রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর জন্য নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করেছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এর ফলে পাঁচ বছর পর পোশাকশ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হতে যাচ্ছে। যদিও সোমবার রাত নয়টা পর্যন্ত এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি।
নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠনের বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত সচিব মো. তৌফিকুল আরিফ। তিনি বলেন, পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের মজুরি পুনর্নির্ধারণে নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া শেষ করেছে মন্ত্রণালয়।
সাধারণ নিম্নতম মজুরি বোর্ড ছয় সদস্যের হয়ে থাকে। তার মধ্যে চার সদস্যের একটি স্থায়ী কমিটি রয়েছে। তার সঙ্গে যুক্ত হন মালিক ও শ্রমিকপক্ষের দুজন প্রতিনিধি।
একাধিক সূত্র জানায়, মজুরি বোর্ডে মালিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। ২০১৮ সালের সর্বশেষ মজুরি বোর্ডেও মালিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। অন্যদিকে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম। তিনি ২০১৩ সালের মজুরি বোর্ডে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
নিম্নতম মজুরি বোর্ডের ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, চার সদস্যবিশিষ্ট স্থায়ী নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান হচ্ছেন সিনিয়র জেলা জজ লিয়াকত আলী মোল্লা। অন্য সদস্যরা হলেন মালিকপক্ষের প্রতিনিধি বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের উপমহাসচিব মকসুদ বেলাল সিদ্দিকী, শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি জাতীয় শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহম্মদ। নিরপেক্ষ প্রতিনিধি হিসেবে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন।
জানতে চাইলে বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, মজুরি বোর্ডে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান মালিকপক্ষের প্রতিনিধি হচ্ছেন।
এদিকে মজুরি বোর্ডে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে আমাকে কিছু জানানো হয়নি।
তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের জন্য ১৯৯৪ সালে প্রথমবার নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করে সরকার। সেই বোর্ড ৯৩০ টাকা নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করে। ২০০৬ সালে সেটি বৃদ্ধি করে ১ হাজার ৬৬২ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়। ২০১০ সালের মজুরি বোর্ডে শ্রমিকের নিম্নতম মজুরি ৩ হাজার টাকা করা হয়। ২০১৩ সালের মজুরি বোর্ড ৫ হাজার ৩০০ টাকা নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের মজুরি বোর্ড পোশাকশ্রমিকদের জন্য ৮ হাজার টাকা নিম্নতম মজুরি চূড়ান্ত করে। তার মধ্যে মূল মজুরি ৪ হাজার ১০০ টাকা।