সংযোগ সড়ক না থাকায় সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি সেতু কোনো কাজেই আসছে না ওই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায়। কোটি টাকার প্রকল্প ঠায় দাঁড়িয়ে থাকার পরও মানুষ চলছে ভোগান্তিকে সঙ্গী করেই। কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুত বক্স-কালভার্টসহ সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে। তবে কবে নাগাদ সেই কাজ করা হবে, সে বিষয়েও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কেউ।
নাজুক যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে নদী ভাঙনকবলিত চৌহালী উপজেলা জেলা শহর থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। এ উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় যাতায়াত দিন দিন অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে। এখানকার উৎপাদিত কৃষিপণ্য অন্যত্র নিয়ে যাওয়াও বেশ কষ্টসাধ্য।
চৌহালী এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিনানই মরা নদীতে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। বাঘুটিয়া ও উমারপুর ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষের নাগরপুর, সিরাজগঞ্জ সদর, টাঙ্গাইল, ঢাকা, আরিচাসহ বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত সুবিধার জন্য মরা নদীতে সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
‘বৃহত্তর পাবনা ও বগুড়া গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২ কোটি ২৩ লাখ ৮১ হাজার ৭৫০ টাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান র্যাব আরসি প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে এলজিইডি কর্তৃপক্ষের ৫২ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়, যা ২০১৮ সালের ৪ ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেতুটি ২০২১ সালের নভেম্বরে নির্মাণ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সেতুর দুপাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করেই ফেলে রাখা হয়েছে দীর্ঘদিন। এতে ওই অঞ্চলের মানুষের চলাচলে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
বিনানই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস আলী বলেন, নদীর প্রস্থের তুলনায় সেতুর দৈর্ঘ্য অনেকটাই কম। এক বছরের প্রকল্প পাঁচ বছরেও সম্পূর্ণ কাজ শেষ হয়নি। দুপাশে মাটি না থাকায় কোটি টাকার সেতুটি মানুষের কোনো কাজে আসছে না।
বাঘুটিয়া ইউনিয়নের কৃষক ইছাহাক শেখ বলেন, ব্রিজটি চলাচল উপযোগী হলে আমাদের উৎপাদিত ফসল বড় বড় হাটবাজারে নিয়ে কাঙ্ক্ষিত দামে বিক্রি করতে পারব।
সংযোগ সড়ক কেন নির্মাণ করা হচ্ছে না- এমন প্রশ্নের উত্তরে চৌহালী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, এরই মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২ মিটার বক্স-কালভার্টসহ দুপাশের অ্যাপ্রোচ নির্মাণের প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটির অনুমোদন হলে কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি। [kalbela]