ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি জহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও ২৩ নাবিককে উদ্ধারে সোমালি জলদস্যুদের সঙ্গে এখনো যোগাযোগ করা যায়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তবে নাবিকদের উদ্ধার ‘তৎপরতা’ চলছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, “আমরা সেকেন্ড পার্টির মাধ্যমে চেষ্টা করছি এবং যেখানে জানানো প্রয়োজন, আমরা সেখানে জানিয়েছি।”
বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে এক সেমিনার শেষে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে রিপোর্টিং সেন্টার ইন কুয়ালালামপুর, ইন্ডিয়ান ফিউশন সেন্টার ইন নিউ দিল্লি, তারপর সিঙ্গাপুর, ইউএসএ, ইউকে, চায়নাসহ সকল এরিয়াল নেভাল শিপে আমরা রিপোর্ট করেছি। অন্যান্য সূত্রের মাধ্যমেও আমরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি।
“গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও কাজ করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে অত্যন্ত কনসার্ন। বিষয়টি মন্ত্রী সভায়ও অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা হয়েছে।”
ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২৩ নাবিককে মঙ্গলবার জিম্মি করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। মুক্তিপণ না দিলে জলদস্যুরা জাহাজের নাবিকদের একে একে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে বলে তারা স্বজনদের জানিয়েছেন।
জাহাজসহ জিম্মি নাবিকদের কীভাবে মুক্ত করা হবে এবং জলদস্যুদের কোনো মুক্তিপণ দেওয়া হবে কিনা, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে এই জাহাজটাকে এবং নাবিকদের মুক্ত করা। কিন্তু কৌশল কী হবে, এটা ইন পাবলিক বলার বিষয় নয়।
“ইতোপূর্বে একই কোম্পানির একটি জাহাজ জলদস্যুরা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল। তিন মাস পর সেই জাহাজ এবং ক্রুদের উদ্ধার করা হয়েছিল।”
এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ আয়োজিত একটি সেমিনারে অংশ নেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
‘এমপাওয়ারিং ফিউচার: ইনভেস্ট ইন উইমেন টুয়ার্ডস স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওই সেমিনারে তিনি বলেন, “পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি কাজ করেন নারীরা। পুরুষের তুলনায় ৭০ শতাংশ কাজ নারীরা করে থাকেন। তারা অফিসও করেন, বাসায় গিয়ে পারিবারিক কাজ ও সন্তানদের লালন পালনও করেন। কিন্তু তাদের আনপেইড কেয়ার ওয়ার্কের কোনো মূল্যায়ন নেই।
“আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই, যেটা হবে মানবিক। যেখানে মানুষের আত্মিক উন্নয়ন ঘটবে। সেজন্য মায়েদের ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন ঘটাতে হবে। সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গঠনের জন্য সর্বক্ষেত্রে নারী ক্ষমতায়ন প্রয়োজন।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক জিয়া রহমান, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম, বাংলাদেশ অ্যালায়েন্স ফর উইমেন লিডারশিপের সভাপতি নাসিম ফেরদৌস, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক তানিয়া হক সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।