জাতীয় সংসদকে সরকার ‘একদলীয় ক্লাবে’ পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখুন গণতান্ত্রিক যতগুলো প্রতিষ্ঠান আছে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান ওরা (সরকার) ধ্বংস করেছে। যেমন পার্লামেন্ট। পার্লামেন্ট কি? এখন যে পার্লামেন্ট তারা তৈরি করেছে এটা কোনো পার্লামেন্ট? এটা একদলীয় একটা ক্লাব তৈরি হয়েছে। এটি হলো ক্লাব অব আওয়ামী লীগ।’
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এসব অভিযোগ করেন।
বিএনপি ঘোষিত ‘রাষ্ট্র মেরামতের রুপরেখার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ। এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকে রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা রুপরেখা ঘোষণা করা হয়।
নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রের গেটওয়ে হচ্ছে নির্বাচন ব্যবস্থা। সেই নির্বাচনী ব্যবস্থাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষ ভোটই দিতে যায় না। ভোট দিয়ে কি হবে? ভোট তো আমার থাকবে না, আমার ভোট তো অন্য কেউ দিয়ে যাবে। এজন্য যতকিছু কারসাজি করা দরকার তারা (সরকার) করেছে।’
২৭ দফার রুপরেখাকে বিএনপির স্বপ্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চয়ই এটা জনগণের সামনে তুলে ধরব। এটা একটা স্বপ্ন। আর স্বপ্ন ছাড়া কখনো সফল হওয়া যায় না। আমরা স্বপ্ন দেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাবো। এরই মধ্যে আমাদের জনগণের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদকে বলব, এ বিষয়ে সারাদিন ধরে ওয়ার্কশপ করুন। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে পেশাজীবীদের নিয়ে মতামত নিয়ে আমরা যেন পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব দিতে পারি সেজন্য উদ্যোগ নিন।’
জনতার টেউ শুরু হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রত্যেকটা জিনিসের উত্থান-পতন আছে, সামনে আগানো, পেছনে যাওয়া.. সেই টেউয়ের মতো। যে টেউ শুরু হয়েছে উত্তাল তরঙ্গের মতো, সমুদ্রের মতো এরা ভেসে যাবে। কারণ এদের সাথে জনগণ নেই, জনগণ থাকবে না। আমাদের শেষ কথা ভোটের অধিকারকে ফিরিয়ে পাওয়ার জন্য আমরা যে ১০ দফা দিয়েছি, সেই ১০ দফার প্রথমেই এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই সরকার অবৈধ সরকার। সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। এই সংসদের কোনো মূল্য নেই এবং একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে সেই সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন গঠন করে নতুন নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে আমরা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে ইনশাল্লাহ আমরা জয়ী হব।’
এসময় পুরো বিচার ব্যবস্থাকে দলীয়করণ করার অভিযোগও করেন মির্জা ফখরুল। এছাড়া গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।