর ধরে সৌদির বিভিন্ন খাতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। প্রথম দুই বছর তিনি ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশটি থেকে অর্থ পাঠাতেন বলে জানান। তিনি অর্থসূচককে বলেন, বর্তমানে ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠালে প্রতি রিয়ালে ২৯ টাকা ২৮ পয়সা থেকে ৩০ পাওয়া যায়। আর হুন্ডির মাধ্যমে ৩১ টাকা থেকে ৩২ টাকা পাওয়া যায়। তাই এখন অধিকাংশ সময়ে হুন্ডিতে দেশে অর্থ পাঠাই। কারণ যেখানে বেশি দাম পাবো সেখানেই পাঠাবো। অনেকে কষ্ট করে আয় করতে হচ্ছে। অনেক সময় কাজ থাকে না, তখন খুব কষ্টে জীবন-যাপন করতে হয়।

করোনার সময়ে দেশের রিজার্ভ ব্যাপকহারে বাড়তে শুরু করেছিলো। তখন রেকর্ড উচ্চতায় ঠেকেছিলো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ব্যবসা-বাণিজ্য ঠিক হতে থাকে। ফলে ডলারের চাহিদা ও ব্যয় বাড়তে থাকে। এরপরে তৈরি হয় ডলারের ব্যাপক সংকট। সেই সংকট চলছে প্রায় দুই বছর ধরে। রিজার্ভ থেকে ধারবাহিকভাবে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে রিজার্ভ কমে ১ হাজার ৯৪৫ কোটি ডলারের ঘরে নেমে এসেছে।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD