রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৪৮ অপরাহ্ন




ডলার সংকটে ভোগ্যপণ্য আমদানি কমেছে ৩৯ শতাংশ

আউটলুকবাংলা রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১১:০৯ pm
LC এলসি container exports বন্দর আমদানি বাণিজ্য import trade trade Export Promotion Bureau EPB Export Market বাণিজ্য রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ইপিবি export
file pic

কড়াকড়ি ও ডলার সংকটের কারণে বিভিন্ন পণ্যের আমদানিতে ঋণপত্র (এলসি) খোলা কমছেই। চলতি বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে ভোগ্যপণ্যের এলসি খোলা কমেছে ৩৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। একই সময়ে শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, মধ্যবর্তী পণ্য এবং জ্বালানি তেল সবকিছুরই এলসি খোলা ও নিষ্পত্তি আগের চেয়ে কমছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্টে) বিভিন্ন পণ্যের এলসি খোলা হয়েছে ১ হাজার ৫২ কোটি ডলারের। এটি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৮ দশমিক ১৪ শতাংশ বা ১৭৩ কোটি ডলার কম। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বিভিন্ন পণ্যের এলসি খোলার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২২৫ কোটি ডলার। একই সময়ে আগের এলসি নিষ্পত্তি কমেছে প্রায় ২২ দশমিক ২৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ে সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ২৫ শতাংশ এলসি খোলা কমেছে ভোগ্যপণ্য আমদানির। এই পণ্যটির এলসি খোলা হয়েছে মাত্র ৯২ কোটি ডলারের, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৫২ কোটি ডলারের বেশি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ এলসি খোলা কমেছে শিল্পের কাঁচামালের। এ সময়ে পণ্যটির এলসি খোলা হয়েছে ৩২৭ কোটি ডলারের, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪৫১ কোটি ডলার।

এছাড়া ২২ দশমিক ৩৩ শতাংশ এলসি খোলা কমেছে জ্বালানি তেলের। এ সময়ে পণ্যটির এলসি খোলা হয়েছে ১৬৫ কোটি ডলারের, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৯৬ কোটি ডলার। শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতির এলসি খোলা হয়েছে প্রায় ৩৮ কোটি ডলারের, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২১ দশমিক ৭৯ শতাংশ কম।

চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সৃষ্ট অনিশ্চয়তায় আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলসহ সব ধরনের পণ্যের মূল্য ও জাহাজ ভাড়া বেড়ে যায়। এর সঙ্গে যোগ হয় ডলারের উচ্চমূল্য। এসব কারণে ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি খরচ অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। একই কারণে রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়ে। অন্যদিকে করোনা-পরবর্তী সবকিছু খুলে যাওয়ায় হুন্ডি তৎপরতা ব্যাপকভাবে বেড়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ নিম্নমুখী হয়ে পড়ে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার আয় ও ব্যয়ে পার্থক্য বেড়ে দেশে ডলারের সংকট তৈরি হয়। গত বছরের এপ্রিল থেকে এ সংকট তীব্র হয়। এতে কমতে থাকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।

এ অবস্থায় ডলার সাশ্রয়ের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখতে গত বছরের এপ্রিলে অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া অন্য সব ধরনের পণ্য আমদানিতে শতভাগ এলসি মার্জিন আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পাশাপাশি বৈদেশিক বাণিজ্যে ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিং হচ্ছে কিনা, সেটিও নিয়মিত যাচাই শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পর থেকে আমদানি ঋণপত্র খোলার পরিমাণ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। এতদিন আগের খোলা বকেয়া এলসি নিষ্পত্তির চাপ বেশি থাকলেও এখন সেটিও আগের চেয়ে কমে এসেছে।

তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২২-২৩ অর্থবছজুড়েই এলসি খোলা ও নিষ্পত্তির হার ছিল নিম্নমুখী। গত অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্যের এলসি খোলা হয়েছিল ৬ হাজার ৯৩৬ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ২৬ দশমিক ৪১ শতাংশ কম। কড়াকড়ির আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্যের এলসি খোলার পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৪২৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি ছিল।

শুধু এলসি খোলাই নয়, গত অর্থবছরজুড়ে বিভিন্ন পণ্যের এলসি নিষ্পত্তিও কম হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্যের এলসি নিষ্পত্তির পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ২১৯ কোটি ডলার। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ১৩ শতাংশ কম। অথচ ২০২১-২২ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্যের আমদানি ব্যয় বেড়েছিল প্রায় ৩৬ শতাংশ। ওই অর্থবছরে আমদানির পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ২৪৯ কোটি ডলার।




আরো






© All rights reserved © 2022-2023 outlookbangla

Developer Design Host BD