মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০১:৩৯ অপরাহ্ন




ঝুঁকিতে ১০ জীবন বীমা কোম্পানি: আইডিআরএ চেয়ারম্যান

আউটলুক বাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময়: সোমবার, ৮ মে, ২০২৩ ৭:৫৯ pm
বীমা বিমা Insurance Development and Regulatory Authority of Bangladesh IDRA বাংলাদেশ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আইডিআরএ idra
file pic

বীমা গ্রাহকের টাকা নিয়ে মন্দ বিনিয়োগ করায় ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় ১০ জীবন বীমা কোম্পানি। আগামী দুই থেকে চার বছরের মধ্যে এসব কোম্পানির অস্তিত্ব সংকটে পড়বে বলে মনে করছেন ইনস্যুরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটি (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী।

শনিবার (৬ মে) রাজধানীর পল্টনে একটি হোটেলে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “তারা গ্রাহকের টাকা পেয়ে তা অপচয় করেছে কোম্পানিগুলো, ব্যবস্থাপনা ব্যয় মাত্রাতিরিক্ত ২০০ বা ৩০০ গুণ করেছে; লাইফ ফান্ডে টাকা রাখেনি।”

“তারা এসব টাকা বিনিয়োগ করেছে অলাভজনক ক্ষেত্রে, ইচ্ছাকৃতভাবে মন্দ বিনিয়োগ করেছে কিংবা বিনিয়োগের নামে টাকা তছরুফ করেছে। এখন যাদের বীমা দাবি পরিশোধের সময় এসেছে; তারা এখন সেটি পরিশোধ করতে পারছে না,” যোগ করেন তিনি।

জয়নুল বারী অবশ্য সংকটে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম উল্লেখ করেননি। দেশে বর্তমানে প্রায় ৩৫টি জীবন বীমা প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।

আইডিআরএ চেয়ারম্যান জানান, কোম্পানিগুলো এখন যে নতুন প্রিমিয়াম সংগ্রহ করছে, তা থেকে দাবি নিষ্পত্তি করছে এবং ভবিষ্যতের জন্য তারা আরও দায় বাড়াচ্ছে।

তিনি বলেন, “প্রতিদিন আমাদের কাছে কয়েক শত দরখস্ত আসে; যে তারা বীমা দাবি পাচ্ছে না। এসব গ্রাহক কোম্পানিগুলোর অফিস ও মাঠ পর্যায়ে কয়েকমাস হয়রানি হয়ে তারপর আমাদের কাছে এসেছে। ভয়ংকার বিষয় হলো, এসব লোক এখন থানায় কিংবা আদালতে গিয়ে মামলা করছে।”

আইডিআরএ বিষয়টি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানিগুলোকে ইতোমধ্যে ডাকা হয়েছে। তিনি বলেন, “তাদেরকে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য বলেছি, ডেডলাইন দিয়েছি, দাবি পরিশোধের জন্য প্রয়োজনে তাদের স্থায়ী সম্পদ বিক্রির জন্যও বলেছি, ব্যয় কমাতে বলেছি। এরপরেও কতটি কোম্পানি এ অবস্থা থেকে ওঠে আসবে তা বলা যাচ্ছে না।”

লাইসেন্স বাতিল করার মতো যে আইনগত ক্ষমতা রয়েছে তা এখন বিবেচনা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আরও বলেন, “এখন যেসব জীবন বীমা কোম্পানি গ্রাহকের টাকা দিতে পারছে না। তারা ইচ্ছা করে এটা করছে না, বরং তাদের গ্রাহকের দাবি নিষ্পত্তিতে সক্ষামতা নেই। এটা তারা হারিয়ে ফেলেছে।”

আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, ২০২১ সালে জিডিপিতে বীমা খাতের অবদান ছিল ০.৫ শতাংশ; যা এখন আরও কমে গেছে।

গত কয়েক বছরে এমনকি করোনা মহামারিতে বীমাখাতের প্রিমিয়াম সংগ্রহের পরিমাণ বেড়েছে, কিন্তু হার বাড়েনি। পাশাপাশি বীমা দাবি নিষ্পত্তির পরিমাণ বাড়লেও হার বাড়েনি।

তিনি বলেন, গত বছর জীবন বীমা দাবি নিষ্পত্তি করা হয় ৯,৫৫৯ কোটি টাকার। যা এর আগের বছরে ছিল ৭,২২৮ কোটি টাকা।

২০২২ সালে এটা আনুপাতিক হারে ছিল ৬৬ শতাংশ। প্রতি বছর কোম্পানিগুলো বীমা দাবি পরিশোধের ক্ষেত্রে পিছিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ৪০ ভাগ মানুষ বীমা করে ন্যায্য দাবি পাচ্ছে না। এটি বীমাখাতের ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত বলে উল্লেখ করেন তিনি।

দেশে প্রায় এক কোটি মানুষ বীমার সঙ্গে যুক্ত, এছাড়া কয়েক লাখ লোকের কর্মসংস্থান রয়েছে এই খাতে। আর এই সাফল্যে নতুন জনবান্ধব ও কল্যাণমুখী বীমা পলিসি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।

সরকারী পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২ সালের শেষে জীবন বীমা খাতের মোট প্রিমিয়ামের পরিমাণ ছিল ১১,৩৯৯.৫১ কোটি টাকা।




আরো






© All rights reserved © outlookbangla

Developer Design Host BD